fbpx
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

দ্বিতীয় স্বাধীনতার দিনলিপি

০১/০৭/২০২৪ (সোমবার)

সর্বজনীন পেনশনের আওতাধীন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে পালিত হয়। অন্যদিকে কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। একই সাথে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন পালন করেন।

০২/০৭/২০২৪ (মঙ্গলবার)

সার্বজনীন পেনশন “প্রত্যয়” স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্ট কালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা আসে এবং এ আন্দোলনে অচল হয়ে পরে বিশ্ববিদ্যালয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সকাল ৯ টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি করেন। এ বিষয়ে জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন,”আমাদের তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।”

০৩/০৭/২০২৪ (বুধবার)

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র বহাল রাখা সহ চার দাবিতে ঢাকা- আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

০৪/০৭/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাঁরা রাজধানীর শাহবাগ মোড়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন। কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পাঁচ ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করেন। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় আশপাশের এলাকায় যানজট তৈরি হয়।

০৫/০৭/২০২৪ (শুক্রবার)

মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার রায় স্থগিত না হওয়ায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছয় ঘণ্টার অবরোধের কর্মসূচির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম জানান, চার দফা দাবির ভিত্তিতে শুক্রবার সারাদেশে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচারণা চালানো হবে। শনিবার বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল এবং পরদিন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করবে বলেও জানা তিনি।

০৬/০৭/২৪ (শনিবার)

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার বেলা তিনটায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের। কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম শহরের দুই নম্বর গেটে সড়ক অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।অন্যদিকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কোটাবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত – বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

০৭/০৭/২০২৪ (রবিবার)

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশিষ্টজনরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে এই আন্দোলন ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সরকারি দলের কোনও কোনও নেতার মন্তব্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের যে কোনও ধরনের আন্দোলন একটি স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের মন্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এছাড়া দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে হরতালের মতো কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।

০৮/০৭/২৪ (সোমবার)

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত—এ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা তো সাবজুডিস। আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারি না। কারণ, হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে।’

বরিশাল কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

০৯/০৭/২০২৪ (মঙ্গলবার)

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বুধবার বাংলাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে এই কর্মসূচি পালনে সারা দেশের শিক্ষার্থীদেরকে আহবান জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কের গুরুত্ব পয়েন্ট অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করার কথাও জানান আন্দোলনকারীরা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নামেনি। এই ইস্যুতে সরকার নিশ্চুপ থাকার কারণে এই ধরনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে আন্দোলনকারীরা”।

১০/০৭/২০২৪ (বুধবার)

সরকারি চাকরিতে যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিনের মতো বুধবার সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। সর্বোচ্চ আদালত কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনে স্থিতাবস্থা দিলেও কর্মসূচি চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এ সপ্তাহে দুইদিন শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ার মতো কর্মসূচী পালন করেছে, যার নাম দিয়েছে তারা ‘বাংলা ব্লকেড’। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবারও পুরো দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সকাল দশটা থেকে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও বিভাগের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে এখানে জড়ো হতে থাকে তারা।কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর বেলা বারোটায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে তারা।

১১/০৭/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

বাংলাদেশের সংসদে আইন পাশ করে সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার আবারও বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় তারা। এছাড়া, কুমিল্লায় কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীরা পাঁচটার কিছু আগে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন। গত কয়েকদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার অধিক প্রস্তুতি ও সতর্কতা নিয়ে মাঠে নামতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তন্মধ্যে জলকামান, অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ। ক্যাম্পাসে থেকে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেডও দেয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে মোড়ে চলে যান এবং সেখানে অবস্থান নেন। এসময় কাউকে কাউকে পুলিশের এপিসির উপরও উঠে বসতে দেখা যায়।

১২/০৭/২০২৪ (শুক্রবার)

