fbpx

আতাহার স্যার স্মরণে

আজ বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ছিল। সভার শুরুতেই এ করোনাকালে বেশ কয়েকজন গুণী শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সভা চলা কালে তাঁদের ছবির দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর ভাবছিলাম তাঁদের অবদানের কথা। বিশেষ করে মনে পড়ছিল পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. আতাহারুল ইসলাম স্যারের কথা।

২০১০-২০১৩ সালের কথা।  আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্য। এক সন্ধ্যায় তৎকালীন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক স্যার নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা ডাকলেন। সভায় অনেক এজেন্ডার একটি ছিল পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আতাহারুল ইসলাম স্যারের অব্যাহতি পত্র। যতদূর মনে পড়ে আতাহার স্যার অব্যাহতি দিয়ে বিদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী নিয়ে চলে যাবেন। আতাহার স্যারের সাথে তখনও আমার সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি যদিও তাঁর কাজ সম্পর্কে আমি অবগত। পপুলেশন-ডেভেলপমেন্ট এন্ড এনভায়রেন্টাল নেক্সাস নিয়ে তাঁর একটি লেখা আমি প্রথম পড়তে গিয়ে স্যারকে প্রথম জানি। পরবর্তীতে তাঁর সম্পর্কে জেনেছি অধিকতর। ঐ সিন্ডিকেট সভায় আমি স্যারের অব্যাহতি পত্র গ্রহণের আগে বলেছিলাম – পদত্যাগের বিষয়টি তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার হলেও তাঁর চলে যাওয়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক বড় শুন্যতা। একজন বড় মাপের গবেষককে হারানো। তখন উপাচার্য স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম – আলোচনা করে স্যারকে রেখে দেওয়া যায় কি না। পরবর্তীতে জেনেছি তিনি অব্যাহতি নিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু আবার ফিরে এসেছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের টানেই – যোগ দিয়েছিলেন পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইন্সটিটিউটের কাজী মোতাহার হোসেন চেয়ার হিসাবে।

গত বছর স্যার আমাকে তিনবার ফোন দিয়েছিলেন একাডেমিক কাজের পরিসরে। আমি মুগ্ধ হয়ে স্যারের কথা শুনেছি। তাঁর পরামর্শ জেনেছি। গত মাস তিন-চার আগে আমরা ফেসবুকেও সংযুক্ত হই। স্যারের ছোট ভাই ড. আমিনুল ইসলাম আমার বিভাগে (পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ) খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে পাঠদান কালে একদিন আলাপচারিতায় জানতে পারি আতাহার স্যার তাঁর বড় ভাই। ইচ্ছে ছিল – আতাহার স্যারের সাথে একদিন সরাসরি দেখা হবে। কিন্তু এ করোনাকালে তা আর সম্ভব হলোনা। পরকালে আতাহার স্যার ভালো থাকুন। আর বেঁচে থাকুন তাঁর কাজের পরিসরে – প্রেরণার উৎস হিসাবে।

চেয়ারম্যান | পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়