fbpx

রক্ত গোলাপ

রাস্তায় এলোমেলো ভাবে হাঁটছি । কেন হাঁটছি এভাবে! বুঝতে পারলাম না । হঠাৎ মনে পড়লো আর তখনই মনটা প্রচন্ড খারাপ হয়ে গেলো। যেন কোন কিছু আমাকে গ্রাস করছে।

তো এভাবেই পৌঁছে গেলাম কলেজে।

কীরে নিহি মন খারাপ কেন তোর কী হয়েছে? গতকাল ও কলেজে আসলি না আবার আজও এভাবে মনমরা হয়ে বসে আছিস?

কিছু না সাথী এমনিতেই।

এমনিতেই কারো মন খারাপ হয় নাকি! এমনিতে মন খারাপ করার মতো মেয়ে তো তুই না। নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে।

তা কী হয়েছে বল না।

গতকাল একটা এক্সিডেন্ট দেখেছিলাম।

কী বলিস! কোথায়?

গতকাল কলেজে আসার সময় রাস্তা পার হওয়ার জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলাম । এমন সময় একজন বৃদ্ধলোক রাস্তা পার হচ্ছিলেন।  তিনি আমার কিছুটা সামনেই ছিলেন। হঠাৎ…..

হঠাৎ কী হলো বল!              

হঠাৎ-ই একটি গাড়ি লোকটিকে  জোরে ধাক্কা দিল আর গাড়ীর ধাক্কায় লোকটি ছিটকে রাস্তার মাঝে পড়ে গেলো।

সাথী অস্থির হয়ে প্রশ্ন করলো বলিস কী!  তারপর?

গাড়ীটি তখনো থামেনি লোকটির উপর দিয়েই গাড়ী চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেলো ড্রাইভার। ঘটনাটা মুহূর্তের মধ্যেই আমার চোখের সামনে ঘটে গেলো। আমার আশেপাশের লোকজন ছুটে গেল।আমি ফুটপাত থেকেই দেখলাম সারা রাস্তা রক্তে ভরে যাচ্ছে। এটা দেখেই আমার হাত পা গুলিয়ে আসছিল। আমি আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। আমার কানে আসছিল যে কয়েকজন বলছে মাথাটা নাকি থেতলে গেছে।

উঃ নিহি, কি বীভৎস ঘটনা!

দেখ সাথী, আজ সেই লোকটার জায়গায় তো আমিও থাকতে পারতাম, ঘটনাটা তো আমার সাথেও ঘটতে পারতো ,তাইনা বল? আমি আসলে কিছুতেই ঠিক থাকতে পারছি না।

 হুম বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা এরপর তুই কী করলি? বাসায় কি ঠিকভাবে যেতে পেরেছিলি?

হ্যাঁ, ওখানে আমার প্রতিবেশী একজন আংকেল ছিলেন। আমার খারাপ লাগছে দেখতে পেয়ে উনি আমাকে বাসায় পৌঁছে যেতে সাহায্য করেন। আসলে তখন কলেজে আসার মতো অবস্থায় ছিলাম না এবং আসলে আজও আসতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না।

সেটাই কি মর্মান্তিক! আসলে যে মারা যায় সে এবং তার পরিবারের লোকেরাই বুঝতে পারে যে কতটা কষ্ট! এই নিহি তোকে কিন্ত আজও ঠিক লাগছেনা। আমারো মনটা খারাপ করে দিলি। থাক আজ আর ক্লাস করে কাজ নেই।

আমি স্তব্ধ হয়ে চুপ করেই বসে রইলাম।

সাথী মনে মনে ভাবলো, ওর মনটা ঠিক করা দরকার। ওকে বরং আমাদের কলেজের বাগানটায় নিয়ে যাই সেখানে ওর প্রিয় ফুল ফুটেছে তা দেখলে হয়তো ওর মন কিছুটা হলেও ভালো হবে। এরপর ওকে আজ আমি বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসব।

