অচেনা এই শহরে আমার বর্তমান ঠিকানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ। যেখানে সাক্ষী হয়ে গেলাম এক অসাধারণ উৎসবের। যেই উৎসবের উপলক্ষটাও ছিলাম আমরাই, বিভাগের ৭৩তম ব্যাচ। “৭৩ বরণে ৭০” শিরোনামে ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ তারিখে আয়োজিত হয়ে গেল বিভাগের নবাগত ৭৩তম ব্যাচ এর নবীনবরণ অনুষ্ঠান। যেখানে মধ্যমণি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং উপাচার্য মহোদয়। বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকগণ, কর্মচারীবৃন্দ এবং বর্তমান সকল শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সকাল থেকেই মুখর করে তুলেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তন। ফর্মাল অংশে অমূল্য কিছু উপদেশ এর পাশাপাশি, শুনেছি স্যারদের জীবনে ঘটে যাওয়া মজার সব ঘটনা। অধীর আগ্রহে সবাই অপেক্ষায় ছিল উপাচার্য মহোদয়ের মূল্যবান বক্তব্যের জন্য। স্যার এর বক্তব্যের শেষে আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান মহোদয়ের বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশের।
দুপুরের ভোজনের পরে শুরু হলো আমাদের প্রবল আগ্রহের স্টেজ পারফর্মেন্সের অংশ। যেখানে নিজেদের প্রতিভার মাধ্যমে সরব উপস্থিতি ছিল সব ব্যাচের। নবীন ব্যাচের সরব অংশগ্রহণ আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছিল অনুষ্ঠানকে। নাটক, নাচ বা গান সর্বত্রই আমাদের উপস্থিতি ছিল। বেঁচে থাকার গান, বন্দে মায়া লাগাইসে কিংবা ভবের পাগল প্রত্যেকটি গান মঞ্চ মাতিয়ে তুলেছিল।
কালজয়ী গান হে সখা, ভালোবেসে সখী এর মতো গানের পাশাপাশি উপভোগ করেছি কালজয়ী কিছু ব্যান্ড সঙ্গীতের। আর সাথে ছিল অসাধারণ কিছু নাচের পরিবেশনা।
তবে দর্শকদের নজর কেড়ে নিয়েছিলো বিশেষ একটি পরিবেশনা, “মিউজিক্যাল ড্রামা। আরেকটি বিশেষ পরিবেশনা নাটক ‘প্রেমের সমাধি’ পেয়েছিল অগণিত হাততালি। সমাজের বাস্তবমুখী বিভিন্ন চিত্র অভিনয়ের মাধ্যমে এত সুন্দর ফুটিয়ে তোলা নিঃসন্দেহে বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে।
সবার উপস্থিতির মাঝেও আলাদা ভাবে বলতেই হয় ৬৯তম ব্যাচের কথা। গানের ক্ষেত্রে আলাদা খ্যাতি থাকলেও ভাই-আপুদের অসাধারণ নাচের প্রদর্শনী অবাক করেছে।
শুনেছিলাম প্রতিবছর নবীনবরণের অন্যতম আকর্ষণ থাকে “Stat got Talent”। এবার নিজেও হয়েছি সেই বিশেষ পরিবেশনার অংশ। স্মৃতির পাতায় বিশেষভাবে থেকে যাবে এই স্মৃতি।
৭০তম ব্যাচ এর ভাই-আপুদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই অসাধারণ এই দিনটির সাক্ষী হতে পেরেছি আমরা। সযত্নে থেকে যাবে তাদের দেওয়া উপহার এবং অম্লান স্মৃতি। তাদের নিকট ৭৩ ব্যাচ কৃতজ্ঞ।
বসন্তের নতুন সাজে সেজে থাকা প্রকৃতি তো সকলেরই প্রিয়। আড়ালে থেকে যায় পুরোনো পাতাগুলোর প্রস্থানের করুণ গল্প। আমাদের বরণ এর পাশাপাশি, ৬৮তম ব্যাচ এর বিদায়ও ছিল একটি উপলক্ষ। অগণিত স্মৃতি ফেলে রেখে তাদের ছেড়ে যেতে হচ্ছে এই পরিসংখ্যান বিভাগ। বিদায় মুহূর্তে এক আবেগঘন পরিবেশ এর সাক্ষী হয়েছি। অনেকে চোখের পানি আটকাতে পারেনি। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট কামনা করি আমাদের অগ্রজদের সফলতা। আমরা আজ নবীন। একদিন আমাদেরও এভাবেই চোখের জলে বিদায় নিতে হবে। তবে তার আগে আরো অনেক স্মৃতি তৈরী করে রেখে যেতে চাই। বিদায়ের দিনে যেন সেগুলোই স্মৃতিচারণ করে গাইতে পারি,
“মোরা ভোরের আলোয় ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়…
বাজিয়ে বাঁশি, গান গেয়েছি বকুলের তলায় …”
- মাহিম আহমেদ শাবাবhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%a6-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac/বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
- মাহিম আহমেদ শাবাবhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%a6-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac/রবিবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