মে ১৩, ২০২৫

ফুলের খিলি

অপু ও স্নিগ্ধ একই কলেজে পড়ে। দুইজন দুইজনকে চিনলেও কখনো সামনা-সামনি কথা হয়নি। তবে মাঝে মাঝে সোশাল মিডিয়ায় কথা হতো তাদের। এমনি একদিন…

250502

অপু: এই কি সুন্দর একটা কনসেপ্ট, আগে কখনো দেখিনি এমন! কি সুন্দর 😍

স্নিগ্ধ: এটা পানের খিলির মতো ফুলের খিলি..🤭

অপু: 😇🍁

স্নিগ্ধ: কিন্তু পবিত্র আত্মার কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না এই খিলি দেওয়ার মতো…

অপু: মানুষ এক জন্মের সময় সবচেয়ে পবিত্র আত্মা নিয়ে আসে… তাতে সময়ে সময়ে ধুলো জমে… বৃষ্টি হয়ে আবার মাঝে মাঝে সমস্ত ধুলো ধুয়ে দেয়… স্নিগ্ধ তুমি সেই বৃষ্টি হও… যে কিনা ধুলো মুছে পবিত্র করে নিবে কাউকে🌼

স্নিগ্ধ: আরেহ, সাংঘাতিক লিখা😳

আসে কই থেকে?

অপু: জানি না, এক তোমাকেই কোন কথায় এগুলা বলা হয় আমার, আমি না সাহিত্যিক না কাব্যিক ..

স্নিগ্ধ: সুন্দর বলেন তো অনেক, লিখতে পারেন কিন্তু…

অপু: চলো না একটা গল্পের খেলা করি। আমি কিছু লাইন লিখবো এরপরের লাইনগুলো তুমি লিখবে, এভাবে আমরা একটি গল্প লিখে ফেলবো🤭 কেমন হবে!

স্নিগ্ধ: কিন্তু আমি যে পারি না… কি লিখবো বলেন দেখি🙂

অপু: ইশ পারে না!! শুরু তো করি, দেখা যাক না কি হয়😉

স্নিগ্ধ: আচ্ছা আপনিই প্রথমে বলুন তাহলে …

অপু: আচ্ছা।

কালো মেঘে আকাশ ডেকে একাকার… মনে হচ্ছে আজ ভীষণ অভিমান তার…. অভিমান আর হয়তো সহ্য করতে পারবে না এতটাই প্রবল হয়েছে, কখন যেন কান্না হয়ে যাবে যাবে অবস্থা…

স্নিগ্ধ: কালোর আবছানির মধ্যেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে… ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি.. ওই দূরে এটা কে!! এমন কাক ভিজা ভিজতেসে… জ্বর টর এলে বুঝবে তখন…

অপু: আকাশের অভিমানে আজ আমিও সামিল হয়েছি… আমি দু হাত তুলে আকাশের দিকে চেয়েছিলাম… হঠাৎ আকাশ তার অভিমানের ঘনঘটা কাটিয়ে কান্না হয়ে ভাসিয়ে দিলো… সাথে আমার সকল মন খারাপের কারনগুলোকেও…

স্নিগ্ধ: আরেহ এই ছেলেটা পাগল নাকি!! এত ভিজে কেউ! (একটু ভেবে মনে মনে বলছে.. ছেলেটা যেন বৃষ্টিকে আলিঙ্গন করছে… তার ভীতরে জমে থাকা সব অভিমান, দুঃখ ও বৃষ্টিতে মিশিয়ে দিচ্ছে…) এতক্ষণ দূর থেকে দেখছিলাম তাকে… হঠাৎ চেয়ে দেখি ও আমার দিকেই তাকিয়ে… কিছুক্ষণ পর জোড়ে বললো ছাতা নিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করা যায় না কিন্তু!!! আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম… আবার শুনতে পেলাম কি হলো ভিজবে না!

অপু: কাক ভেজা অপু দাঁড়িয়ে দু-হাত ছড়িয়ে দিয়ে ভিজতেই আছে… আজ জ্বর ঠান্ডা লাগলেও সে ভিজবে… বৃষ্টির মধ্যে এক অদৃশ্য ঔষধি গুণ আছে… কিভাবে যেন এক মুহূর্তে মন খারাপ ভালো করে দেয়… হয়তো সে যেমন কান্না হয়ে ঝড়ে যায় তেমনি সেই কান্না দিয়েই আমার সব মন খারাপের কারন গুলোকেও ধুয়ে মুছে দিচ্ছে…

স্নিগ্ধ: একটা দোটানা কাজ করছে… আমার কি যাওয়া ঠিক হবে!! এমনিতেই জ্বর ঠান্ডা মাথাব্যথার সমস্যা… পরক্ষণেই মনে হলো, না যাই না একবার… আর কোন চিন্তা না করে ছাতা ফেলে নেমে গেলো বৃষ্টির মাঝে…

অপু: সেই কখন থেকে ডাকছি… এতক্ষণে তাহলে মহাশয়ার সায় হলো!!

স্নিগ্ধ: আমার বৃষ্টির পানিতে সমস্যা…

অপু: তাহলে এইযে আমার সামনে তুমি, বৃষ্টি কিন্তু তোমাকেও কাক ভেজা করে ছাড়বে। তাহলে আসলে কেনো!!

স্নিগ্ধ: এক অদৃশ্য শক্তি আমাকে যেন টানছিলো বারবার… শেষ পর্যন্ত আর উপেক্ষা করতে পারিনি..

অপু: কি সেই অদৃশ্য শক্তি! জানা আছে?

স্নিগ্ধ: জানি না আমি… কিন্তু আমার হঠাৎ করে খুব ভিজতে ইচ্ছে করলো আপনার সাথে….

অপু: জানো স্নিগ্ধ বৃষ্টি আসলে একরকম ঔষধ… মনের ঔষধ… ঔষধ বেশি খেলে যেমন সমস্যা হয় আবার দরকারের সময় না খেলেও সমস্যা হয়…

স্নিগ্ধ: স্নিগ্ধ লিখতে লিখতে কল্পনার জগতে চলে গেলো… আসলেই সে যেন বৃষ্টিতে ভিজতেসে… সে এখন অপুর সামনে দাঁড়িয়ে… দুইজনেই কাকভেজা হয়ে আছে… বৃষ্টি যেনো আরো জোড়ে নেমেছে…তারা দুইজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে… এই বৃষ্টি অসুখ নিয়ে আসে না, অসুখে সুখ নিয়ে আসে…

আচ্ছা স্নিগ্ধ কি পরে কাউকে ফুলের খিলিটা দিয়েছিল? নাকি সেই মানুষটা অপুই ছিল যার জন্য এত দীর্ঘ অপেক্ষা ছিলো… অপেক্ষার প্রহর কি শেষ হয়েছে!