fbpx

‘প্যাপাইরাস’ পত্রিকাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর পরিসংখ্যান বিভাগ-এর শিক্ষার্থীদের একটি বিশেষ আবেগের কেন্দ্রবিন্দু। এর মাধ্যমে পরিসংখ্যান বিভাগ সংশ্লিষ্ট সবাই তাঁদের মনের ভাবাবেগ, অনুভূতি, স্বপ্ন, ধারণা, জ্ঞান প্রভৃতি চর্চার প্রয়াস পান। ‘প্যাপাইরাস’ পত্রিকাটি পরিসংখ্যান বিভাগ-এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সকলের; এটি কোন বিশেষ ধারণাপুষ্ট বা নীতি-আদর্শের বশবর্তী হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকাশনা নয়৷ শুরুতে পত্রিকাটির নাম ছিল ‘প্যাপিরাস’, পরবর্তীতে এর নাম সঠিক উচ্চারণে ‘প্যাপাইরাস’ হিসেবে পরিবর্তন করা হয়৷

    ‌    ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যায় শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান শিবলী-এর লেখা সম্পাদকীয় থেকে ধারণা করা যায় যে, পত্রিকাটির জন্ম ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে কোন এক সময়ে৷ এক্ষেত্রে এ ধরনের একটি পত্রিকা বিভাগের শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রকাশের ধারণাটি প্রথম যার মাথায় আসে তিনি হচ্ছেন শিক্ষার্থী দেলোয়ার জাহান চৌধুরী (আপেল)৷ দেলোয়ার জাহান চৌধুরী এফএইচ হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন৷ সে সময়ে তার ধারণা থেকেই অন্যান্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দের প্রচেষ্টায় পত্রিকাটি জন্ম নেয় ‘প্যাপিরাস’ নামে৷

    ‌    পত্রিকাটির নামকরনের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা প্রয়োজন। কাগজ-এর পূর্ব ইতিহাস যারা জানেন তারা সবাই ‘প্যাপিরাস’ নামটির সাথে সুপরিচিত৷ কাগজ আবিষ্কারের পূর্বে মানবজাতির মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ছিল ‘প্যাপিরাস’ নামক গাছ থেকে তৈরি লেখার উপকরণ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে অধ্যয়নরত ‘ছাত্র-ছাত্রীদের যাবতীয় সুখ দুঃখের পাঁচালী’ জানাতেই পত্রিকাটির নাম রাখা হয় ‘প্যাপিরাস’৷ এই নামকরণে যার নাম সর্বাগ্রে স্মরণযোগ্য তিনি হচ্ছেন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এম. এ. জলিল৷ পত্রিকাটির প্রথম প্রকাশিত সংখ্যায় শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান শিবলী প্রধান সম্পাদক হিসেবে, দেলোয়ার জাহান চৌধুরী (আপেল) ও সৈয়দ ইমরান কবির (মিনার) সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন; এছাড়াও ছিলেন আহমেদ হোসেইন (রতন) ও জাহাঙ্গীর কবির (নিশান)৷

    ‌    পত্রিকাটি সেসময় ত্রৈমাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছিলো৷ প্রকাশনা অনিয়মিত হওয়ায় পত্রিকাটির পঞ্চম সংখ্যা থেকে এটি ষান্মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং পরবর্তীতে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম সংখ্যাটি ষান্মাসিক সংখ্যা হিসেবেই প্রকাশিত হয়৷ পত্রিকাটির তৃতীয় সংখ্যায় (২০০০ সালে) এর সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন জাহাঙ্গীর কবির (নিশান)৷ পত্রিকার পরবর্তী সংখ‍্যা অর্থাৎ চতুর্থ সংখ্যায় জাহাঙ্গীর কবির (নিশান) সম্পাদক হিসেবে এবং কাজী আজাদ-উজ্-জামান ও রোকনুজ্জামান সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

    ‌    ‘প্যাপিরাস’ এর পঞ্চম সংখ‍্যা থেকে ১৯৯৯-২০০০ ব্যাচ (স্নাতক ২০০৩ ব্যাচ) ‘প্যাপিরাস’ এর পুরো দায়িত্ব গ্রহণ করে। বিভাগের এ ব্যাচ এর দায়িত্বেই পত্রিকাটির পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। এ সংখ‍্যাগুলোতে সহযোগিতায় ছিলেন একই ব্যাচের মোঃ আব্দুর রহমান খান জেনাস, জিনাত আমান বন‍্যা, সৈয়দা শারমিন জাহান, মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মোঃ আসাদুর রহমান। এছাড়া অগ্রজ ব্যাচ থেকে ছিলেন সাউভিয়া ইসলাম উর্মি, দেলোয়ার জাহান চৌধুরী (আপেল) ও জাহাঙ্গীর কবির (নিশান)।

    ‌    পত্রিকার প্রকাশনা, ব‍্যয় ও বিক্রি এ সকল বিষয়ে আরো একজন ব‍্যক্তির অকুণ্ঠ সমর্থন ও সার্বিক সহযোগিতা ছিলো। তিনি হচ্ছেন অধ‍্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান যিনি বর্তমানে বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অধ‍্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান এর প্রচেষ্টা এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় পত্রিকাটি একসময় বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এটা ২০০৪ সালের কথা। ড. মতিউর রহমান পত্রিকাটির প্রকাশনা ব‍্যয় বহনের জন্য বিভাগ থেকে অর্থায়ন করার বিষয়ে সম্মত হন এবং প‍্যাপিরাসের সপ্তম সংখ‍্যা (জানুয়ারি-জুন, ২০০৪) বিভাগের খরচে প্রকাশিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, সপ্তম সংখ‍্যার পর সে সময়ে পত্রিকাটির আর কোনো সংখ‍্যা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে পরিসংখ্যান বিভাগ-এর প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প‍্যাপিরাস পত্রিকাটি পুনরায় প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া যায় কি না সে বিষয়ে বিভাগের তৎকালীন শিক্ষার্থীদের কাছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের থেকে একটা প্রস্তাব রাখা হয়। এ প্রস্তাবে তৎকালীন শিক্ষার্থী মোঃ আতিকুল হক চৌধুরী (শ‍্যামল) পত্রিকাটি পুনঃ প্রকাশের কিছু উদ্যোগ গ্রহণের প্রচেষ্টা নেন, কিন্তু তা সফল হয়নি।

        ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি কাজী মোতাহার হোসেন ভবন প্রাঙ্গণে পরিসংখ্যান বিভাগ-এর অ‍্যালামনাই এসোসিয়েশন DUSDAA এর দ্বিতীয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষে তৎকালীন বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ‍্যাপক খালেদা বানুকে ‘প্যাপিরাস’ পত্রিকাটি পুনরায় প্রকাশের ব‍্যবস্থা গ্রহণ করতে স্নাতক ২০০৩ ব্যাচ এর পক্ষ থেক অনুরোধ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে বিভাগের একাডেমিক কমিটির ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখের সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ‘প্যাপিরাস’ পুনরায় প্রকাশ করা হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান শিক্ষার্থীরাই প্রকাশনার দায়িত্বে থাকবেন এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা পত্রিকার ব‍্যয় বহন করবেন। পত্রিকা প্রকাশের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয় বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মোঃ এরশাদুল হককে। এ সকল নির্দেশনা সংক্রান্ত পত্রটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খালেদা বানু ০১ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে প্রায় ১ বছর পর ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভায় প‍্যাপিরাস পত্রিকার সম্পাদনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ খান এর নাম অনুমোদন করা হয়। এক‌ই সভায় প‍্যাপিরাস পত্রিকার জন্য একটি নীতিমালাও অনুমোদন করা হয়। এ সিদ্ধান্ত অবহিত করে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খালেদা বানু স্বাক্ষরিত একটি পত্র অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ খানকে ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ তারিখে প্রেরণ করা হয়।

         এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পত্রিকাটি প্রকাশের নবদ্বার উন্মোচিত হয়। ইতিমধ্যে পত্রিকার সম্পাদনা পর্ষদ পত্রিকার নামের উচ্চারণ সঠিকভাবে ব্যবহার করার লক্ষ্যে এর নাম বাংলায় ‘প্যাপাইরাস’ হিসেবে উল্লেখ করার বিষয়ে একমত হন। ফলে সম্পূর্ণ বাংলা পত্রিকা হিসেবে ‘প্যাপাইরাস’-ই পরিসংখ্যান বিভাগের সর্বকালের শিক্ষার্থীদের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়। পত্রিকাটির পুনঃ প্রকাশের উদ‍্যোগের বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খালেদা বানু ও অধ‍্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান এর নাম উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও স্নাতক ২০০৩ ব্যাচের মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন, মোঃ মোতাহার হোসেন রঞ্জু, আরিফ আল মামুন, সৈয়দা শারমিন জাহান (পল্লবী) ও রেশমা জেসমিন ইভা এর সহযোগিতা স্মরণীয়।

    ‌    এ দফায় পত্রিকাটির দুইটি সংখ্যা প্রকাশিত হয় – জানুয়ারি ২০১৫ এবং জুলাই ২০১৫। এর মধ্যে জুলাই ২০১৫ সংখ্যাটি ছিল বিশেষ সংখ্যা ‘বর্ষা সংখ্যা’। এ সংখ্যাগুলো প্রকাশের সময় শিক্ষার্থী তোফায়েল, রায়হান, সাকিব ও অনুপ এর উদ্যম ও সহযোগিতা স্মরণীয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে পত্রিকাটি আবারও বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিন বছরের বেশি সময় পর বর্তমান শিক্ষার্থীরা পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণ প্রকাশ করে নতুন করে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করছে। এটি এখন থেকে পুরোপুরি বিভাগের মুখপত্র হিসেবে বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশ হচ্ছে।

477 Converted 02 e1555767108650
Papyrus 1st Edition
Papyrus 5th Edition July 2002
Papyrus 6th Edition January 2003
Papyrus 7th edition January 2004
Papyrus January 2015
Papyrus July 2015
PBLTJD1