শিক্ষার্থীরা এবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নাম দিয়ে। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে টানা এ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা। কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গড়ে উঠা এই ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা দল-মত নির্বিশেষে এ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন এবং তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। আরও উঠে আসে আন্দোলনরত সকল শিক্ষার্থীদের একদফা দাবি সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে। তাদের এই একদফায় বলা হয়েছে- ‘সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।’

১৩/০৭/২০২৪ (শনিবার)

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুই সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আন্দোলন চলছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা এবং পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। কোটার আন্দোলনে দেশের প্রায় সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সম্পৃক্ত হলেও পেনশনের আন্দোলন মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের।

গত বুধবার মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা দেয় আপিল বিভাগ। এ সংক্রান্ত আদেশের সাথে তিনটি পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাও দেয়া হয় আদালতের পক্ষ থেকে। যার প্রথমটিতে, প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলা হয়।

আদালতের আদেশের পর, সরকারের দু’জন মন্ত্রীও আন্দোলনকারীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তবে, শিক্ষার্থীরা স্থায়ী সমাধানের দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

১৪/০৭/২৪ (রবিবার)

এ বছর নয়,২০২৫ সালের জুলাই থেকে সর্বজনীন পেনশনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যুক্ত হবেন। শিক্ষকদের সুপার গ্রেড ও পৃথক বেতন স্কেলের বিষয়টি নিয়েও সরকার আলোচনা করবে।

গতকাল শনিবার আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্থাপন করা হবে। অন্যদিকে দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘আমি মনে করি, তাঁদের (ছাত্রদের) একটু অপেক্ষা করা উচিত, আন্দোলন থামানো উচিত। কারণ, পৃথিবীর সব জায়গায় কিন্তু কোটা রয়েছে। সব দেশেই কিছু অনগ্রসর জায়গা থাকে, যেমন আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা রয়েছে এবং সংবিধানেও সেটি বলা আছে। এটি বাতিল করে দিলে এরা কোনো দিন সমাজের মূল স্রোতে আসতে পারবে না। আমরা মনে করছি, সবাই যেন একসঙ্গে চলতে পারে।’

১৫/০৭/২০২৪ (সোমবার)

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, রড-চাপাতি ব্যবহার করে বহিরাগতদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এই হামলায় যে সব ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অংশ নিয়েছে তাদের হলে ঢুকতে না দেওয়ারও আহ্বান জানান আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

১৬/০৭/২০২৪ (মঙ্গলবার)

দেশের বিভিন্ন পবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন কারীদের উপর হামলা করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ সহ সরকার সমর্থকেরা। এতে অনেকে আহত নিহত হয়। রংপুরে আন্দোলনকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের বুলেটে নিহত হওয়ার সচিত্র ছবি, ভিডিও প্রকাশ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে বুধবার গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল করবেন তাঁরা।

সেদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিটি হল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত করার। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রতিটি হলের প্রোভস্ট বরাবর আবেদন পত্র তৈরী হয়।

১৭/০৭/২০২৪ (বুধবার)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিতাড়ন করে ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা। ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিল এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল টি.এস.সি এর কাছে যাওয়ার মুখে পুলিশের টিয়ারশেল আর সাউন্ড গ্রেনেড এর সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা। এইসময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আরো অনেকে আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হল বন্ধের ঘোষণা ও পুলিশের তৎপরতার মুখে অনেক শিক্ষার্থী সন্ধ্যা নাগাদ ক্যাম্পাস ছেড়ে যান।

১৮/০৭/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

সারাদেশের বিভিন্ন পাব্লিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও গুলি। আন্দোলনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে দলে দলে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে।ব্র‍্যাক,বিউপি, নর্থ সাউথ সহ দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে এগিয়ে আসে।কোথাও কোথাও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের, আবার কোথাও সরকার-সমর্থক বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত নিহত এর সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। আন্দোলন কারীদের ৮ দফা দাবি তৈরি হয়।রাত আনুমানিক পৌনে নয়টা থেকে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

