জুলাই ১০, ২০২৫

চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়

নিঃশব্দ আর্তচিৎকার, বুকের ভেতরে হাহাকার, সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ফুঁসে ওঠা চোখের জল, সারা শরীরে অবিশ্বাস, বিষণ্নতা, জড়ো হয় এক মূহুর্তে। তসলিম স্যার নেই! বিষাক্ত বিশ সালের পর তরুণ একুশের  শুরুটাও কি এত বিষণ্ন হতে হয়! কী অদ্ভুত! আমাদের কিছু দীর্ঘশ্বাসের শুরু থাকে, কিন্তু শেষ থাকে না বোধ হয়।

আমাদের সম্পর্কটা শুধু ছাত্র-শিক্ষকের।  কিন্তু কী সাধারণ সম্পর্ক আমাদের! যারা প্রিয় তসলিম স্যারের সাথে মিশেছেন, সাধারণ এই সম্পর্কটা যে একদম কাছের মানুষের সম্পর্কের মতই, এ কথার সাথে কেউই দ্বিমত পোষণ করবেন বলে মনে হয় না। তাঁর হাসিমুখ, তাঁর প্রতিটা মজার বাক্য, কোনো কাজ নিয়ে কখনও অতিরিক্ত চাপ না দেওয়া, তাঁর কাছ থেকে পাওয়া ছোট ছোট প্রশংসা, দেখা হলেই “কী অবস্থা সুহাস, কেমন আছেন?” বলা প্রতিটা জিনিস যে এখন শুধুমাত্রই স্মৃতি সেটা এই বিষণ্ন মন কোনমতেই মানতে চাইছে না।  তাঁর চলে যাওয়ায় যে দীর্ঘশ্বাসের জন্ম হয়েছে, তা কি শেষ হবে?

“চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয়

চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী

চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে

আমার না-থাকা জুড়ে।”

রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর রচিত এই চরণগুলি যেন মনের কথা বলে দিচ্ছে বারংবার। প্রিয় স্যার, আপনার চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়। আপনার এই সংক্ষিপ্ত জীবনে আপনি যত শুভাকাঙ্ক্ষী, ছাত্র, বন্ধু, সহকর্মী রেখে গেছেন- আমরা সবাই কেউ কখনও আপনাকে ভুলবো না।  আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের এই ছোট্ট হৃদয়ে, যেখানে বিষণ্নতা ছেয়ে আছে, সেখানে আপনি থাকবেন সেই বিষণ্নতার সৌন্দর্য হয়ে চির তরুণ। জানি না, আপনার মতো একজন শিক্ষকের যোগ্য ছাত্র হয়ে উঠতে পারবো কিনা, আপনাকে নিয়ে লিখার যোগ্যতা হয়েছে কিনা, তবুও এই ছোট্ট ছেলেটার প্রতিটা প্রার্থনায় আপনি থাকবেন।  

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন আপনাকে জান্নাতবাসী করুক। আমিন।

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp