fbpx

সম্পাদকীয় – মে ২০১৯

এটা গদ্য-কবিতার যুগ হলেও ছন্দের কবিতাকে পুরোপুরি বিসর্জন দেয়াটা ঠিক নয়। ছন্দ বলতে দুটি লাইনের শেষ দুটি শব্দের মিলকে বোঝায় না। ছন্দ হলো প্রত্যেক লাইনের প্রত্যেক অংশে অক্ষর বা সিলেব্‌ল্‌-এর সংখ্যার মিল, যাতে কবিতায় তাল ঠিক থাকে। তবে, কবিকে অক্ষর বা সিলেব্‌ল্‌ গুনে গুনে কবিতা লিখতে হয় না, তালজ্ঞান থাকলে এটা এমনিতেই মিলে যায়।

তালের ধারণা না থাকলে কী করবেন? নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘কবিতার ক্লাস’ বইটি পড়তে পারেন এবং প্রথম দিকে অক্ষর বা সিলেব্‌ল্‌ গুনে গুনে কবিতা লিখতে পারেন। এক সময় আপনার তালজ্ঞান চলে আসবে।

ছন্দের কবিতার একটি উদাহরণ হিসেবে নীচের কবিতাটি পড়ে দেখতে পারেন। কবি মধুসূদন দত্তের সংজ্ঞা অনুসারে এটিকে সনেট বলা যেতে পারে।

প্যাডেল মেরেছি শুধু, ঘোরেনি তো চাকা;
পাইনি তো খুঁজে পথ অচিন শহরে;
ইট-রড-কংক্রিটে শুধু বেঁচে থাকা –
রাহুগ্রাসে পড়ে মন হা-হুতাশ করে।

সমব্যথী সমতটী, এসো দ্বিধা ফেলে
পথ খুঁজে পথ চলি সতেজ সরব;
ত্রিকালের বেড়া ভেঙে নবদীপ জ্বেলে
কালজয়ী পাতা খুলে সাজাই হরফ।

চিনহীন পদাঘাতে যেটুকু কাঁপন,
রয়ে যাক তার রেশ হারে কিবা জিতে;
জীবনের নামে কেন মরণ যাপন?
বীজ বুনি স্বপনের, পাথুরে জমিতে;
হোক না নিয়তি পর, তবুও আপন –
কণা-সম ঠাঁই দিলে শেষের সারিতে।

প্রিয় পাঠক, এটা কি প্যাপাইরাস পরিবারেরই কথা নয়?

কবিতাটিকে মেইন ডিশ ধরলে এর প্রত্যেক লাইনের শুরুতে আপনার জন্য এক অক্ষরের সাইড ডিশ সার্ভ করা হয়েছে – ‘সাইড’ ডিশ।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ১৯৮৩ - ৮৪

জাফর আহমেদ খান

প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশনঃ ১৯৮৩ - ৮৪