স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে আরোও একবার স্বাধীনতার সংগ্রাম দেখবো কখনো চিন্তা করিনি। যে সংগ্রাম ছিল দাবি আদায়ের, অধিকার আদায়ের, ভাই হত্যার বিচার চাওয়ার। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু জুলাই ২০২৪ এর ভয়াবহতা দেখেছি। এতো দীর্ঘ জুলাই মাস, মনে হয় যেন শেষ হওয়ার নামই নিচ্ছিল না।
জুন মাসের শুরুর দিকে “২০১৮ এ কোটা বাতিলের পরিপত্র”- কে অবৈধ ঘোষণা করে রায়ের পরে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হাত ধরে শুরু হয় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। জুলাই এর শুরু থেকে শিক্ষার্থীরা সকল ধরনের পরীক্ষা এবং শ্রেণী কার্যক্রম বর্জন করে এবং পরবর্তীতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। এক পর্যায়ে দায়িত্বরত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে “রাজাকার” বলায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থী সমাজ। আন্দোলনরত অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর অমানবিক নির্যাতন এবং অতর্কিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিনত হয় এক রণক্ষেত্রে। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
আন্দোলনের একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম শহীদ। আবু সাঈদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। এরপর আন্দোলনে যোগদান করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে হামলা করে পুলিশ, RAB, বিজিবিসহ আরো অনেক প্রশাসনিক গোষ্ঠী। এক এক করে শহীদ হয় দুইশরও বেশি ছাত্র-জনতা। যেখানে সাত বছরের একটি শিশুও হামলা থেকে বাঁচতে পারেনি। হামলার ভয়াবহতা যখন সীমা অতিক্রমের পথে তখনই ছাত্ররা ডাক দেয় অসহযোগ আন্দোলন এবং সরকার পতনের।
শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণের আন্দোলনের মুখে সরকারের পতন ঘটে। সেনাবাহিনীর পরিচালনায় ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এতো হত্যাকাণ্ড, অত্যাচার, নির্যাতন, আর মৃত্যুর মিছিলের কথা কত সহজে এখন লিখে ফেলা যায় আসলেও এতটা সহজ ছিল না এই আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত দেখা। এক একটা মৃত্যু এক একটা পরিবারের সকল আশা, ভরসা আর ভবিষ্যতকে ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। কত মায়ের বুক খালি হয়েছে, তা এখনো অজানাই রয়েছে।
এতো ত্যাগ আর শহীদ হওয়ার পেছনে একটাই লক্ষ্য ছিল সবার, একটি শান্তিপূর্ণ, বৈষম্যহীন সোনার বাংলা গড়ে তোলা। যেখানে থাকবে না কোন ধরনের বৈষম্য। ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সবাই সবার সবধরনের অধিকার সমানভাবে পাবে।
এই জুলাই বাঙালির জীবনে আর কখনো ফিরে না আসুক। তবে শিক্ষার্থীদের এরকম দেশপ্রেম অটুট থাকুক সর্বদা। সংকটকালীন সময়ে ছাত্র-জনতার একাত্মতাই দেশ গঠনের প্রধান স্পৃহা।
একটি বৈষম্যহীন সোনার বাংলার প্রত্যাশায়,
একজন ক্ষুদ্র মানব।
- উম্মে সালমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%89%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৪, ২০২১
- উম্মে সালমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%89%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
- উম্মে সালমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%89%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২
- উম্মে সালমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%89%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be/সোমবার, এপ্রিল ১৮, ২০২২
- উম্মে সালমাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%89%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২২