জুন ২০, ২০২৫

কৃষ্ণরঙিন কাক

কাকও আশ্রয় খোঁজে গাছের কাণ্ডের ত্রিভুজে
আর তোরা গাছকে বলিস আবর্জনা!
তাই পূণ্য ভূমির মতো সফেদ জমিন করিস
আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে।
একটা অনুরোধ তোদের,
তোরা মানুষ না হয়ে
ল্যাম্পপোস্টে বসে থাকা কৃষ্ণরঙিন কাক হ। তোদের ভয় নেই।

অবেলায় বেসুরো গলায় ধরবি কীর্তন।
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে একসা হয়ে জিরোবি ভাঙা কার্নিশে।
তখন তোর ভেজা পালক ঝাপটে ঝেড়ে ফেলে দিবি
কুড়িয়ে পাওয়া সকল তাচ্ছিল্য।

হালকা হতেই পূবাকাশে সাই সাই করে উড়ে
যোগ দিবি কাকমিছিলে।
পরের দফায় কোকিলকে হাতেনাতে ধরার
গোপন বৈঠকও বসতে পারে।
কিংবা হতেই পারিস কিছুটা অন্তর্মুখী।
অলিখিত দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বিপ্রতীপ দৃষ্টিতে
নাহয় চেয়ে থাকিস দুপুরের এক প্রহর।
তোর রাজ্যে তুই-ই তো হবি মুক্ত বিহঙ্গ।
ভয় নেই, তিনদিনের রিমান্ড ব্যবস্থা সেখানে নেই।
পক্ষীরাজ্যে কেউ তোদের শ্বাস ছিনতাই করতেও আসবে না।

তোর যে চোখে পূর্ণিরাতের জ্যোৎস্না নামে
সে স্বচ্ছ দু’চোখে খুঁজে ফিরবি সমস্ত জঞ্জাল।
দূরদিগন্ত থেকে নেমে আসবি যখন ভূখণ্ডে
অভিশাপমুক্ত হবে এ বর্বর শহরের শরীর।
তোদের চিন্তা নেই।

মানুষ না হয়ে কাক হলেই বরঞ্চ ভালো।
জানিস তো, মানুষ হলেই অজগরের আগে শিখতে হয় মানুষভয়।
মানুষ হলেই করতে হয় বিশ্বাসে ভয়।
কিন্তু কাক হলে তুই হবি নির্ভীক।
শুনেছি মানুষ ছাড়া আর কোনো জাতির
স্বজাতির কাছ থেকে কোনো ভয় নেই।

তুই বোধ হয় জানিস না,
এখানে এখন পোকামাকড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষ বিলীন হয়।
চুপচাপ একাই সটকে পড়ে অন্য ভুবনে।
কাক হলে একলা মৃত্যুর বিষম ভয় থেকে মিলবে তোর মুক্তি৷

অযুত নৈরাশা এক করে তাই পুনর্জোর মিনতি করি,
বড় হয়ে তোরা মানুষের মতো মানুষ নয়।
কাকের মতো কাক হ।
কৃষ্ণরঙিন কাক।

Smrity Taiyeba Mukta
শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৬-২০১৭

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