আতাহার স্যার
আতাহার স্যার এর নাম আমি প্রথম শুনি ১৯৯৪ এ। আমার বন্ধুরা সেই সময় স্যার কে তাদের আদর্শ ভেবে অনেক কথা বলতেন। স্যার এর কথায় অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি আমার বন্ধু দের সারা রাত জেগে গবেষণা করতে দেখেছি। তিনি তার ছাত্র ছাত্রী দের ভালো মানুষ হতে বলতেন, ভালো পরিসংখ্যান বিদ হতে বলতেন। কিভাবে পরিসংখানের জ্ঞান, গবেষণা, কাজে লাগিয়ে মানুষের উপকার করা যাবে সেই বিষয় নিয়েও সবাইকে অনুপ্রেরণা যোগাতেন।
আমার সাথে স্যার এর প্রথম দেখা হয় ২০১৫ সালে। তখন তিনি বিদেশে এর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে ঢাকায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভারসিটিতে ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগ খুললেন।
আমার খুব ভালো করে মনে আছে, আমি একদিন সকাল ১০ টার সময়ে স্যারের সামনে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে বললাম, স্যার আমি আপনার কথা এতদিন ধরে এতবার শুনেছি, যে আমি আপনার সাথে আমি দেখা করতে এসেছি।
স্যার এর সাথে আমার সেই দিন কথা বার্তা হলো এক ঘন্টারও বেশি। এর পরেও আমি সময় পেলে স্যারের কাছে যেতাম শুধু স্যারের কথা শুনবার জন্য।
স্যারের কথা বলবার ধরণ, কথা বলতে বলতে অল্প হাসি, এলোমেলো চুল, কথা বলতে বলতে হারিয়ে যাওয়া, আশেপাশের সবাই কে চিন্তা করা, তাঁর পুরানো ছাত্রদের ছাত্রী দের সকলের কথা মনে রাখা, নুতন বিভাগ নিয়ে তাঁর ভাবনা, আমাকে অভিভূত করে ফেলে।
আমি এর পরেও স্যারের সাথে ভিশন কমিটিতে অনেক দিন কাজ করি। স্যারের কাছ থেকে আমি HEQEP প্রজেক্টে কীভাবে কাজ করতে হয়, তা শিখেছি।
স্যার কে কখনো দেখিনি কাউকে নিয়ে খারাপ কিছু বলতে। সব সময় উনি সব কিছু পজিটিভ ভাবে দেখতেন। সবাইকে মন থেকে সাহায্য করতেন এবং করতে চাইতেন।
আমি তাঁর মত করে এত বাপক ভাবে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে ভাবতে অনেক কম শিক্ষক কে দেখেছি। তিনি গবেষণার মান নিয়ে অনেক ভাবতেন। স্যার যখন বলতেন আমরা সবাই মন্ত্র মুগ্ধ হয়ে শুনতাম ।
স্যার নেই। কিন্তু তিনি তাঁর চিন্তা ভাবনা আমাদের জন্য, আমাদের ভবিষ্যতে প্রজন্মের জন্য দিয়ে গেছেন।
আমি মন থেকে চাইবো, এই মহৎপ্রাণ, উচ্চ শিক্ষার একজন দিকপাল কে তাঁর ছাত্র ছাত্রীরা আমাদের মাঝে যুগ যুগান্তর বাঁচিয়ে রাখবেন।