জুন ২০, ২০২৫

স্মৃতিতে মুরশীদা ম্যাডাম

“আজও কানে ভাসে সেই কথাগুলো,
কে জানে হবে যে শেষ কথা….”

হঠাৎ একদিন ফোন বাজছে, ফোনটা হাতের নাগালের বাইরে থাকায় রিসিভ করতে পারিনি। এসে দেখি ফোনের স্ক্রিনে উঠা একটা নাম। আর কেউ নয়, নামটা ছিল আমাদের ডিপার্টমেন্টের মুরশীদা ম্যাডামের। একটু অবাকই লাগলো, মনে হতে লাগলো কিছু ভুল করলাম কিনা আবার। অনেক কিছু ভেবে ঠিক করলাম ফোনটা ব্যাক করেই দেখি না। ফোন ব্যাক করলাম, ওপাশ থেকে ম্যাডামের কন্ঠস্বর ভেসে আসলো, “বাবা, তন্ময় বলছো?” – “জ্বি ম্যাম, তন্ময় বলছি” – এর মধ্য দিয়েই ম্যাডামের সাথে সরাসরি কোনো কাজে কথা বলা শুরু হলো আমার। চতুর্থ বর্ষে আমাদের ক্লাস নেয়াতে আগে থেকেই পরিচয় থাকলেও কখনো একাডেমিক কাজ ব্যতিত উনার সাথে তেমন কথা বলা হয়নি আমার।

মূলত ম্যাডাম একটি কাজের জন্য ওইদিন আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। কিছুদিন পরই নতুন আগত ব্যাচ ৭৩ এর ওরিয়েন্টেশন ছিল। ম্যাডাম কোনোভাবে জানতে পেরেছিলেন আমার ভিডিও এডিট করতে পারার কথাটা, তাই আমাকে ডিপার্টমেন্টের ডকুমেন্টারি ভিডিওর কিছু কাজ করে দিতে বলেছিলেন ওইদিন। এরপর বেশ কয়েকদিনই ম্যাডামের সাথে সরাসরি দেখা করা, ফোনে বিভিন্ন প্রয়োজনে কথা বলা শুরু হয়। তখন বুঝতে পারি মানুষটা কতটা আন্তরিক। উনি রাগলে যেমন কঠিন হোন, তেমন স্নেহও করেন। উনার সাথে সরাসরি কাজ করা না হলে হয়তো কখনো এটা উপলব্ধি করা হতো না আমার।

দিন গড়ালো, মাস গড়ালো…

আমাদের অনার্স ফাইনাল এক্সাম শুরু হলো। প্রথম দিন এক্সাম দিতে গিয়ে কার্জন হলে ম্যাডামের সাথে আবার দেখা হলো। ওই এক্সামের ঠিক দুই দিন পরে (১৪ই ডিসেম্বর) সকালে ফোনটা হাতে নিয়েই এমন একটা নিউজ দেখা লাগবে, যার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। জানতে পারলাম ম্যাডাম আর দুনিয়ায় নেই। আমি এখনো এটা বিশ্বাস করতে পারছি না যে উনি নেই।

এখনো মনে হয় আবার হঠাৎ একদিন ম্যাডামের নামে
ফোনের স্ক্রিনে একটা কল ভেসে উঠবে…
এবার আর মিস করা যাবে না কলটা,
সাথে সাথেই রিসিভ করা লাগবে…

250112
Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp