fbpx

ডিসেম্বর ৫, ২০২৪

২৫ বছরে প্যাপাইরাস

“পঁচিশটি বছর গড়িয়েছে সবে,
পরিসংখ্যান কি সাহিত্য তবে?
না না, এ আমাদের প্যাপাইরাস,
মরুভূমির এক টুকরো সবুজ ঘাস”

দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অনলাইন ভিত্তিক একমাত্র মাসিক সাহিত্য পত্রিকা হলো “প্যাপাইরাস”। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে প্যাপাইরাস। এরপর নানা ধাক্কা সামলে বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্যাপাইরাস,এভাবে নানা গল্প সাথে করে ২০২৪ সনে এসে ২৫ বছরে পদার্পণ করলো প্যাপাইরাস। এ উপলক্ষে গত ২৭ অক্টোবর পরিসংখ্যান বিভাগে উৎযাপিত হয় “২৫ বছরে প্যাপাইরাস”- শিরোনামে প্যাপাইরাসের রজত জয়ন্তীর আনন্দ আয়োজন। একই সাথে ২০০৬ সালের পর পুনরায় প্যাপাইরাসের এক হার্ডকপির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক-মন্ডলী। শিক্ষার্থীদের সঞ্চালনা এবং পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি পূর্ণতা লাভ করে।

অনুষ্ঠানটির প্রথমেই প্রদর্শিত হয় একটি ভিডিওচিত্র, যাতে দেখানো হয় প্যাপাইরাসের ২৫ বছরের পথচলা ও ছোট কিছু গল্প। ভিডিওচিত্রের শেষে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করা হয় জুলাই বিপ্লবের শহীদদের। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কন্ঠে ধ্বনিত হয় “মুক্তির মন্দিরে সোপানো তলে” গানটি।

গানের শেষে বক্তব্য দেয়ার জন্য মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয় প্যাপাইরাসের উপদেষ্টা ও পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অধ্যাপক সায়েমা শারমিন ম্যাডামকে। সায়েমা শারমিন ম্যাডাম সকলকে তার সালাম জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি তার বক্তব্যে “প্যাপাইরাসের” নামকরণ নিয়ে একটি ছোট গল্প বলেন ও যাদের হাত ধরে প্যাপাইরাসের যাত্রা শুরু হয়,তাদের ধন্যবাদ জানান। একই সাথে তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান ও যারা প্যাপাইরাসের সাথে যুক্ত থেকে প্যাপাইরাসকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের ধন্যবাদ জানান। অতীতে প্যাপাইরাসের বিশেষ সংখ্যায় দু’বার লেখার কথা তিনি জানান, একই সাথে ভবিষ্যতে বিশেষ সংখ্যায় তিনি আবারও লিখবেন – এ আশা ব্যক্ত করেন।

পরবর্তীতে বক্তব্য দেবার জন্য মঞ্চে ডেকে নেয়া হয় পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মুরশীদা খানম ম্যামকে। বক্তব্যের শুরুতেই মুরশীদা খানম ম্যাম স্মরণ করেন পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান কাজী মোতাহার হোসেন চৌধুরীকে। তিনি তার বক্তব্যে সহ-শিক্ষা কার্যক্রম ও লেখালেখির গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরেন।তিনি জানান, হতাশা দূরীকরণে সুখ-দুঃখসহ জীবনের যেকোনো বিশেষ মুহূর্তকে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে লেখালেখির গুরুত্ব অসামান্য। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের লেখালেখির অভ্যাস গড়ে তুলতে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন। মাদার তেরেসার একটি উক্তি,
” Life is a beauty, enjoy it;
Life is a duty, complete it”- ব্যক্ত করে মুরশীদা খানম ম্যাম তার বক্তব্য শেষ করেন।

এরপর পরিসংখ্যান বিভাগের ৭২ ব্যাচের প্যাপাইরাসের নিয়মিত লেখিকা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয় ফারিহা রহমানকে। এরপরই শুরু হয় কুইজ পর্ব। কুইজ পর্বে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং কুইজে জয়ী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় পুরস্কার।পরবর্তীতে যেসকল শিক্ষার্থী প্যাপাইরাসের মোড়কের নকশা দিয়েছিলেন, তাদের পরিচয়সহ মোড়কের নকশা প্রদর্শিত হয় একটি ভিডিও চিত্রে।

এরপর পর্যায়ে পরিসংখ্যান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.জাফর আহমেদ খান স্যার ও অধ্যাপক সায়েমা শারমিন ম্যাডাম উন্মোচন করেন বহুল প্রতীক্ষিত প্যাপাইরাসের প্রথম হার্ডকপির মোড়ক। পুরস্কৃত করা হয় হার্ডকপির মোড়কের নকশাকারী দুজন শিক্ষার্থী শামায়েলা শেবন্তী এবং আরিয়া রহমান অরিষাকে।

অতঃপর মঞ্চে ডেকে নেয়া হয় প্যাপইরাসের সাথে যুক্ত পরিসংখ্যান ৬৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ সাবিত আল-সাবা রিয়ন ও উম্মে সালমাকে। তারা তাদের বক্তব্যে প্যাপাইরাসের প্রতি তাদের আবেগ -অনুভূতি তুলে ধরেন। একই সাথে তুলে ধরেন তাদের অনুভূতি, ব্যাচমেটদের সহযোগিতা, হার্ডকপি প্রকাশের জন্য তাদের প্রয়াস ও অভিজ্ঞতা । পাশাপাশি তুলে ধরেন অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য ৭১ ব্যাচের অক্লান্ত পরিশ্রম। তারা ধন্যবাদ জানান তাদের যারা প্যাপাইরাসের সাথে যুক্ত আছে এবং অনুষ্ঠানটি আয়োজনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। পরবর্তীতে ৭১তম ব্যাচের নুঝাত নাজিয়া এবং মো: মুহেব্বুল ইসলাম আয়োজক ব্যাচের পক্ষ হতে অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন। প্যাপাইরাস সম্পর্কে আরও বলেন পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাউফুন আরেফিন রুপককে। তিনি তার বক্তব্যে ধন্যবাদ জানান বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকমন্ডলীকে। হার্ডকপি প্রকাশের জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহ ও পরিশ্রমের কথা তিনি তুলে ধরেন। বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্যাপাইরাস আরো এগিয়ে যাবে -এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

অবশেষে বক্তব্য দেয়ার জন্য মঞ্চে ডেকে নেয়া হয় প্যাপাইরাসের সম্পাদক ও পরিসংখ্যান বিভাগের বর্তমান চেয়ার্ম্যান অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ খান স্যারকে। তিনি তার বক্তব্যে প্যাপাইরাসের ২৫ বছরের যাত্রা ও সম্পাদক হওয়ার ছোট কিছু গল্প তুলে ধরেন। একই সাথে হার্ডকপি প্রকাশের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। এছাড়াও প্যাপাইরাসের এ ২৫ বছরের যাত্রায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অবদান তুলে ধরেন। সবশেষে জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে রচিত তার একটি ছড়া শোনানোর মাধ্যমে চেয়ারপার্সন স্যার তার বক্তব্য শেষ করেন। এভাবে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক মন্ডলী ও শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এ আনন্দঘন আয়োজনের।

প্রতিবেদক
যারীন তাসনীম অনন্যা (সেশন: ২০২২-২৩)
কাজী শাফিন আলম (সেশন: ২০২২-২৩)
ইসরাত জাহান নাফিছা (সেশন: ২০২১-২২)