“এই শোন!”
“হুম।”
“শুন না!”
“কী হলো?!”
“আজ তো ঈদ এর দিন, চলো না নীল এর সাথে দেখা করে আসি। প্লিজ।”
“…”
“কত্ত বছর হয়ে গেলো। মেয়েটা আমাদের মিস করে না বুঝি!”
“…”
“আমি তো মা। আমার দিকটাও তো ভাববে একটু।” বলতে না বলতেই চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো মায়ের।
বাবা গটগট করে হেটে চলে যাচ্ছিলো বটে, কিন্তু দরজার কাছে গিয়ে ফিরে তাকালেন। মায়ের বয়সটা যেন হঠাৎ করেই হাজার বছর বেড়ে গেছে।
ফুলের তোড়াটা মাটির উপরে পরম যত্নে রেখে যেন ঠিক বুঝতে পারছিলেন না বাবা এখন তার কী করা উচিত।
মা পাশে হাঁটু গেড়ে বসে অঝোরে কেঁদে চলেছেন।
কিন্তু ওনার কান্না পাচ্ছে না, বরং মনে পড়ছে সেইদিন তিনি কীভাবে অভিশাপ দিয়েছিলেন নীলকে।
“মা রে, আমার কথা শুনে সেই যে গেলি আর ফিরে এলি না। আমি বুঝতে পারি নি রে মা যে আল্লাহ্ বাবা-মায়ের দোয়া যেমন কবুল করেন, অভিশাপও যে কবুল করেন। অনেক তো হলো এবার ফিরে আয় মা। তোর উপর আমার আর কোনো রাগ নেই রে মা। ফিরে আয়।”
“কাকে ফিরে আসতে বলছো তুমি? অভিমানী মেয়ে আমাদের, ডাকলেই কি আসবে?”
বাবা হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়লেন, “তুই যাওয়ার পর থেকে আমাদের কোনো ঈদ নেই রে মা। এখন তো আর কেউ আদর করে পায়েশ রাঁধে না আমার জন্য। তোর মার জন্য পছন্দ করে শাড়িও আর কেউ কিনে না।”
“ওহ্ ভুলেই তো গিয়েছিলাম। এইযে তোর প্রিয় চকলেট। রেখে গেলাম এইখানে তোর জন্য।”
অনেকক্ষণ বসে ছিলেন উনারা। সন্ধ্যা নামার ঠিক একটু আগে একটা বাচ্চা মেয়ে তার বাবা-মায়ের সাথে এসেছিলো ওর দাদুর কবর জিয়ারত করতে।
মেয়েটাকে দেখে মায়ের কী মনে হলো, চকলেটটা ওর হাতে ধরিয়ে দিলেন। মেয়েটা মিষ্টি করে হাসছে। ঠিক মনে হচ্ছে যেন এত বছর পর তাদের নীল ফিরে এসেছে।
- নাসরিন তালুকদার উপমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%89%e0%a6%aa%e0%a6%ae%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০১৯