জুন ১৮, ২০২৫

ক্রিপ্টোকারেন্সি

ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দুইটি শব্দ রয়েছে। যথা: ক্রিপ্টো ও কারেন্সি। ল্যাটিন শব্দ ক্রিপ্টো অর্থ লুকানো।অন্যদিকে কারেন্সি অর্থ এক ধরনের টোকেন যার নির্দিষ্ট মূল্য আছে যা দিয়ে পণ্য বা সার্ভিস কেনা যায়। অতএব ক্রিপ্টোকারেন্সি মানে দাঁড়ায় লুকায়িত মুদ্রা ব্যবস্থা, যার প্রচলিত মুদ্রার মতোই মূল্য রয়েছে।

১৯৮৩ সালে ডেভিড চৌম নামক একজন আমেরিকান ক্রিপ্টোগ্রাফার ক্রিপ্টোগ্রাফিক পদ্ধতিতে টাকা আদান প্রদানের বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। যার নাম ই-ক্যাশ। ১৯৯৫ সালে তিনি ডিজিক্যাশের মাধ্যমে এটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক ইলেক্ট্রনিক পেমেন্টের দিকে এগুতে থাকেন। তবে এটি রাষ্ট্র পরিচালিত কোনো মুদ্রার মত নয়।এটি সম্পূর্ণ অস্তিত্বহীন। তবে সাতশি নাকামোতো (কোন ব্যক্তি বা গ্রুপ) সফলভাবে কেন্দ্রীয় সত্তাবিহীন ডিজিটাল ক্যাশ পেমেন্ট চালু করে। এটি বিটকয়েন নামে পরিচিত। বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন থেকে শুরু করে প্রায় ১৫০০ এর বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে এবং দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছে।।

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেচাকেনার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি বেশ জনপ্রিয়। এর মূল্য দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। উইকিপিডিয়া, ওয়ার্ডপ্রেস, মাইক্রোসফটের মত প্রায় ৩০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করে থাকে। ২০১৪ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েন ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়। ২০১৭ সাল থেকে এটি একটি উঠতি মার্কেটে পরিণত হয়।

ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষ বা ব্যাংক কোনো কিছুর প্রয়োজন পড়ে না।সরাসরি গ্রাহক প্রাপক লেনদেন করা যায়। এটি ব্লকচেইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। কে কার সাথে লেনদেন করছে তা কেউ বুঝতে পারবে না। এই মুদ্রা এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাঠাতে কয়েকমিনিট সময় লাগে। কিন্তু বর্তমান মুদ্রা পাঠাতে কয়েকদিন লাগে। ক্রিপ্টোকারেন্সি একজনের কাছ থেকে অন্যজনের কাছে পাঠাতে খুবই কম খরচ হয়। একটি মুদ্রা পাঠাতে যে খরচ হয়, এক লক্ষ পাঠাতে ঠিক একই খরচ হয়। কিন্তু বর্তমান মুদ্রা ট্রান্সফারে বেশি খরচ হয়।

ক্রিপ্টোকারেন্সি সংরক্ষণের কোনো সংরক্ষণাগার নেই। তাই ব্যাকআপ না থাকলে কম্পিউটারের ক্রাশের মাধ্যমে মুছে যেতে পারে সব তথ্য। হ্যাকিং ও ম্যালওয়্যারের আক্রমণের হুমকিও রয়েছে।সাথে রয়েছে ডিজিটাল অর্থচুরির আশংকাও। ৩৪ বছরে ৪০টিরও বেশি চুরির শিকার হয়েছে বিট কয়েন। এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তারা বলেছে এটি ব্যবহার আর্থিক ও আইনগত ঝুঁকি রয়েছে।

ফারহানা ইয়াসমিন
শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