জুলাই ১০, ২০২৫

সম্পাদকীয় – মার্চ ২০২৫

ধর্ষণের শিকার আট বছরের নিষ্পাপ মেয়েটি সত্যিই কি এখনও সি.এম.এইচ.-এ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে? নাকি আর কোনো আশা নেই জেনেও নতুন করে তীব্র জনরোষের ভয়ে ডাক্তার লাইফ সাপোর্ট খুলছে না? ঈদের ছুটিতে ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি চলে গেলে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হবে?

আসুন আমরা দোয়া/প্রার্থনা করি, সৃষ্টিকর্তা যেন এই অভাগা শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন।

আসুন, এমন একটি ভয়াবহ ঘটনার পরে ‘মেয়েদের কেমনভাবে চলা উচিত’ এই আলোচনা থেকে আমরা বিরত থাকি। আমরা খেয়াল রাখতে চেষ্টা করি, এদেশে বোরকা-না-পরা মেয়ে যেমন ধর্ষিতা হয়েছে, বোরকা-পরা মেয়েও ধর্ষিতা হয়েছে। একা চলার সময় মেয়ে যেমন ধর্ষিতা হয়েছে, স্বামীর সাথে বেড়ানোর সময়ও স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এমনকি মাদ্রাসায় পড়া ছেলেও ধর্ষিত হয়েছে। তাই, বিকৃত মানসিকতার অধিকারী ধর্ষকের পক্ষে যায়, এমন কোনো কথা আমরা না বলি।

আইন উপদেষ্টা ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় অর্ধেকে নামিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছেন – তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হবে, আর বিচার শেষ করা হবে ৯০ দিনের মধ্যে। এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ, কিন্তু অন্যান্য আইনের মতো এক্ষেত্রেও একটি ‘ফাঁকি’ থেকে যাচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে ব্যর্থ হলে, বা বিচারক ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকার্য শেষ না করলে কি তার/তাদের শাস্তির কোনো বিধান থাকবে? যেমন, প্রতি ১ দিন দেরির জন্য ১ দিনের বেতন কাটা যাবে, বা এমন কিছু? নাকি দেরি হবার একটি ‘যুক্তিসংগত’ কারণ দেখিয়ে তারা পার পেয়ে যাবে? তাহলে আইন করে লাভ কী?

আসুন, আছিয়ার জন্যে আমরা আবার দোয়া করি – একবার, দুবার, বার বার।

পুনশ্চঃ সম্পাদকীয়টি আছিয়া মৃত্যুবরণের আগে লিখা হয়েছিল। তার মৃত্যুতে প্যাপাইরাস পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।

IMG 6678

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ১৯৮৩ - ৮৪

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