এপ্রিল ২৭, ২০২৫

ক্ষণিকের অনুভূতি

তার সাথে আমার দেখা হয়েছিল,
কোনো এক চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে।
আমি আমার খেয়ালে ছিলাম দাঁড়িয়ে,
বাসস্টপের ছাউনিতে, খুব বিরক্ত হয়ে।

হঠাৎ দেখি!
ঠিক মিটার দুই দূরত্বে, কি মিষ্টি একটা মেয়ে!
বয়স পড়বে হয়তো তিন কি চার।
তার পাশের বালতিটা ভর্তি গোলাপে,
গোলাপের পাশে যেন আরও একটা গোলাপ সে।

যে গোলাপের রঙ লাল, গোলাপি, সাদা, হলুদ নয়,
যে গোলাপের গায়ে ধুলো-ময়লায় মাখামাখি,
যে গোলাপ মানুষের ভালোবাসা নয়, যত্ন নয়,
বরং তাচ্ছিল্যই পেয়েছে বেশি।

তার জামার সাদা রঙটা ধুলোর ধূসরতায় মিশেছে,
পৃথিবীর সমস্ত স্নিগ্ধতা যেন তার ওই মুখখানি জুড়িয়েছে।
ঢের এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে, আমারই দিকে!!

আমাদের আলাপ হয়েছে অনেক, কিন্তু কথা হয়নি কোনো;
তার মলিন চোখ দুটো যেন একটা উপন্যাস পুরো।
স্বল্পক্ষণের আলাপে, অভিযোগের লম্বা তালিকায়
তুমি, আমি, আমরা সক্কলে!
সভ্য সমাজে যাদের বাস, সেই আমরা।

হঠাৎ পাশ থেকে ধাক্কায় হুশ ফিরল।
বাস এসে গেছে, তড়িঘড়ি করে বাসে উঠে,
ক্লান্ত শরীরে ঝিমিয়ে গেলাম।
ভুলে গেলাম ওর চোখ দুটি,
যেই মলিন চোখ দুটি আমাকে ভাবিয়েছিল।
কিন্তু এই ভাবনারা উড়ে যায়,
আর উড়ে যায় বলেই আমরা আবারও
জীবনের স্বাভাবিক নিয়মে চলতে পারি,
নয়তো মানসিক ভারসাম্য হারাতাম।

ওদের কথা আমরা আসলেই খুব সহজে ভুলে যাই।

আচমকা ঘুম ভাঙল, হাঁপিয়ে উঠে বসলাম।
সামনের দেয়ালে থোরিয়াম কাটার ঘড়িটায়
সময় তখন রাত তিনটা বেজে তেরো মিনিট।
আর—“সেই চোখ দুটি”।

0111 মাহবুবা মিতু new writer
শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়