fbpx

ভেরোনিকা ডিসাইড্‌স্‌‌ টু ডাই

আট

ভেরোনিকা জেডকাকে দেখছিলো, বিছানার সাথে বেঁধে ফেলার পরও সে হাসছে।

“কী ঘটতে যাচ্ছে ওকে বলুন,” জেডকা পুরুষ নার্সটিকে বললো। “নয়তো ও ভয় পাবে।”

সে ভেরোনিকার দিকে ঘুরে তাকে একটা সিরিঞ্জ দেখালো। একজন ডাক্তার যেমন জুনিয়রকে সঠিক পদ্ধতি ও চিকিৎসা সম্পর্কে বলে তেমনি নার্সটি আনন্দের সাথে ভেরোনিকাকে বলতে লাগলো।

“এই সিরিঞ্জটিতে ইনসুলিনের একটা ডোজ রয়েছে,” নার্সটি গম্ভীর, মেশিনের মতো কণ্ঠস্বরে বলতে লাগলো। “এটা ডায়াবেটিক রোগীর রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ডোজ যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে দেয়া হয় তখন রক্তের গ্লুকোজে এর অতিরিক্ত পরিমাণ রোগীকে একটা কোমা অবস্থায় নিয়ে যায়।”

সে বাতাস বের করতে সুঁইটাকে হালকা টোকা দিলো এবং জেডকার পা’য়ের একটা শিরায় সুঁই ফুটিয়ে দিলো।

“কাজ শুরু হয়েছে। সে একটা কোমার মধ্যে প্রবেশ করছে। উনার চোখ বিবর্ণ হয়ে গেলে ভয় পাবেন না। আর ওষুধের প্রতিক্রিয়া চলার সময় ভাববেন না যে, উনি আপনাকে চিনতে পারবেন।”

“এটা তো ভয়ঙ্কর, অমানবিক,” ভেরোনিকা বলে উঠলো। “মানুষ কোমা থেকে বের হয়ে আসতে লড়াই করে, কেউ তো কোমাতে যেতে চায় না।”

“মানুষ বেঁচে থাকতে লড়াই করে, আত্মহত্যা করতে নয়,” নার্সটি ভেরোনিকাকে উদ্দেশ্য করে বললো। ভেরোনিকা মন্তব্যটিকে পাত্তা দিলো না। নার্সটি বলতে লাগলো, “কোমা অবস্থা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বিশ্রামে রাখে; এদের কার্যক্রমকে প্রচন্ডভাবে কমিয়ে ফেলে, এবং যে কোন ধরনের দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়।”

সে কথা বলতে বলতে জেডকার শরীরে তরল প্রবেশ করাচ্ছিলো আর জেডকার চোখ দু’টো বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছিলো।

“চিন্তা করো না,” ভেরোনিকা জেডকাকে বলছিলো। “তুমি সত্যিই স্বাভাবিক; তুমি রাজা সম্পর্কে যে গল্প আমাকে বলেছিলে …”

“আপনি অযথা সময় নষ্ট করছেন, উনি কিছু শুনতে পাচ্ছেন না।”

বিছানায় শুয়ে থাকা মহিলাটি যে কিনা কয়েক মিনিট আগেও কত প্রাঞ্জল ও পরিপূর্ণ ছিলো, এখন দূরে কোন একটা বিন্দুর দিকে তার দৃষ্টি স্থির হয়ে রয়েছে। তার মুখের এক পাশ দিয়ে তরল ফেনা বের হচ্ছে।

“আপনি ওর কী করেছেন?” ভেরোনিকা নার্সকে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো।

“আমি শুধু আমার কাজ করেছি।”

ভেরোনিকা জেডকাকে চিৎকার করে ডাকতে লাগলো। ভেরোনিকা উত্তেজিত হয়ে হুমকি দিতে লাগলো সে পুলিশের কাছে যাবে, পত্রিকাগুলোতে বলে দিবে, মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে জানাবে।

“শান্ত হোন। আপনি হয়তো মানসিক হাসপাতালে আছেন, কিন্তু এখানেও আপনাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে।”

নার্স লোকটির সিরিয়াস ভাব দেখে সে ভয় পেয়ে গেলো। কিন্তু যেহেতু তার হারানোর কিছু নেই তাই সে চিৎকার করেই যেতে লাগলো।

রোকনুজ্জামান

সদস‍্য, সম্পাদনা পর্ষদ, প‍্যাপাইরাস প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেশন:১৯৯৯-২০০০