১৯/০৭/২০২৪ (শুক্রবার)

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, গুলি, অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকা ছিল কার্যত অচল, পরিস্থিতি ছিল থমথমে। নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, উত্তরা, বনানী সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়।

দেশের বিভিন্ন জেলাতেও ব্যাপক বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও সহিংসতা হয়। রাতে সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়।

২০/০৭/২০২৪ (শনিবার)

দেশজুড়ে কারফিউ জারি এবং সেনা মোতায়েন করা হয়। সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ধাওয়া ও গুলি চলে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলমান থাকার কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে এদিন। আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাদের আট দফা দাবি পেশ করে।

মন্ত্রীদের কাছে দেওয়া আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে নিহতদের ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে গ্রেপ্তার ও বিচার। শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা, মাসিক ভাতা ও তাঁদের পিতামাতার মতামতের ভিত্তিতে একজন সদস্যকে চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে প্রশাসনিকভাবে সিট বরাদ্দ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা এবং ছাত্র সংসদ চালু করা, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সব শিক্ষার্থীকে সব ধরনের রাজনৈতিক, আইনি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মাধ্যমে একাডেমিক হয়রানি না করার নিশ্চয়তা দেওয়া। এদিন দুর্বৃত্তকারীরা কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর চালায় এর ফলশ্রুতিতে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয় দেশ।

২১/০৭/২০২৪ (রবিবার)

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সামগ্রিকভাবে বাতিল (রদ ও রহিত) করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রদান। রায়ে বলা হয়, কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলো সাধারণ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করতে হবে। এই নির্দেশনার আলোকে সরকারের নির্বাহী বিভাগকে অনতিবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে এ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, এই নির্দেশনা ও আদেশ সত্ত্বেও সরকার প্রয়োজনে ও সার্বিক বিবেচনায় নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।

আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদকে তুলে নিয়ে নির্যাতন। হাসপাতালে ভর্তি।এ ছাড়া সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারসহ কয়েকজনের সন্ধান দাবি করা হয়েছে। চার দফা দাবি পূরণের জন্য বৈষম্যবারোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দিলেন। চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা, শিক্ষার্থীদের আসার ব্যবস্থা করে দিয়ে হল খুলে দেওয়া, আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কারফিউ তুলে দেওয়া। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চারজন সমন্বয়ক।

২২/০৭/২০২৪ (সোমবার)

সারা বাংলাদেশ ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সারাদেশে কারফিউ জারি করে। নির্বাহী আদেশে মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কোটাপ্রথা সংস্কার করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তৈরি করা প্রজ্ঞাপন অনুমোদন দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম চার দফা দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত করেন।

চার দফা দাবি

  • ইন্টারনেট সেবা চালু করতে হবে
  • কারফিউ তুলে দিতে হবে
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরিয়ে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করে ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে এবং
  • আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “এই চার দফা দাবি দু্ই দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের দেওয়া আটটি দাবি বাস্তবায়নে কথা বলার পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরা ক্যাম্পাসে যাব কিনা এবং আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করব কিনা, তা নির্ভর করছে আমাদের এই জরুরি চারটি দাবি মেনে নিয়ে সরকার কতটুকু উপযোগী পরিবেশ তৈরি করছে, তার ওপর।”

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাছে আমাদের দাবি পেশকে সংলাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এত মানুষের লাশের ওপর দিয়ে আমরা কখনোই সরকারের সঙ্গে সংলাপ চাইনি। হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।”

২৩/০৭/২০২৪ (মঙ্গলবার)

 সারা বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকলেও, রাতের দিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। সারাদেশে কারফিউ জারি বহাল থাকে। ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পর ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে (সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচটি উদ্যেগ গ্রহণ করে

  • বৈধ শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ করা।
  • আন্দোলনকারী নিরপরাধ শিক্ষার্থী যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা;
  • জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিশ্চিত করা, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন,
  • হলের কক্ষগুলো সংস্কার করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া এবং
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা।

