স্বাধীনতা কি? এই যে আমি আজ বাধাহীন লিখব, এটাই আমার জন্য স্বাধীনতা। লেখার সময় কোন জুজুর ভয় আমাকে তাড়িয়ে বেড়াবে না। আর এই স্বাধীনতা পেয়েছি আমাদের ছাত্রসমাজের ঐক্য, তারুণ্য ও সাহসী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে গড়ে তোলা এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে। তা দেশের বাইরে থেকে একজন শিক্ষার্থীর জন্য কেমন ছিল এই দিনগুলো? আজ সে গল্পই আমি শোনাতে এসেছি।
জুলাই মাসের শুরু থেকেই কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল দামাল ছাত্র। প্রথমদিকে শাহবাগ অবরোধ করে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে। দেখতে দেখতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও কোটার বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠে। দেশের বাইরে থেকে মুঠোফোনে খবরের পেজগুলোতে দেখতাম কীভাবে ছাত্ররা তাদের দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়ে রাজপথে নামছে। আমার মনে পড়ে ২০১৮ সালে যখন প্রথম কোটা সংস্কারের দাবি জানানো হয়, আমি তখন সদ্য মাস্টার্স পাশ। যে আগুন তখন আমার সমবয়সীদের মাঝে দেখেছিলাম, ২০২৪ সালে এসেও একই রুদ্ররূপ দেখতে পাই আজকের তরুণ সমাজের মাঝে। দাবী যেহেতু ন্যায্য, ছাত্রসমাজ দাবী আদায়ে পিছপা হবে না তা সহজেই অনুমেয়। সত্যি বলতে সেসব দিনগুলোতে খবরগুলো পড়ার সময় ভাবতে পারিনি সামনে কি দিন আসতে যাচ্ছে।
১৫ জুলাই, সোমবার। ল্যাব থেকে সন্ধ্যায় ছাত্রাবাসে এসে মাত্র হাতে ফোন নিলাম। খবরে যা দেখলাম আমার হাত পা রীতিমতো ঠাণ্ডা হয়ে আসলো। দুইমাস আগে দেশ ছেড়েছি। শেষদিন যখন রিকশা করে ক্যাম্পাস থেকে ফিরে আসি, রাস্তার দুই ধারে রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, বাগানবিলাস এবং নাম না জানা আর কত রঙ্গিন ফুল আমাকে বিদায় দিয়েছিলো। আমার সেই প্রিয় রাস্তাটাতে দেখি আমার শিক্ষার্থীরা বেদম মার খাচ্ছে। লুটিয়ে রাস্তায় পড়ছে, মাথা ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে। মেয়েরা দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে কোনমতে জান নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র এই দৃশ্য দেখে কীভাবে প্রতিবাদ না করে থাকতে পেরেছে কিনা তা আমার জানা নেই। এখানে আমার পরিচিত এমন একজন বাংলাদেশি ছাত্র নেই যে এই ঘটনাকে সমর্থন করেছে। শিক্ষকদের নীরবতা ছাত্রদের মনোবলকে যেন আরো দুর্বল করে ফেলেছিল। আমরা বিদেশে বসে থাকা বাঙ্গালিরা হাহাকার করা ছাড়া কিছুই করতে পারছিলাম না। তার পরের দিন, ১৬ জুলাই, শুধু আমাদেরকে নয়, পুরো বাঙালি জাতিকে রীতিমতো শোকে মুহ্যমান করে দিল। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলেন। আবু সাঈদ যখন গুলিবিদ্ধ হলেন, স্বয়ং আবু সাঈদ ও বিশ্বাস করতে পারেন নাই যে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রের ওপর গুলি চালাতে পারে। তিনি বুক চিতিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ালেন, পুলিশ তাঁর বুকে শুধু নয়- আমজনতার রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি যতটুকু বিশ্বাস ছিল তার বুকেও যেন গুলি করল। এরপর ঘটনার প্রেক্ষাপট খুব দ্রুত পরিবর্তন হতে লাগলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধ ঘোষণা করল। আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাসে পুলিশের আনাগোনা। ছাত্ররা নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হল ছাড়তে বাধ্য হল। দেশের বাইরের ছাত্ররা অসহায় ভঙ্গিতে দেখে যাচ্ছে কিভাবে নিরপরাধ ছাত্ররা নির্বিচারে গুলি খাচ্ছে। বাসায় একেকবার কথা বলার সময় একেকজনের হাজারটা অনুরোধ বাসার মানুষের কাছে যাতে পরিবারটা এ যাত্রায় বেঁচে যায়। ১৮ তারিখ রাত থেকেই দেশের বাইরে থেকে কথা বলা সম্ভব হচ্ছিলো না। বোঝাই যাচ্ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থাতে কিছু প্রতিবন্ধকতা দেয়া হচ্ছে।
১৯ জুলাই, শুক্রবার। আমাদের তথাকথিত ডিজিটাল বাংলাদেশের ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সবচেয়ে নির্মম পরিহাসের স্বীকার হল। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হল। টেলিযোগাযোগে নেটওয়ার্ক এত দুর্বল করে দেয়া হলো যে দেশের মাঝেই একজন আরেকজনের সাথে কথা বলতে পারছে না, বিদেশ তো দূরে থাক। দেশের বাইরে থেকে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ড সম্পূর্ণ নাই হয়ে গেছে। কোনো সংবাদ মাধ্যমও ইন্টারনেটে নেই। অনলাইনে কোনো সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি মোবাইলে ফোন দিলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতদিন প্রবাসীরা অন্তত পরিবারের খোঁজ নিতে পারছিলো, এখন ঐ শেষ সংযোগটুকু-ও ছিন্ন করা হল। আমাদের ছাত্রাবাসেরই এক বাংলাদেশি ছাত্র নিজের পরিবারের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে দিয়েছিলেন, শেষ যখন বাসায় কথা বলেছিলেন তখন তাঁর মা শয্যাগত। আমাদের তাঁকে আশার বাণী শোনানো ছাড়া কিছু করার ছিল না। যে সময়টায় এমন ইন্টারনেট কানেকশন ছিল না, দেখা যেত শিক্ষার্থীদের কেউ যদি ফোনে কল দিয়ে গলা শুনতে পেত সাথে সাথে অন্য প্রবাসীদের জানানোর চেষ্টা করতো যে ফোনে কথা বলা যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ আমরা সবাই রীতিমতো পাগলের মতো বাসায় ফোন দেয়া শুরু করতাম, যদি একটু গলা শোনা যায়। আমাদের কেউই রাতে ঘুমাতে পারত না চিন্তায়। দেশের কোনো খবর আমরা পাচ্ছি না। বিবিসি বাংলা আর আল-জাজিরা এর মতো আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো কিছু সংবাদ উপস্থাপন করতো। আমরা রীতিমতো মুখিয়ে থাকতাম দেশের একটা ভিডিও দেখতে বা একটু খবর পাওয়ার জন্য। তৎকালীন সরকার এই সার্কাসের নাম দিল “ইনফরমেশন ব্ল্যাকআউট”। যখন আকাঙ্খিত খবর আসতো, সেখানে আমরা শুনতাম শুধু ছাত্রদের মৃত্যু মিছিলের সংবাদ। প্রবাসী ছাত্ররা আর চুপ থাকতে পারলো না। প্ল্যাকার্ড হাতে তারাও নেমে আসলো বিদেশের মাটিতে এক খণ্ড বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে। মনে একটাই আশা, যদি আন্তর্জাতিক মহলের একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে বাংলাদেশি ছাত্ররা সরব হয়ে উঠলো। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদলিপি উপস্থাপন করা হল। আমি অস্ট্রেলিয়াতে দেখেছি- সিডনি, মেলবোর্ন, ব্রিসবেন এবং অন্যান্য সকল বড় শহরগুলোতে আমরা বাংলাদেশিরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। সে সমাবেশে থাকা সবার চোখে বিষাদের ছায়া ও প্রতিবাদের আগুন একই সাথে ঠাই পেত। সবার মুখে একই কথা ছাত্রদের সাথে হওয়া এই অন্যায় অরাজকতা কোন মূল্যেই মেনে নেয়া যায় না। এটা শুধু এই দেশের প্রবাসী ছাত্ররাই নয়, পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সকল বাংলাদেশি ছাত্রসমাজ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল। দীর্ঘ পাঁচদিন আমরা কেউ দেশের কোন খোঁজ পাচ্ছি না। দেশে কারো গলা শুনে এইটুকু সন্তুষ্টি হত যে কাছের মানুষগুলো অন্তত বেঁচে আছে। দেশের সার্বিক অবস্থা জানার তেমন কোন উপায় ছিলোই না বলতে গেলে। এইবার প্রবাসীরা প্রতিবাদের ভাষা বদলালো। