জুন ১৮, ২০২৫

বুক রিভিউ – ব্যোমকেশ

লেখকঃ শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়

সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সী, বন্ধু অজিত ও বউ সত্যবতী – এই তিনটি অসাধারণ  চরিত্র নিয়ে গড়ে উঠা গোয়েন্দা কাহিনী “ব্যোমকেশ”। রচনাটিতে গুণী লেখক  শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠকের সাথে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার এক গোয়েন্দার পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। লেখকের অসামান্য লেখনী সুন্দর সুন্দর রহস্য গুলোকে যেমনি জট পাকিয়ে গভীর করেছে,  ঠিক তেমনি অভিনব কায়দায় সেগুলোর সমাধান দিয়ে কাহিনীগুলোকে আরও মুখরোচক করে তুলেছে। সমগ্রের সর্বশেষ গল্পটির ইতি টানতে পারেননি লেখক। কথক অজিতের ভাষায় গল্পের খুঁটিনাটি দিক ফুটে উঠলেও ‘রুম নম্বর দুই’ থেকে অজিত আর বক্তা নয়। এতে সাময়িকভাবে পাঠকের মনে দাগ কাটতে পারে। আগের গল্পগুলোতে অজিতের লেখনীতে আন্তরিকভাবে ব্যোমকেশ ও অজিতের খুনসুটিগুলো ভেসে উঠত। সত্যবতীর সাথে ব্যোমকেশের প্রেমকাহিনী গল্পে ভিন্ন স্বাদের সংযোজন করেছে। ‘অর্থমনর্থম’ গল্পের মাধ্যমে তাদের পরিচয় ও প্রেম ঘটে পারিবারিক এক রহস্য সমাধানের নিমিত্তে। 

‘শজারুর কাঁটা’তে দেবাশীষ ও দীপার মিলনটা রোমাঞ্চকর ছিলো। তাছাড়া পথের কাঁটা, চোরাবালি, দুর্গরহস্য, চিড়িয়াখানা, শৈলরহস্য ব্যোমকেশ-কাহিনীর উল্লেখযোগ্য রচনা।

লেখকের মৃত্যুর পর লেখকের বন্ধু প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত আলোচ্য তিন চরিত্রের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। সেখানে ব্যোমকেশ পুত্র ‘খোকা’র অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ভৃত্য পুঁটিরামও ওদের দৈনন্দিন জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ব্যোমকেশ সমগ্রে মোট ৩৩ টি গল্প ও ৩ টি স্বতন্ত্র রচনা রয়েছে। প্রত্যেকটি গল্পই পাঠককে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে গোয়েন্দা রহস্যের অদ্ভুত ইন্দ্রজালে। আনন্দ প্রকাশনীর অন্যতম একটি সংস্করণ ‘ব্যোমকেশ সমগ্র’। গোয়েন্দাপ্রমী পাঠকদের কাছে ১০০৮ পৃষ্ঠার এই বই মন্দ লাগবে না বলে ধারণা করা যায়।

সাকিয়াতুল জান্নাত রুহী, ব্যাচঃ১৮-১৯, পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৮-১৯

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