২৪/০৭/২০২৪ (বুধবার)

এদিন সীমিত পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকে।

সারাদেশে কারফিউ জারি থাকে, তবে তা শিথিল পর্যায়ে থাকে এবং সেনা মোতায়ন করা হয়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের মৃত্যু হয় এবং শহিদের সংখ্যা বেড়ে ১৯৭ হয়। (শিক্ষার্থীদের মতে শহিদের সংখ্যা আরও অনেকগুণ বেশি যা ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় জানা যায় নি)। ২৪ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় পুলিশ ১৭৫৮ জনকে গ্রেফতার করে।

বিক্ষোভের সময় সেনা মোতায়েন পর জাতিসংঘের লোগো সংবলিত যান ব্যবহৃত হলে জাতিসংঘ এই নিয়ে উদ্বেগ জানায়।১৯ জুলাই থেকে নিখোঁজ থাকার পর ২৪ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদের খোঁজ পাওয়া যায়।

২৫/০৭/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

২৫ জুলাই বিকেল পর্যন্ত ব্রডব্যান্ডে ধীরগতির ইন্টারনেট পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখা হ ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আটটি বার্তা দেওয়া হয়।

২৬/০৭/২০২৪ (শুক্রবার)

সকাল ৮-বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকে।

২৬ জুলাই নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদাপোশাকের এক দল ব্যক্তি। তাঁরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছেন বলে সেখানে উপস্থিত এক সমন্বয়কের স্বজন ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটককে ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ নামকরণ করে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সরাসরি গুলি ব্যবহারের ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ। কোটা আন্দোলন দমনে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করেছেন লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার সুষ্ঠু দাবি জানায়।

২৭/০৭/২০২৪ (শনিবার)

আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা থাকলে তাঁদের পরিবারের কাছে না দিয়ে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হলো কেন, সেই প্রশ্ন তুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তিন শিক্ষার্থীর খোঁজখবর নিতে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যান এই শিক্ষকেরা। যদিও শিক্ষকদের সাথে দেখা করতে ডিবিপ্রধান অস্বীকৃতি জানান।

আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ, সংঘাত, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে অভিযান চালানো হয়। সারা দেশে অন্তত ৫৫৫টি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় নিরপরাধ শিক্ষার্থীসহ ৬ হাজার ২৬৪ জনকে।

এদিনও কারফিউ চলমান থাকে। তবে এই কারফিউ কিছু সময় শিথিল থাকে । জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২৮শে জুলাই থেকে ৩০শে জুলাই পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময়সূচি ছয় ঘণ্টা করার সিদ্ধান্ত জানায়।

রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠনের আরও দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নেয় গোয়েন্দা শাখা।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ২৮ তারিখের (রবিবার) মধ্যে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ, আসিফ মাহমুদসহ আটক সকল শিক্ষার্থীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষার্থী গণহত্যার সাথে জড়িত মন্ত্রী পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সকল দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একই সাথে রোববার সারা দেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকা ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উপর পুলিশের নির্যাতনের কথা বলেন তার স্ত্রী।

২৮/০৭/২০২৪ (রবিবার)

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসে জিম্মি করে জোরপূর্বক আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ানো হয়। বিবৃতি প্রদানের পর পরই আন্দোলনের বাকি সমন্বয়করা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন; বলেন ডিবি অফিস থেকে জোরপূর্বক আটককৃত ছয় সমন্বয়ককে দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে।

২৯/০৭/২০২৪ (সোমবার)

আদালতে আনদোলনকারী ছাত্রদের উপর গুলি না চালানোর রিট করা হয় এবং ৩০ জুলাই, ২০২৪ জাতীয় শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

৩০/০৭/২০২৪ (মঙ্গলবার)

সরকার পক্ষ থেকে পূর্বঘোষিত শোক পালন করা হলেও ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাল রঙের প্রফাইল দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।

৩১/০৭/২০২৪ (বুধবার)

