জুন ১৮, ২০২৫

ট্রেনের কামরা

মিশমিশে কালো চাদরে মোড়া,
অঢেল আঁধার দিগন্ত জোড়া।
ট্রেনের কামরায় আমরা ক’জন
মুখ কতকগুলো অচেনা;
নেই কারোর পরিচয় জানা।

“ঐ যে,ট্রেনের বাঁশির আওয়াজ
যায় যে শোনা!”
মেলে বসে গল্পের ডালা,
বাদামের খোসা ছাড়ানো থেকে হাসিঠাট্টা।
কিছুক্ষণ আগেও যার সাথে হলো ঝগড়া,
সে ও হয়ে উঠেছে তাগড়া।
নব পরিচয়ের সজীবতা
যাতে রয়েছে পুরোনো জীর্ণতা,
তাই হয়ে উঠল বড় আপন,
কিছুক্ষণ আগেও ছিল
যে অচেনা একজন।
উচ্ছ্বলতায় ভরে উঠল
ট্রেনের ঝিকঝিক গুঞ্জন।

কেউ ঘুমোচ্ছে,
ঢুলুঢুলু চোখে কেউ টিপছে মোবাইল,
কেউ বা গুনছে মাইলের পর মাইল,
কেউ আবার করছে স্মৃতিচারণ;
সৃষ্টি করছে নতুন অতীত
যা পরমুহূর্তের বর্তমান।

ট্রেনের কামরায় স্মৃতিকথায়
যুক্ত হয় নতুন টান,
ঠ্যাঙ ভাঙ্গা, হাত ভাঙ্গা, অন্ধ ভিক্ষুকদের কেউ কেউ করে দান।
চাঁদা তুলতে আসে দল হিজড়ার,
হঠাৎই “চানাচুর.. চানাচুর..!”
চানাচুরওয়ালার উচ্চৈঃস্বর প্রচার।

এত হৈ হট্টগোলও থমকে যায়
যখন আঁধার কুটকুটে রাতে,
সোনালি রুপোলি চাঁদ, জ্যোৎস্না বিলায়,
বিন্দু বিন্দু আলোক প্রখর তারা-রা
যখন সঙ্গ দেয় তায়।

কোনো এক বাঁকে আবার চাঁদ হয় অদৃশ্য,
ফিরে আসে তিমির উপহাস্য,
ট্রেনের কামরার সেই কোলাহলপূর্ণ দৃশ্য।
ছন্নছাড়া ধোঁয়ায়
কিছুক্ষণ পরেই আসবে ছেদ,
দুরন্ত জীবন ধারায় করব
আবারও খেদ,
জীবন হয়ে উঠবে অতি সাধারণ,
সমস্যায় জর্জরিত।
তখন হঠাৎ একদিন
হয়তো মনে পড়বে
এ ছিন্নমূল ক্লেদ।

এই তো কিছু মুহূর্ত,
এরপর আবার
অচেনা,অজানা,অদেখা,
ঠুনকো স্মৃতির উন্মাদনা
চলে যাবে সময়ের
অতল গহ্বরের তাড়নায়।

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