সাথী বললো, এই জানিস আমাদের কলেজের বাগানে যে নতুন ফুল গাছ টা লাগানো হয়েছে তাতে অনেক সুন্দর ফুল ফুটেছে, চল দেখে আসি।  তোর তো অনেক অপেক্ষা ছিল ফুলের জন্য । চল ঘুরে আসলে তোর মনটাও ভালো হয়ে যাবে।

ও প্রায় জোর করেই বাগানে নিয়ে গেল।বাগানে গিয়ে দেখি অনেক ফুল ফুটে আছে কিন্ত আমার চোখ একদিকেই। আর তা হলো একটি গাছে ফুটন্ত সাদাগোলাপ। মনটা মুহূর্তের মধ্যেই কিছুটা ভালো হয়ে গেলো। যেন গোলাপটা আমার সব খারাপ লাগাকে দূরে সরিয়ে সেখানে সুখের এক অপূর্ব  পরশ ছড়িয়ে দিয়েছে।

এরপর বেশ কয়েকদিন পরের কথা, কলেজ থেকে বাসায় যাচ্ছি। রাস্তার ধারে হাঁটছি , হঠাৎ-ই একটা ছোট মেয়ে হাতে করে কয়েকটা ফুল নিয়ে এসে সামনে দাঁড়িয়ে বললো , আপা ফুল নিবেন?

নারে নিবোনা।

আপা নেন না, তাজা তাজা গোলাপ। মেয়েটির হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সত্যই অনেক সুন্দর ফুটন্ত লাল গোলাপ।

আমি বললাম কতো টাকা?

দশ টাকা আপা।

আমি পকেট থেকে দশ টাকা বের করে মেয়েটিকে দিলাম। মেয়েটি টাকাটা নিয়ে আমাকে একটি ফুল দিয়ে চলে গেলো।

পরদিন মেয়েটির সাথে আবার দেখা হলো কিন্ত একটু অন্যভাবে। আমি রাস্তা দিয়ে হাঁটছি ,দূরে দেখি একটি বাচ্চা মেয়ে কাঁদছে। কাছে গিয়ে প্রথমে মেয়েটিকে চিনতে না পারলেও পরক্ষণেই বুঝতে পারলাম যে এই সেই মেয়ে যার থেকে গতকাল ফুল কিনলাম। মেয়েটি অনেক মিষ্টি , গায়ের রং একটু ময়লা কিন্ত এই ময়লা আসলে সেই ময়লা না। আজ এই মেয়ে যদি আমাদের মতো ভালোভাবে থাকতে পারতো তবে এই মেয়েটিকেও দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগতো। তখন এই মেয়েটি রাস্তায় এভাবে কাঁদছে দেখলে অনেক অজানা লোকই হয়তো কোলে নিত, চুমু খেত, আরো কত কী!  কিন্ত এই মেয়েটির দিকে এখন কেউ ফিরেও তাকাচ্ছেনা । আসলেও অদ্ভুত এই মানুষগুলো!

আমি হেঁটে মেয়েটির সামনে গেলাম। বললাম, কীরে কাঁদছিস কেন?

মেয়েটি বাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, মারছে।

কেন মারলো তোকে?

মেয়েটি ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললো , ফুল কিনতে কইছিলাম।

ফুল কিনতে বললে মারবে কেন?

উনি হাইট্যা যাইতাছিলো। আমি কইলাম ফুল নিবেন? হে কইলো না। আমি কইলাম নেন না। হে কইলো কইছি ণা নিমু না। আমি আবার কইলাম একটা নেন। তহন হে আমার হাতের থেইক্যা ফুলগুলা নিয়া মাটিতে ফালায় দেয় আর আমারেও ধাক্কা দেয়। আমি পইড়্যা যাই, দেহেন আফা আমার ফুলগুলা কেমন হইয়্যা গেছে।

আমি দেখলাম ফুলগুলো আসলেও নষ্ট হয়ে গেছে।

আমি বললাম, থাক আর কাঁদিস না।

আমি পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম যে বিশ টাকা আছে। আমি টাকাটা মেয়েটির হাতে দিয়ে বললাম, এই টাকাটা রাখ।

আমি এমনেই টাকা নিমু ক্যান?