দিনের ১৩ ঘন্টা কারফিউ শিথিল করে সকল অফিস এবং দূর পাল্লার যানবাহন সীমিত পরিসরে যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

০১/০৮/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়।

০২/০৮/২০২৪ (শুক্রবার)

হতাহতদের স্মরণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি পালন করা হয়।

০৩/০৮/২০২৪ (শনিবার)

সারাদেশে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ এবং ৯দফা দাবি আদায়ে আজ সারাদেশে চলে বিক্ষোভ মিছিল এবং রবিবার থেকে সারাদেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিকাল ৩টার ছাত্র-জনতা দ্রোহযাত্রা মিলেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ” বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর।” – এর মতো বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত ছিল আজকের শহিদ মিনার। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আসে এক দফা ঘোষণা: সরকারের পদত্যাগ।

বিভিন্ন স্থানে গণমিছিলে হামলা, সংঘর্ষ। পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। “প্রত্যয় স্কিম”-ও বাতিল ঘোষণা করেন তিনি। আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির নির্দেশ তিনি এবং আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত করা হয়।

০৪/০৮/২০২৪ (রবিবার)

দেশ স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে আবারও অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয় এবং তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এদিন দেশ জুড়ে চলে আন্দোলনকারী, পুলিশ কিছু জায়গায় ছাত্রলীগের সাথে সংঘর্ষ, নিহত ১১৪জন। এরই প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা করে আগামীকাল, ০৫ আগস্ট ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির; সারাদেশ থেকে জনগণকে ঢাকার দিকে আসার আহ্বান জানানো হয়। আবারও মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, টেলিগ্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

০৫/০৮/২০২৪ (সোমবার)

প্রতিটি নিউজ চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক , ঢাকার রাস্তা ফাঁকা। হঠাৎ সকাল সাড়ে দশটায় বন্ধ করে দেয়া হয় ব্রডব্যান্ড সেবা। রাস্তায় তখন জনস্রোত।

বেলা ১ টায় কাঁটাতার, বেড়া সব জায়গা থেকে সরিয়ে দেন সেনাবাহিনী। ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করতে থাকে। বেলা আড়াইটায় পদত্যাগের পর শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের আগরতলার পথে যাত্রা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি গিয়েছেন বলে জানা যায় ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরে দেখা যায় রাজধানীর পথে পথে ছাত্র-জনতার বিজয়, এ যেন দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা যার সমস্ত কৃতিত্ব ছাত্রদের।

দেশের বিভিন্ন জেলায় বের হয় আনন্দ মিছিল।

দুপুর ২ টায় সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা বেলা ৪ টায় নেয়া হয়।

বেলা ৩:৫২ মিনিটে সেনাপ্রধান তাঁর বক্তব্যে শেখ হাসিনার ক্ষমতা থেকে পদত্যাগের কথা এবং শীঘ্রই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথা জানান। তিনি আরও আশ্বাস দেন, এই আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া সকল হত্যার বিচার করা হবে।

গণভবন, সংসদ ভবনে দেখা যায় জনগণের উল্লাস। অবশ্য এসময় নানা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লুটপাটেরও ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এসময় অনেক শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসতেও দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ( বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ি) দেওয়া হয় আগুন। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে করা হয় ভাঙচুর। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, থানা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামী লীগ বহু নেতার বাসায়ও চালায় হামলা। বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপর চালালো হয় নিপীড়ন।

রাতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে মহামান্য রাষ্ট্রপতি জানান, বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে অতি শীঘ্রই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে এবং সেই সরকারের অধীনে দ্রুত একটি নির্বাচন করা হবে। বৈষম্য বিরেধী ছাত্র আন্দোলন এবং সকল মিথ্যা মামলায় আটককৃত বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা দেওয়া হবে। সকলের সম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দেবার ঘোষণা দেন। দেশে চলমান লুটতরাজ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান তিনি। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি।

অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠনের লক্ষ্যে রাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় মন্দির পাহারায় দেখা যায় মাদ্রাসার ছাত্রদের।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো (আলজাজিরা, সিএনএন, বিবিসি) গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশত্যাগ এবং দেশের সার্বিক অবস্থা। আন্দোলনের সব সংবাদ সঠিকভাবে প্রচার না করায় বিক্ষুব্ধ জনতা সময় চ্যানেল এবং চ্যানেল একাত্তর -এর অফিসে হামলা চালায়।

০৬/০৮/২০২৪ (মঙ্গলবার)

মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইস্যুতে তিন বাহিনীর প্রধান এবং রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠক হয়। এসময় সকল সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। বেলা তিনটায় বঙ্গভবন থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভেঙে দেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ। খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সেনাবাহিনীর শীর্ষ বিভিন্ন পদে আসে রদবদল, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ট্রাফিক কাজ পরিচালনা থেকে দৈনন্দিন কোনো কজেই পুলিশের দেখা না মেলায় শিক্ষার্থীদের দেখা যায় ট্রাফিক কাজ পরিচালনায়। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায় যুক্তরাজ্যের ভিসা পাচ্ছেন না হাসিনা। ব্রিটিশ সরকারের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনের কারণে ভিসা দেওয়া হবে না তাকে। ঐ দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় রাজনৈতিক আশ্রয় বা সাময়িক শরণার্থী হিসেবে কাউকে ভ্রমণ করার বিধান নেই তাদের। সেই ক্ষেত্রে যে দেশে প্রথমে নিরাপদে পৌঁছেছেন হাসিনা সেই দেশেই আবেদন করতে হবে তাকে।

০৭/০৮/২০২৪ (বুধবার)

আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান এবং সর্বস্তরেরে মানুষকে এক সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন।

০৮/০৮/২০২৪ (বৃহস্পতিবার)

২:১০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান ড. মুহম্মদ ইউনূস।

বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩জন সমন্বয়ক।

বিমানবন্দরেই প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো তিন বাহিনীর প্রধান এবং সমন্বয়কদের সাথে আলোচনায় বসেন ড. ইউনূস। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে তৈরি হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখানে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং আরও ১৬জন উপদেষ্টা।

উপদেষ্টাগণ হলেন:

-বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ

-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল

-মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের নির্বাহী পরিচালক আদিলুর রহমান খান

-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ

-সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন

-পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

-সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন

-নারী অধিকারকর্মী ফরিদা আখতার

-ইসলামি চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হাসান

-গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর জাহান বেগম

-নির্বাচনব্যবস্থা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শারমিন মুরশিদ

-আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং

-অপর সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অবস্থান করবেন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’- এ। বাকি উপদেষ্টাগণ থাকবেন মন্ত্রিপাড়ায়।

রাত ৯ টায় বঙ্গভবনে শুরু হয় শপথ গ্রহণ আনুষ্ঠানিকতা। আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা এবং গোপনীয়তার শপথ গ্রহণ করেন। এরপর বাকি ১৬ জন উপদেষ্টাগণের মাঝে ১৩ জন উপদেষ্টা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে উপদেষ্টা শপথ এবং গোপনীয়তার শপথ গ্রহণ করেন। (শহরের বাহিরে থাকায় সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন রায় ও নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক-ই-আজম উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করতে পারেন নি)

০৯/০৮/২০২৪ (শুক্রবার)

সকাল ১০টায় মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং এবং বেলা সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামন্ডলি।

২৭টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এছাড়াও বাকি মন্ত্রণালয়গুলোর মাঝে

আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রয়েছেন আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জনাব মো: তৌহিদ হোসেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে জনাব মো: নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

মো: মুহেব্বুল ইসলাম
আরিফা তাবাসসুম
মোছা: আতিকা শর্মিলা
ইসরাত জাহান নাফিছা
নুঝাত নাজিয়া

সেশন: ২০২১-২২
পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়