ধ্যাত!
ঘুরেফিরে একই দিনের পুনরাবৃত্তি!
এই ভার্সিটিতে যাও, ক্লাস কর, হোমওয়ার্ক কর, এসাইনমেন্ট কর, প্রেজেন্টেশন রেডি কর, নোট কর, পরীক্ষা দাও, টিউশনি কর, ইত্যাদি বহু বেড়াজাল, নিজেকে বিশ্রাম দেওয়ার সময় তো নেই-ই, অন্যকিছু নিয়ে ভাববার অবকাশটুকুই বা কোথায়?
জীবন থেকে ডিসেম্বর, কোনো কাজ না থাকার মানসিক তৃপ্তি চলে গেছে বহুদূর; হয়তো পাড়ি জমিয়েছে চিরস্থায়ী, চিরস্তব্ধ কোনো অচেনা গন্তব্যে, যা আমাকে জানানো হয়নি। এই বিচ্ছেদে হৃদয় গহ্বর ফাটলে চৌচির হলেও মানিয়ে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছি প্রতিনিয়ত।
তবে…
একটি দিন আমাকে এখনো ছেড়ে যায়নি, সেই স্কুলজীবন থেকে আমার নিত্যসঙ্গী, ঠিক যেমন গাছ ও গাছের পাতা, তরকারি ও লবণ।
সে আমার সাথে গাদ্দারি করেনি কখনও। সাধ্যমতো আমার ফুরসত ও অবকাশের মুহূর্তগুলোকে রঙিন থেকে রঙিনতর করে তুলেছে, তুলছে এবং হয়তো আগামী দিনগুলোতেও রঙিনতম করে তুলবে!
আমি ইচ্ছে করেই টাইটেলে দিনটির পরিচয় তুলে ধরিনি, তবে চিন্তা করবেন না হে পাঠকবৃন্দ,
লেখা শেষ হলে পরিচয় প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ করবো না!
তো যেটা বলছিলাম –
যেহেতু এই দিনটিতে অফিসিয়াল কোনো ডিউটি নেই টিউশন ছাড়া(এটাও অফিসিয়াল হতো না, আমি বানিয়েছি বলে অফিসিয়াল), সেহেতু এই দিনটিকে আমি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই আমার চাহিদামতো ব্যবহার করতে পারি, বলেন তো কীভাবে?
আমিই বলছি –
এই যেমন ধরেন, ভালো লাগছে না তো লাগা ঘুরাঘুরি, কোনো কিছু করতে ইচ্ছে করছে না তো লাগা ঘুম(ডিউরেশনবিহীন), একা একা লাগছে তো লাগা “দোস্ত, চল চা খেতে যাই, খোশগপ্প করি।”
বাসার খাবার একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে তো টিউশনির টাকা দিয়ে লাগা “আজকে খাওয়া যাক বাইরে।”
যদি বৃষ্টি হয় এইদিনে, তাহলে তো কথাই নেই। লাগা খিচুড়ি-ডিমভাজি-ভর্তা! বিকেলে লাগা ‘গলা ছেড়ে গান’, শিরোনামহীন, বাগধারা, কাকতাল, অড সিগনেচার, অনুপম কোনোটা যাতে বাদ না যায়!
আমার মতো মুভিখোরদের জন্য তো এই দিনটি একটা ব্লেসিং!
মানি হেইস্ট, স্কুইড গেম এর পরবর্তী সিজন বাকি আছে তো লাগা ‘নেটফ্লিক্স’!
আমার মতো বইপোকা দের জন্য এই দিনটি সুখের দূত! প্যারাডক্সিকাল সাজিদ, মেটামরফিক নিশীথে, মায়াস্বর্গ, শাপ মোচন সহ যেকোনো অন্তরস্পর্শী ঘটনাবহুল কাহিনী এক বসায় শেষ করে ফেলা যায়!
‘শুক্রবার’ পবিত্র ও স্বস্তির হলেও ঘর দুয়ার গোছানোর ঝামেলা তো পোহাতেই হয়! জুমার তাড়া তো আছেই!
কারণ বুয়া খালারাও এইদিন ফাঁকফোকর বের করে নেয়, কর্মস্থলে ফাঁকি দিয়ে স্বর্গীয় সুখ অনুভব করে, ফলে আমাকে করতে হয় ধনেপাতা বাছা, মরিচ বাছা, শাক বাছার মতো কাজ!
অবশ্য আম্মুকে হেল্প করার মধ্যে আলাদা আনন্দ পাওয়া যায় ঠিকই, জুমার দিন অবশ্যই পবিত্র ও বরকতময়, কিন্তু তবুও ওইযে এতক্ষণ মনের চাহিদাগুলো পূরণের কথা বললাম;
সেটা শুক্রবারে পাওয়া দুষ্কর!
অন্তত আমার কাছে তা ই মনে হয়!
আমাকে চিনেছেন তো?
আরে আমি আপনাদের ডিপার্টমেন্টেই পড়ি, আপনাদের ক্লাসমেট, নাম জাওয়াদুল করিম মুশফিক(ছদ্মনাম)!
এখনো চিনেন নি? সমস্যা নেই, দিনখানির প্রতি আমার এই ভাবাবেগ আপনার সাথে যদি মিলে যায়, তাহলেই আপনি আমাকে চিনেছেন!
হ্যাঁ সত্যিই চিনতে পেরেছেন।
অনেক কথা বলে ফেললাম!
জয়তু “শনিবার”
- শাহ মোঃ মোফাজ্জল হোসেনhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%83-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%a8/বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
- শাহ মোঃ মোফাজ্জল হোসেনhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%83-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%a8/রবিবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