আচ্ছা আমাকে দুইটা ফুল দে।

এই ফুল গুলান তো পইচ্যা গেছে।

থাক তাও দে।

আচ্ছা আজকে এইডা নেন। কালকে আপনেরে এক খান ভালা ফুল আইন্যা দিমুনে।

আচ্ছা ঠিক আছে যা।

মেয়েটি একটি মিষ্টি হাসি দিল। তার সামনের ফাঁকা দুইটি দাঁতের জন্য তার হাসিটি আরো মিষ্টি দেখায়।

এর কয়েকদিন পরের কথা। কলেজ থেকে ফিরছি হঠাৎ

কোথা থেকে একটি মেয়ে দৌড়ে এসে আমাকে বললো, আফা দাঁড়ান।

আমি দাঁড়িয়ে পেছনে ফিরে দেখি সেই মেয়েটি হাতে সুন্দর কয়েকটি ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেখান থেকে একটি ফূল আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, নেন আফা এইটা আপনের জইন্য আনছি।

থাক লাগবেনা তুই এটা বিক্রি করে ফেলিস।

না আফা আপনের লাইগ্যা আনছি, আপনেরে এইডা নিতেই হইবো।

আমি ফুলটি নিলাম।

আচ্ছা এতদিন দেখা হলো কিন্ত তোর নামটাই তো জানা হলোনা। নাম কী তোর?

তুলি।

বাহ! বেশ সুন্দর নাম।

আপনের নাম কী আফা?

আমার নাম? আমার নাম নিহি।

অপনের নামডাও সুন্দর। আপনি অনেক ভালো।

তাই কে বললো শুনি?

ক্যান আমি কইলাম। আমনে কত্ত সুন্দর কইর‍্যা কথা কন। অন্যগো মতো আমারে মারেন না।  আমার থেইক্যা ফুল কিনেন।

হা হা। কিন্ত আমি তো খারাপও হতে পারি ।

এহ কি যে কন না!

মেয়েটি হাসছে। সেই ফাঁকা দাঁতের অপূর্ব হাসি যা মেয়েটিকে আরো সুন্দর করে তোলে ।

এভাবে প্রায় প্রতিদিন দেখা হতো তুলির সাথে। কলেজ থেকে বাসায় যাওয়ার সময় এবং মাঝে মাঝে কলেজে আসার সময়ও দেখা হতে লাগলো। তুলির সাথে আমার বেশ ভাব জমে গেল। আমি প্রতিদিন টিফিনের টাকা থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে রাখতাম আর অন্যদিকে ও আমার জন্য বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর ফুল এনে দিত। ওকে আমিও মাঝে মাঝে চকলেট কিনে দিতাম আর ও সেই ফোকলা দাঁতের মিষ্টি হাসি দিতো। তবে ওর জন্য ভয় লাগতো মাঝে মাঝে , ছোট মেয়ে যেভাবে ছুটে বেড়ায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় তাই সাবধানে পার হতে বলতাম।

আমি ওকে পড়ালেখা করতে বলতাম। পড়ালেখার কথা বললে ও বলতো যে, আমি তো পড়ি নাইট স্কুলে।

আচ্ছা ভালো করে পড়ালেখা করবি। ভালো করে পড়াশুনা করে আমার মতো কলেজে পড়তে হবে তো।

 আহারে , অত টাকা পামু কই?

অবশ্য কথা তো ঠিক।

তো এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো দিন।

হঠাৎ একদিন তুলি বলল, জানেন আফা কালকে না আমার জন্মদিন।

ও তাই নাকি!  তা তোকে কি দিব বল?

