মে ১৯, ২০২৫

স্মৃতিতে তসলিম সাজ্জাদ মল্লিক স্যার

২৭ জানুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠে আধবোজা চোখে দেখা একটা খবর এক নিমিষেই মনটাকে বিষণ্ন করে তুলেছিল। একজন মানুষকে খুব কাছ থেকে না দেখেও, তাঁর অনুপস্থিতিতে জন্মানো একরাশ বিষণ্নতাই হয়তো তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ। প্রথম বর্ষে পড়ার কারণে আমরা তসলিম স্যারের ক্লাস একদমই পাই নি, করোনার কারণে ডিপার্টমেন্ট এ মানুষটাকে বেশিদিন দেখার সৌভাগ্যও হয়ে উঠে নি। স্যারের সাথে স্মৃতি বলতে গেলে স্যারের নেওয়া আমাদের সেমিনারগুলো। সেই অল্প কয়দিনেই স্যারের কথা শুনে সবসময় অবাক হতাম। কত সুন্দর সাবলীল ভাষায় কথা বলতে পারত মানুষটা!

এই সেমিনার এর অংশ হিসেবেই স্যারের পাঠানো মেইল রয়ে গেছে তার স্মৃতি হিসেবে। “Congratulations”- শিরোনামে চার-পাঁচ লাইনের একটা মেইল, তাতে কী সুন্দর ভাবে লেখা তার অনুপ্রেরণাময় বার্তা। প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে শেখার আনন্দ থেকে ছোট্ট জয়ের অভিনন্দন, কোনকিছুই বাদ যায়নি তাঁর বার্তায়। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোন সমস্যায় QMH Club তথা তিনি আমাদের সাথে আছেন, আর ভবিষ্যতেও থাকবেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, যে কোন সমস্যায় QMH Club কে হয়তো সাথে পাব, আর যিনি পথের শুরুটা করে দিলেন তাঁর সান্নিধ্য আর পাওয়া হল না। স্যারের চলে যাওয়ার খবর শুনে এই মেইলটা বের করে অনেক বার পড়েছি। আর বিশেষ করে শেষের কয়েকটা শব্দ “Best Wishes, TASLIM”। আমার আম্মু সবসময় বলে, “মানুষ থাকে না, মানুষের কথা থাকে।” আসলেই তাই। তাই হয়তো স্যারের চলে যাওয়ার পর থেকেই তার সেমিনারে বলা কথাগুলো কানে বাজছে, “এটা ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্টদের জন্য বুঝতে একটু কঠিন লাগবে। আমি যখন কোর্স করাবো আশা করি বুঝতে পারবে।” স্যারের কাছ থেকে শেখার সুযোগ তো হলোই না, উপরন্তু ডিপার্টমেন্ট এর বারান্দায় তাঁর হাসিমাখা মুখটাও আর দেখা হবে না।

আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যেখানেই রাখুক,  অনেক ভালো রাখুক, সেই প্রার্থনা করি।

আমাদের একজন “তসলিম সাজ্জাদ মল্লিক” স্যার এর ক্লাস করা আর হয়ে উঠলো না।

নাভিদ নেওয়াজ
শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