রাত্রির বয়স চৌদ্দ বছর। এপ্রিল এর মাঝামাঝি সময়ে ওকে নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে যাই প্রত্যেকবার, কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতে। অবশ্য আরও এক কারণ আছে। রায়হানের সাথে এই মাসেই আমার খুব করে চেনাজানার যাত্রা শুরু হয়েছিল। যদিও তা অনেক বছর হল কিন্তু কেন জানি মনে হয় এই তো সেদিন!
“মা, এই গরমে সবসময় আমাকে নিয়ে এভাবে ফুল দেখতে আসো কেন? আর যতবারই আসো এই লাল ফুল দেখে তোমার চোখে পানি আসে কেন? এইবার তো বলবা নাকি!” রাজ্যের বিরক্তি রাত্রির চোখে।
“এক ছেলে ছিল যে আমার, এই ফুল পছন্দ বলে একদিন গাছে উঠে ফুল পাড়তে গিয়ে পায়ে ব্যথা পায়। আমি তখন আরও কিছু লোকের সাহায্য নিয়ে, তার শহীদুল্লাহ হলের বন্ধুদের ডেকে মেডিকেলে নিয়ে যাই। ছেলেটা এর আগে দু’একবার গাছে চড়েছিল, মানা করা সত্ত্বেও কেন এই বোকামি করতে গেছিল বুঝিনি।”
হাসপাতালে তার বন্ধুদের কাছে তাকে রেখে বিদায় নেওয়ার সময় বলছিলাম, “কেন এই পাগলামি করলে, যদি আরও বেশি ব্যথা পেতে? আর এমন করবা না।” বলেই চুপ করে গেলাম আমি।
“তারপর কি বলল উনি, মা?”
সে বলেছিল, “সারা জীবন এভাবে তোমার জন্য কৃষ্ণচূড়া এনে দিতে চাই।”
“তুমি কি বললে, মা?”
“কিছু না বলেই চলে আসছিলাম।”
“ওমা! কিছুই বললে না! ধুর!”
মুচকি হেসে দিলাম আমি, বললাম
“ঐ পাগল ছেলেটি হচ্ছে তোর বাবা।”
- This author does not have any more posts.