কিছুই লাগবোনা আফা। কিন্ত আপনেরে কালকে আমি একটা জিনিস দিতে চাই।

তুই আবার আমাকে কাল কী দিবি?

আমি তো ফুল ছাড়া আপনেরে কিছু দিতে পারুম না। আপনে আমারে একটা ফুলের নাম কন আমি হেইডা আপনেরে আইন্যা দিমু।

আচ্ছা কালকে তো তোর জন্মদিন। আমি তো তোকে কিছু দিব ভাবছি তুই কেন আমাকে দিবি?

এমনেই দিমু। কন না আফা?

হঠাৎ আমার সেই সাদাগোলাপের কথা মনে পড়ে গেলো। আমি বললাম, আচ্ছা আমাকে একটা সাদা গোলাপ এনে দিস।

আইচ্ছা ঠিকাছে আফা।

আব্বু একটা কথা বলি?

কী বল?

তোমাকে একটা মেয়ের কথা বলেছিলাম না। মানে তুলি, যে আমাকে প্রতিদিন ফুল এনে দেয়। কাল না ওর জন্মদিন।

হ্যাঁ, তা ওর জন্য কিছু কিনতে চাস তাইতো?

হ্যাঁ আব্বু। কিছু কিনে দিবে প্লিজ?

আরে হ্যাঁ দিব না কেন? কিন্ত কি দিতে চাস?

একটা জামা।

ঠিক আছে চল কিনে দেই।

আমি আর আব্বু দোকানে গিয়ে ওর জন্য জামা, কিছু চকলেট আর একটা পুতুল কিনি । আসলে কাউকে কিছু দেওয়ার আনন্দই অনেক।

পরদিন কলেজে যাওয়ার সময় একটু আগে বের হই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি কিছুক্ষণ। হঠাৎ তুলি আমার দিকে দৌড়াতে দৌড়াতে আসে।

শুভ জন্মদিন তুলি।

ব্যাগ থেকে ওর জন্য জামা,পুতুল আর চকোলেট গুলো দিলাম। উপহারগুলো পেয়ে তো ও মহাখুশি আর ওর খুশি দেখে আমার  মনও আনন্দে ভরে গেল।

পরক্ষণেই দেখলাম তুলির মন আবার খারাপ হয়ে গেলো। আমি বললাম কীরে উপহার পছন্দ হলোনা বুঝি?

না আফা কী যে কন। আপনে যে এইগুলান দিছেন এইটাই তো কত।

তাহলে আবার মন খারাপ করে রেখেছিস কেন?

আফা আপনে ভুইল্যা গেছেন, আপনের জইন্য সাদা গোলাপ আনার কথা ছিল কিন্ত আসার পথে খুইজ্যাও পাইলাম না।

আচ্ছা ঠিকাছে এই জন্য মন খারাপ করা লাগবে না। সময় তো আর পালিয়ে যাচ্ছেনা ,পরে ফুল পেলে দিস আমাকে।

আচ্ছা আফা আপনের কলেজ ছুটির সময় দাঁড়াইয়েন আপনেরে আপনের প্রিয় সাদা গোলাপ ফুল আইন্যা দিমু।

আমি আড় চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম , তুই কী করে জানলি যে সাদা গোলাপ আমার প্রিয় ফুল?

বুইঝ্যা লইছি।

কীভাবে শুনি?

