fbpx

জানুয়ারি ১৯, ২০২৫

মহা অজ্ঞ

বাবা-মা দুটি অনন্য রত্ন
বিধাতার এক মহা আশীর্বাদ,
সন্তানের অতন্দ্র প্রহরী
প্রতিটি দিবস রাত।

প্রতিরাতের সেই ঘুমপাড়ানি গান
শৈশবের স্মৃতিপটে অম্লান,
ধিরে ধিরে বেড়ে ওঠে শিশু
ভুলে যায় শৈশবের সবকিছু।

ভুলে যায় নিজ মা বাবাকে
মনে বুদ্ধির ফুল ফোটে,
বৃদ্ধ মা বাবাকে ফেলে রেখে
জীবন জীবিকার পথে ছোটে।

বৃদ্ধ বাবা মায়ের মন ভারাক্রান্ত
হৃদয়ে শীতের করুণ রিক্ততার সুর,
কোমল হৃদয়ের সন্তান কই?
খুঁজছে তাকে দুর-বহুদুর।

বাবা মায়ের হৃদস্পন্দন যে সন্তান
প্রতিটি আনন্দ ছিল যাকে ঘিরে,
সে সন্তানরের কাছেই অপরিচিত আজ
হারিয়ে গেছে পরের ভিরে।

বাবা মায়ের মনে বেদনা গুমরে মরে
তাদের বুক আজ শুন্য,
কি কারণে এমন হলো?
কি এমন করেছিল পুণ্য।

এটাই তো পৃথিবীর লিলা
সবকিছুই এখানে ভ্রম,
সময়ের সাথে সবিকছুই পাল্টে যায়
হোকনা সেটা পিতামাতার সম্ভ্রম।

বৃদ্ধ বাবা মায়ের সম্পদ বহু
সন্তানের মনে জমেছে লোভ,
মৃত্যুর পূর্বে লিখে দিতে হবে
নয়তো দেখায় মহাক্ষোভ।

বাবা মায়ের তবু একটিই কামনা
সুখে থাকুক তাদের খোকা,
সম্পদই তো লিখে দিতে হবে
তাদের সরল মন বড়ই বোকা।

সকল সম্পদ সন্তানকে লিখে দিয়ে
বাবা মা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে,
তাদের সন্তান বলবে না আর
বাবা মা কোনদিন যে মরে!

বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে তারা
হয়তো হয়েছে কঠিন রোগ,
সন্তানের মুখে একটিই কথা
চিকিৎসা নেই! করুক যন্ত্রণাভোগ।

জীবনের সূর্য অস্ত যাচ্ছে তাদের
সময়ও বেশি নেই হাতে,
কি হবে আর চিকিৎসা করে
মরুক দুজনেই একসাথে!

পিতামাতার নতুন নাম দিয়েছে সন্তান
নামটি নাকি বুড়ো-বুড়ি,
সন্তানের দেয়া অদ্ভুত নামের
কে মেলাবে জুড়ি?

দুঃখ বেড়ে যায় বাবা মায়ের
জল চলে আসে চোখের কোনে,
চিরচেনা পৃথিবীটা অচেনা লাগে
কতশত স্মৃতি পরে তাদের মনে।

পিতামাতার একটি কামনা আজও
থাকুক তাদের সন্তান সুখে,
মুখে তাদের ম্লান হাসি
হৃদয় ফেটে যাচ্ছে দুঃখে।

সন্তানের তৈরি রাজপ্রাসাদে
এখন যায়গার বড়ই অভাব,
অশীতিপর বাবা মায়ের ভাগ্য বিড়ম্বনায়
ধরণীও আজ নির্বাক।

সন্তানরুপি নরপশুর কাছে
বৃদ্ধ বাবা মা আজ বোঝা,
নিজে যেদিন বৃদ্ধ হবে
সেদিন হবে সন্তান সোজা।

পৃথিবী এক ভ্রমের রাজ্য
জীবনকে রঙ্গিন মনে হয়,
রঙ্গিনও ধিরে ধিরে মলিন হবে
মাফ পাবে না কোন নির্দয়।

হে সন্তানরুপী কলঙ্ক
মিথ্যা সুখে কিভাবে হবে সুখি?
জীবনের একমাত্র অবলম্বন বাবা মা
বাকি সব নিতান্তই মেকি।

বাবা মা সবচেয়ে বড় সম্পদ
কর তাদের যথাযোগ্য সম্মান,
শৈশবে তোমার যেমন প্রয়োজন ছিল
বৃদ্ধাবস্থায় তাদের তেমন প্রয়োজন।

বাবা মাকে যদি সম্মান দিতে না পার
তবে তুমি গোভাগারে গিয়ে মর,
দেখনা একবার বিপদে পরে
বাবা মা ছাড়া বাকিরা সব পরবে সরে।

বাবা মায়ের যত্ন ছাড়া
জীবনে পাবে শুধুই ধিক্কার,
পথে প্রান্তরে মৃত্যু হবে তোমার
করবে না কেউ সৎকার।

সময় থাকতে বদলে যাও
যদিও এ পাপ ক্ষমার অযোগ্য,
হইয়ো না মনুষ্যত্বহীন নর পিশাচ
হায়রে মহা অজ্ঞ।

0401 হাবিবুল বাশার সুমন
লোক প্রশাসন বিভাগ | জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়