ভেরোনিকা ডিসাইড্স্ টু ডাই
তেইশ
এডোয়ার্ড যখন চোখ খুললো মেয়েটি তখনো সেখানে বসা। প্রথম বৈদ্যুতিক শক্-এর পর তার অনেকক্ষণ লেগেছিলো সেটা মনে করতে। কিন্তু পরে যখন চিকিৎসা পদ্ধতির প্রভাব সঠিক ভাবে পড়তে লাগলো তখন কৃত্রিমভাবে সাময়িক স্মৃতিভ্রংশ হতে লাগলো। এতে মানসিক ভাবে তৈরিকৃত সমস্যা রোগী ভুলে গিয়ে তার প্রশান্তি ফিরে পায়।
যত ঘন ঘন এই বৈদ্যুতিক শক্ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তত দ্রুত তার স্মৃতি ফিরে এসেছে। সে মেয়েটিকে সাথে সাথেই চিনতে পারলো।
“তুমি যখন ঘুমাচ্ছিলে তখন তুমি ‘অপার্থিব স্বপ্ন’ নিয়ে কিছু বলছিলে,” সে তার মাথায় বিলি কাটতে কাটতে বললো।
‘অপার্থিব স্বপ্ন’? হ্যাঁ, ‘অপার্থিব স্বপ্ন’। এডোয়ার্ড তার দিকে তাকালো। সে ভেরোনিকাকে সব বলতে চায়।
কিন্তু সে সময়ই নার্স একটা সিরিঞ্জ নিয়ে আসলো।
“তোমার এখন এ ইনজেকশনটা নিতে হবে,” নার্সটি ভেরোনিকাকে বললো। “ডা. ইগোর-এর নির্দেশ।”
“আমাকে তো আজকে ইনজেকশন দেয়া হয়েছে, আমি আর নিতে চাই না,” সে বললো। “আবার কী, আমি এখান থেকে আর যেতেও চাই না। আমি কোন নির্দেশই মানবো না, কোন নিয়মও না এবং আমাকে দিয়ে জোর করে কিছু করাতে পারবে না।”
নার্সকে দেখে মনে হলো এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার সাথে সে পরিচিত।
“তাহলে তো তোমাকে আমার চেতনানাশক দিতে হবে।”
“আমার তোমার সাথে কথা আছে,” এডোয়ার্ড বললো। “ইনজেকশনটা দিতে দাও।”
ভেরোনিকা তার স্যুয়েটারের হাতা গুটিয়ে নিলো। নার্সটি তার শরীরে ওষুধটা দিয়ে দিলো।
“এই তো ভালো মেয়ে,” সে বললো। “তোমরা এখনো কেন এই গুমোট ওয়ার্ডে বসে আছো, যাও দু’ জনে বাইরে থেকে হেঁটে আসো?”
“তুমি হয়তো কাল রাতের ঘটনার জন্য লজ্জিত,” এডোয়ার্ড বাগানে হাঁটতে হাঁটতে বললো।
“আমি লজ্জিত, কিন্তু আমি গর্বিতও। আমি তোমার ‘অপার্থিব স্বপ্ন’ সম্পর্কে জানতে চাই, কারণ আমি নিজে এরকম একটা স্বপ্নদৃশ্যের খুব কাছাকাছি ছিলাম।”
“আমাকে আরো দূরে তাকাতে হবে, এই ভিলেট বিল্ডিংগুলোর পেছনে,” সে বললো।
“চলো তাহলে।”
এডোয়ার্ড পেছনে তাকালো, ওয়ার্ডের দেয়াল বা যেখানে নিরবে নিবসীরা হাঁটছে সে বাগানে নয়। অন্য মহাদেশের এক রাস্তায়, অন্য এক জায়গায় যেখানে হয়তো ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, নয়তো কিছুই হচ্ছে না।