fbpx

ভেরোনিকা ডিসাইড্‌স্‌‌ টু ডাই

ছাব্বিশ

রাতে খাবার ঘরে এসে সবাই দেখলো তাদের মধ্যে থেকে চারজন লোক নেই।

জেডকা, যার ব্যাপারে সবাই জানে যে দীর্ঘ চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে; মারি, খুব সম্ভবতঃ সে কোন সিনেমা দেখতে গেছে যেটা সে প্রায়ই যায়; এবং এডোয়ার্ড, যে খুব সম্ভবতঃ তার বৈদ্যুতিক শক্ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাদের যখন এডোয়ার্ড-এর কথা মনে পড়লো তারা সবাই ভয় পেয়ে গেলো, আর চুপচাপ খাওয়া শুরু করলো।

সেই সবুজ চোখ ও বাদামী চুলের তরুণীটিও ছিলো না। তারা জানতো ওকে আর এ সপ্তাহের পর দেখা যাবে না।

মৃত্যুর কথা ভিলেট-এ কেউ খোলাখুলি আলোচনা করে না, কিন্তু অনুপস্থিতিটা খেয়াল করে; যদিও প্রত্যেকেই সব সময় এমন আচরণ করার চেষ্টা করে যেন কিছুই হয়নি।

একটা গুঞ্জন টেবিল থেকে টেবিলে ছড়িয়ে পড়ছিলো। কেননা তরুণীটি এতো জীবন্ত ছিলো যে এটা মানা কষ্টকর এখন সে হাসাপাতালের পেছনে ছোট শবাগারে পড়ে আছে। সবচেয়ে সাহসী লোকও সেখানে দিনের আলোতে যায় না। সেখানে তিনটা মার্বেলের টেবিল রয়েছে; তার একটাতে এখন হয়তো কাপড়ে আবৃত একটি নতুন মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।

প্রত্যেকের মনে হলো আজ রাতে ভেরোনিকা ওখানেই থাকবে। যারা সত্যিই বিকারগ্রস্ত তারা খুব তাড়াতাড়িই তার উপস্থিতি ভুলে যাবে, এ সপ্তাহের মধ্যেই। অন্যদের মধ্যে কিছু রয়েছে যাদের স্বপ্নে মাঝে মধ্যে পিয়ানো বাজানোর সুর বেজে উঠবে। কিছু লোকজন রয়েছে যারা খবরটা শুনে কষ্ট পাবে, বিশেষ করে যে নার্সরা ভেরোনিকার সাথে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে থাকতো। কিস্তু স্টাফরা রোগীদের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি না করার বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেননা রোগীদের কেউ কেউ ফিরে যাবে, কেউ মারা যাবে এবং অধিকাংশই ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যেতে থাকবে। তাদের কষ্টটাও অল্প সময়ই স্থায়ী হয় এবং তার পর শেষ হয়ে যায়।

যাই হোক, নিবাসীদের অধিকাংশই খবরটা শুনলো, তারা বিস্মিত ও দুঃখিত হওয়ার ভান করলো। তবে আসলে মনে মনে প্রশান্তি বোধ করলো এই ভেবে যে জীবননাশক দেবদূত আরো একবার ভিলেট হয়ে গেছে কিন্তু তারা এ যাত্রা রক্ষা পেয়েছে।

রোকনুজ্জামান

সদস‍্য, সম্পাদনা পর্ষদ, প‍্যাপাইরাস প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশন:১৯৯৯-২০০০