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিবে। এই সিদ্ধান্ত সত্যি সত্যি সবাই মেনে নিল। দেশের বাইরে থেকে কেউ আর দেশে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠাল না। এই রেমিট্যান্স বয়কট ও ইন্টারনেট ব্যবস্থার বন্ধ থাকার কারণে দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় ধাক্কা খেলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, এই এক মাসে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স কমে গেল যা পূর্ববর্তী দশ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই কমে যাওয়া রেমিট্যান্স সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করলো বৈকি। ২৩ জুলাই এসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবস্থা সচল করা হয়। তাও ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ তখনো বন্ধ রাখা হয়। মজার ব্যাপার হল তখনো ইমো, প্রবাসীদের মাঝে বহুল ব্যবহৃত অ্যাপ, চালু রাখা হয়। এ থেকেই সহজে অনুমেয় রেমিট্যান্স বয়কটের মতো নীরব প্রতিবাদ কতোটা কার্যকর হয়েছিল।
ইন্টারনেট চালু হওয়ার পর আমরা সবাই ঘরের সাথে কথা বলতে পারলাম ঠিকই, কিন্তু সাথে মাঝের এই পাঁচদিনে চলা সকল অরাজকতার আলোকচিত্র ও ভিডিও আস্তে আস্তে সামনে আসা শুরু করলো। মুগ্ধর পানি বিলির ভিডিও, প্রিয় এর অবুঝ মেয়ের সাক্ষাৎকার, নাম না জানা কত মানুষের লাশের ছবি, বিক্ষোভ দমনে শত শত গ্রেফতার, বাবা মায়ের কোল খালি হওয়ার আহাজারি, নিরস্ত্র তরুণের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে ঝুলে পালিয়ে থাকা অবস্থায় পুলিশের নির্বিচারে গুলি- সব দেখে এক সময় মানসিকভাবে অসুস্থ লাগতে থাকে। দেশের বাইরে থেকে মনে হয় এর চেয়ে দেশে আপনজনদের কাছে ছুটে যাই। পরিবারের নিরাপত্তার শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটে। কারফিউ এর পর কারফিউ চলে। আমরা দেশের বাইরে ছিলাম ঠিক, কিন্তু অষ্টপ্রহর এমন একটা মুহূর্ত নেই যখন আমরা দেশের জন্য প্রার্থনা করিনি। কয়দিন আগে যে শান্ত দেশ রেখে এসেছিলাম, সেই দেশ আর ফিরে পাবো এই আশা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে আসছিল। মানুষের পুলিশ ও বিচার ব্যাবস্থার উপর আস্থা উঠে যাচ্ছিল। ডিবি ভাতের হোটেলের তামাশা দেখে আমরা বুঝেও না বোঝার ভান করি। গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। আন্দোলন বিদেশের মাটিতেও হচ্ছিলো। কিন্তু বাস্তবতা তখন এমন, ছাত্রদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা ছাড়া আমরা তেমন কোন সহযোগিতাই করতে পারছিলাম না। এখানে থাকা অন্যান্য দেশের সহপাঠী সবাই জেনে গিয়েছে ততদিনে বাংলাদেশে কি হচ্ছে। তারা এসে সহমর্মিতা প্রকাশ করতো। বারবার বলেছে, আমরা যেন কোন সাহায্য করা গেলে বলি। নিজেকে মাঝে মাঝে যুদ্ধপ্রবণ দেশের নাগরিক মনে হতো। লজ্জাও লাগতো- আমরা কি এতই অপারগ যে এত ছোট একটা দেশে সবাই মিলে একটা শান্তিময় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারলাম না?
