জুন ২০, ২০২৫

নিশিন্দা

নিম তিতা নিশিন্দা তিতা গানটি প্রায় সব বাঙ্গালিরই শোনা। নিম গাছ অনেকে চিনলেও নিশিন্দা অনেকের কাছেই অপরিচিত। আজ নিশিন্দার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।

নিশিন্দার বৈজ্ঞানিক নাম vitex Negundo । এটি Lamiaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ।

নিশিন্দা এক প্রকার পর্ণমোচী উদ্ভিদ যা গুল্ম আর বৃক্ষের মাঝামাঝি আকৃতির। এটি পাঁচ বা ক্ষেত্র বিশেষে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে আট মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। আবার কেটে ঝোপ করেও রাখা যায়। নিশিন্দা গাছের অনেক অংশই লোমশ। গাছের বাকল সবুজ বা লালচে বাদামি। একেকটি দণ্ডে ৩ থেকে ৭টি বিভিন্ন আকৃতির পাতা থাকে । পাতাগুলি একেকটি ৪ থেকে ১০ সেন্টি মিটার দীর্ঘ, মধ্যেরটি সবচেয়ে বড়। ১০ থেকে ২০ সেন্টি মিটার দীর্ঘ দণ্ডে অসংখ্য ফুল হয়। ফুলের রং নীলচে বেগুনি। ফুল আকারে ছোট, এক থেকে বড়জোর দেড় সেন্টি মিটার দীর্ঘ। পাপড়িগুলি বিভিন্ন আকৃতির এবং মাঝের নিচের অংশটি দীর্ঘতম। ফুল শেষে বীজ হয়। বীজ খুব ছোট, গোল বা ডিম্বাকৃতি এবং পাকলে এটি কালো বা বেগুনি রঙের হয়। বীজ ছাড়াও ডাল থেকে খুব সহজেই চারা করা যায়।

নিশিন্দার আদি বাস পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এশিয়া। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই নিশিন্দার দেখা মেলে। ঔষধি এই গাছের পাতা, শিকড়, ফুল এবং ফল সব কিছু কাজে লাগে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে স্থানীয় চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই গাছের ব্যাপক ব্যবহার আছে। ফিলিপাইনে গুদামজাত ফসলে পোকার আক্রমণ প্রতিহত করতে এবং কাশির প্রতিষেধক হিসেবে এর ব্যবহার হয়। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণেও নিশিন্দা ব্যবহার করা হয়। মালয়েশিয়াতে মেয়েদের বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার আছে।

বাংলাদেশেও লোকজ চিকিৎসায় নিশিন্দা একটি পরিচিত নাম। গরম পানিতে পাতার নির্যাস ক্রনিক ব্যথা, বাত, মাথাব্যথা উপশম করে। এটা হাপানি, ঠান্ডাজনিত রোগেও বিশেষ কার্যকরী। গাছের সর্বাঙ্গ তিতা স্বাদযুক্ত হওয়ার কারণে এর পাতা এবং ডাল পালা পোকামাকড় রোধী। তাই পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে বা দমনে জৈব পদ্ধতি হিসেবে নিশিন্দার ব্যবহার রয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ছবিঃ এনাম এলাহী মল্লিক, নাজমা সুলতানা

profile pic

প্রাক্তন শিক্ষার্থী

পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশন: ১৯৯২ - ১৯৯৩

Facebook
Threads
LinkedIn
Telegram
X
Reddit
Email
WhatsApp

আরও লেখা সমূহ