এইযে বাকী আরো কত্ত সুন্দর সুন্দর ফুল থাকতেও আপনে আমার কাছে সাদা গোলাপ ফুলই চাইলেন।

ওরে বুদ্ধি রে। আচ্ছা এখন এই চকলেট গুলা নে।

ও চকলেট গুলো হাতে নিয়ে বললো, দাঁড়ান আফা। তখন ও প্যাকেট থেকে একটা চকোলেট বের করে বললো,নেন আফা, এইটা খান।

আমি বললাম,খাওয়ায় দে।

তুলি খাইয়ে দিল। আমিও ওকে খাইয়ে দিলাম।

আচ্ছা তুলি কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে।আমি বরং যাই কেমন? তুই তোর বাসায় গিয়ে এগুলো রেখে আয়।

আইচ্ছা আফা যাই তাইলে। আপনে কিন্ত আমার জইন্য ছুটির সময় দাঁড়াইয়েন। 

আমি পেছন ফিরে কলেজের উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলাম।

কলেজের ছুটির ঘন্টা বাজলো। ব্যাগ কাঁধে করে ফিরছি । রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখি রাস্তায় রক্তের দাগ। গুটি গুটি পায়ে সেখানে গেলাম। দেখেই মনে হচ্ছে আবারো কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। খুবই অসস্থি হতে লাগলো।

পাশে একজনের কাছে আসলে কী হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর বইলো না এই সকালের দিকে একজন অ্যাক্সিডেন্ট করলো।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এখন সে কেমন আছে? বেঁচে আছে কী?

লোকটি বললো, না রে মা। যে জোরে ধাক্কা লাগাইছিল গাড়ীটা, ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে একদম ছিটকে গাড়ীর নিচে পড়ছিলো, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যায়।

কথাটা শুনে যেন মনে হলো আমার বুকে কেউ হাতুরি দিয়ে সজোরে আঘাত করলো। আমি আবার থম্থমে গলায় জিজ্ঞাসা করলাম – বাচ্চা মেয়ে?

লোকটি বলল, হ্যা কি মিষ্টি ছিল মেয়েটা। সাবধানে চলাফেরা কইরো বুঝলা। কখন যে কী হয়। রাস্তায় তো ওরা গাড়ী না যেন প্লেন চালায়।

লোকটা হয়তো আরো কিছু বলছিলো কিন্ত আর কোন কথা কানে আসছিলো না। পাশে তাকাতেই দেখি একটা ফুল পড়ে আছে। গোলাপ ফুল। লাল গোলাপ। কিন্তু একি  সত্যিই লাল গোলাপ!  এমন লাল গোলাপ আমি সত্যিই কখনও দেখিনি। আকাশে হঠাৎ-ই যেন মেঘ জমেছে। আকাশ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে কী! যদি বৃষ্টি নামে আর লাল গোলাপের রং টা ধুয়ে দিয়ে যায় তাই গোলাপটি হাতে নিয়ে আমি আমার ডায়েরির মধ্যে রাখি। চোখ থেকে এক ফোঁটা পানিও যেন পড়লো। রাস্তায় এলোমেলোভাবে হাঁটছি। আকাশে সত্যিই মেঘ জমেছে। কোথাও আজ আর তুলিকে পেলাম না। ওর না আজ আমাকে সাদা গোলাপ দেওয়ার কথা। অপেক্ষা করতে লাগলাম ওর জন্য। মনে মনে ভাবছিলাম এই বুঝি তুলি এসে আমাকে ডাকবে , “ও আফা এই দেখেন আপনের জন্য সাদা গোলাপ নিয়া আইছি, আপনের প্রিয় সাদা গোলাপ।” কিন্ত না আজ কেউ ডাকলো না।

আর কতো অপেক্ষা করবো ওর জন্য। এইতো একটু পর সন্ধ্যা হতে শুরু করবে। অনেক রাগ হলো। ভাবলাম তুলির সাথে আর কখনও কথা বলবো না,কখনই না।  উপহার পেয়ে ও আমাকে ভুলে গেছে।

এরপর আমি আর কখনও ওর জন্য অপেক্ষা করি নি,কিন্তু তুলি অপেক্ষা করেছে কি না জানিনা।

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৬ - ২০১৭

তানজিন তামান্না হ্যাপি

সেশনঃ ২০১৬ - ২০১৭

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.