fbpx

কসমস

আমাদের দেশে শীতের দিনগুলোকে ঝলমলে রঙে রাঙিয়ে দেয় নানা রঙের শীতের ফুল। কসমস তাদের একজন। উত্তর আমেরিকার ওয়াশিংটন থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার প্যারাগুয়ে পর্যন্ত এর আদি নিবাস । কানাডার পূর্বাঞ্চলেও কিছু প্রজাতির দেখা মেলে। তবে  দক্ষিণ আমেরিকার মেক্সিকো তে কসমস এর সবচেয়ে বেশি প্রজাতি দেখা যায়।   এংলো বোয়ার যুদ্ধের সময় আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা দূষিত ঘোড়ার খাদ্যের সাথে এটি আফ্রিকাতে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশে এই ফুল কবে কোথা থেকে এলো, সে বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশের শীতের বাগান, সে পার্ক হোক বা ছাদ বাগান,  কসমস এর রঙিন  উপস্থিতি ছাড়া একদমই অসম্পূর্ণ মনে হয়।

কসমসের  বৈজ্ঞানিক নাম Cosmos bipinnatus এবং এটি  এস্টারেসি পরিবারের কসমস গণের অন্তর্ভুক্ত একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। সাধারণত এটিকে কসমস বা মেক্সিকান এষ্টার বলে ডাকা হয় , আলাদা করে কোনো বাংলা নাম নেই। এটি একটি মাঝারি আকৃতির herbaceous উদ্ভিদ। কসমস সাধারণত এক বর্ষজীবি। 

কসমস গাছ  সাধারণত ১ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা বিশিষ্ট হয়। কসমস ফুল গোলাপী, সাদা, বেগুনী, খয়েরি ইত্যাদি নানা রঙের হয়ে থাকে। গাছ দেখতে খুব সুন্দর। এদের পাতার কিনারাগুলি খাজকাটা থাকে। পাতা গুলি ঘন সবুজ রঙের, সাধারণত দ্বি পক্ষল এবং পরস্পরের বিপরীত দিকে বিন্যস্ত।  লম্বা ডাটা, কান্ড অশক্ত, একসাথে এক বা একাধিক ফুল হয়। ফুলের পাপড়ির সংখ্যা ৭/৮ টি। ইদানিং কিছু হাইব্রিড প্রজাতিতে অনেক বেশি পাপড়ি থাকে আর পাপড়ি গুলি কয়েক স্তরে  বিন্যস্ত থাকে। ফুল শেষ হলে বীজ হয়। বীজ অনেকটা জিরার মতো দেখতে এবং এর দৈৰ্ঘ্য বড়জোর  এক থেকে দেড় সেন্টিমিটার। শুকনো বীজ কালচে রঙের এবং  কাঠির মতো শক্ত। 

মূলত বীজ থেকে এর বংশ বিস্তার ঘটে। বীজের অঙ্কুরোদগমে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে এবং প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা ২৪°সে. । গাছ হবার ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এটি ফুল দেওয়া শুরু করে । এর উপযুক্ত মাটির pH ৬.০ থেকে ৮.৫ হলে ভাল হয়। পূর্ণ সূর্যালোকে এবং অল্প ছায়াযুক্ত জায়গাতেও জন্মে ।   কসমসের একটি প্রজাতি হলো বর্ষাতি কসমস যার  বৈজ্ঞানিক নাম Cosmos sulphureus। এর রং কমলা । এটি মোটামুটি সারা বছর ই কম বেশি ফোটে।

কসমসের রং বেরঙের ঝলমলে ফুলের সৌন্দর্যে শুধু মানুষ নয়, প্রজাপতি ও কীটপতঙ্গ সহজেই আকৃষ্ট হয়।  তাই শীতের বাগানে এটি অত্যন্ত  জনপ্রিয়  একটি গাছ।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশন: ১৯৯২ - ১৯৯৩

জাহিদা গুলশান

প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশন: ১৯৯২ - ১৯৯৩