মে ১৯, ২০২৫

সম্পাদকীয় ডিসেম্বর ২০১৯

আমরা Statistics বা probability শিখলেও এর প্রয়োগের মাধ্যমে কখনও লাভবান হতে পারিনি। তবে, অনেকেই পেরেছেন। তাঁদের একজন হলেন ফ্রেঞ্চ দার্শনিক ভলতেয়ার (১৬৯৪-১৭৭৭)। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে লটারি কিনে অনেক ধনী হয়েছিলেন – যার ফলে বাকি জীবন লেখালেখি করে কাটাতে পেরেছেন, দাঁড় করিয়ে যেতে পেরেছেন আধুনিক যুগের ধ্যান-ধারণা।

তৎকালীন ফ্রেঞ্চ সরকারের বোকামি ভলতেয়ারকে কিছুটা সহায়তা করেছিলো। বন্ডের বিক্রি বাড়াতে ১৭২৯ সালে ফ্রেঞ্চ সরকার এক লটারি চালু করে। শুধুমাত্র বন্ড ক্রেতারা লটারির টিকেট কিনতে পারতো এবং টিকেটের মূল্য ছিলো বন্ডের ক্রয়মূল্যের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ।

ভলতেয়ার আর তাঁর বন্ধুরা দেখলেন, ১০০০ লিবরা (Livre – ঐ সময়ের মুদ্রা) মূল্যের বন্ড কিনলে টিকেটের মূল্য দাঁড়ায় ১ লিবরা, আর ১ লাখ লিবরা মূল্যের বন্ড কিনলে টিকেটের মূল্য দাঁড়ায় ১০০ লিবরা। অর্থাৎ, একই টিকেটের দাম কখনও কম, কখনও বেশি (১০০ গুন বা আরও বেশি)। কিন্তু, সব টিকেটের পুরষ্কার পাওয়ার সম্ভাবনা সমান। অনেকগুলি ১০০০ লিবরার বন্ড কিনলে পুরষ্কার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া, যেহেতু বেশ কিছু উচ্চমূল্যের বন্ড অন্য লোকদের কাছে বিক্রি হচ্ছিলো, পুরষ্কারের মূল্যমান ও সংখ্যা ছিলো অনেক বেশি।

সরকারের বিরুদ্ধে লিখে ভলতেয়ার এক বছরেরও বেশি জেল খেটেছিলেন। তাঁর বন্ধুদেরও অনেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন। তাঁরা সরকারকে একহাত নেয়ার সুযোগ পেয়ে গেলেন। বারো-তেরোজন বন্ধু মিলে প্রচুর সংখ্যক অল্প মূল্যের টিকেট কিনে পুরষ্কারের টাকা ভাগ করে নিতে শুরু করলেন। বেশ কিছুদিন লটারি-ব্যবসা চালিয়ে ভলতেয়ার প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হলেন। এরপর মনোযোগ দিলেন লেখালেখিতে।

আমাদের দৌড় ক্লাসরুম পর্যন্ত।

IMG 6678

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ১৯৮৩ - ৮৪

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