দেশের প্রেক্ষাপট খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছিলো। বিভিন্ন সময় ইতিহাসের বইগুলোতে পড়েছিলাম ১৯৭১ সালে সবাই রেডিও শুনার জন্য কিভাবে মুখিয়ে থাকতো। ২০২৪ এ এসে এর পরিবর্তন এতোটুকুই হল যে আমরা এখন মুঠোফোনে দেশের একটু খবর পাওয়ার জন্য গুগল ও ইউটিউব সার্চ করি। তখন আর এই আন্দোলন শুধু ছাত্রদের নেই। সকল পেশাজীবীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। আইনজীবীরা ছাত্রদের হয়ে কোর্টে লড়াই করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবর্গ নীরবতার খোলস ছেড়ে ছাত্রদের নিরাপত্তায় রাস্তায় আন্দোলনে দেয়ালের মতো দাঁড়িয়ে গেছে। রিকশাওয়ালা ভাইরা রিকশা মার্চ করে রাস্তা অবরোধ করে আছে। এ যুগের র্যাপাররা জ্বালাময়ী র্যাপের জন্য জেলবন্দী। যে কিছুই পারছে না, সে ফেসবুকে হুংকার দিচ্ছে। কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তখন এক দফা- তৎকালীন সরকারের উৎখাত। এর মাঝেই ছাত্ররা লং মার্চের ঘোষণা দেয়।
৫ আগস্ট সকালে আমরা সবাই প্রার্থনারত- আর যাই হোক, আজ যেন গুলি না চলে। বিদেশে সবাই যে যার কর্মস্থলে গিয়েছিলাম ঠিকই, মন কিছুতেই কাজে বসছিল না। পাখির মতো মানুষের মৃত্যুমিছিল আর কত সহ্য হয়। হঠাৎ করে ঐদিন আবার আগের মতো ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট হয়। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে আজও এমন মৃত্যু মিছিল হবে যে বাইরের দুনিয়ায় বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর যেন না পৌঁছায়। কিন্তু ঐদিন সৃষ্টিকর্তা মুখ তুলে চাইলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা আমরা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন রইলাম। দুই ঘণ্টা পর আমাদের অবাক করে দিয়ে ইন্টারনেট কানেকশন ফেরত আসলো। এর কিছুক্ষণ পর শুনলাম- ছাত্রদের এক দফা দাবী মেনে নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে নতুনভাবে স্বাধীনতার সূর্যোদয় হলো। যখন আমরা দেশের বাইরে থেকে শুনলাম এখানে তখন সন্ধ্যা নেমেছে। বাইরের দেশগুলোতে দেশি মিষ্টির দোকান খুব কম থাকে। আমরা সবাই তখন বের হয়ে পড়েছিলাম রাস্তায়। নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করে সবাই আনন্দ উদ্যাপন করলো। এখানে এসে আমি ঈদও দেখেছি। ঈদেও মানুষ এতোটা আনন্দিত ছিল না, যতটা শিক্ষার্থীদের সফলতায় ছিল। অনেকে আবেগে কান্না করছিল- হয়তো নিজের আপন কেউ মারা যায়নি। কিন্তু আমরা প্রত্যেকে একটা আতঙ্ক নিয়ে অপেক্ষা করেছি, নিজের পরিবারের জন্য, দেশের জন্য।
বিদেশে যারা পড়তে বা জীবিকাধারণ করতে আসে, তারা সত্যি বলতে কেউ চায় না পরদেশে রয়ে যেতে। এই দেশের আলো, বাতাস, হাওয়া, পানি, খাওয়া, মানুষ সব ভালো- কিন্তু দিন শেষে দেশটা তো আমার না। দেশের বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে যে শান্তি বাইরে বসে আমরা প্রতিনিয়ত সেটা খুঁজি। আমাদের সবার বুকের মাঝে ছোট্ট একটা বাংলাদেশ আমরা লালন করি। যে দেশকে আমরা এত ভালবাসি তাঁকে প্রতিদিন রক্তস্নাত হতে দেখা আমাদের জন্য সহজ ছিল না। যে শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতো করে গড়ে তোলার ব্রত নিয়ে শিক্ষকতা পেশায় এসেছিলাম তাদের উপর অনাচার হতে দেখা আমার মতো কোন শিক্ষকের জন্য সহজ ছিল না। আমাদের দেশে এই যুগের শিক্ষার্থীরা নতুন যুগের সূচনা করে দিল। এমন দিন আর কখনো না আসুক। হয়তো সেদিন বেশ দূরে নয়, যেদিন কোন প্রবাসীর কোন কারণেই নিজের দেশ থেকে দূরে থাকতে হবে । এই তারুণ্যশক্তির উপর ভর করে আমরা এখন স্বপ্ন দেখি এমন এক সত্যিকারের স্বপ্নপুরীর- যেখানে থাকবে না কোন মেধা পাচার, দূর হবে বেকারত্ব, স্থান থাকবে না দুর্নীতির। সর্বোপরি অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থান সর্বভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠুক আমাদের মাতৃভূমি।
- তাসমিয়াহ সাদ সুতপাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a6%aa%e0%a6%be/মঙ্গলবার, জুলাই ৩০, ২০১৯
- তাসমিয়াহ সাদ সুতপাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a6%aa%e0%a6%be/মঙ্গলবার, মার্চ ১৭, ২০২০
- তাসমিয়াহ সাদ সুতপাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a6%aa%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১