fbpx

বছরান্তের চিঠি

বছরান্তের চিঠি

তোমাকে প্রথম দেখার মাত্র‌ই মনে হয়েছিল তুমি রুপকথার কোন অপর্ণা।  যেনো তোমার প্রধান কাজ বা সার্বক্ষণিক কাজ রূপচর্চায় ব্যস্ত থাকা। সে কি তোমার রূপ, যেনো মন্ত্র মুগ্ধকর। একবার দেখলেই তোমার হতে আর চোখ সরানো যায় না মন সরানো তো সেখানে অসাধ্যের বিষয়। মনে পড়ে স্কুলে তোমার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতাম। তুমি লজ্জায় পড়ে চোখ দুটো নামিয়ে ফেলতে।

লোকমুখে অনেক শুনেছি স্কুলের প্রেমগুলো নাকি সব আবেগ হয়। সেখানে ভালোবাসার ছিটে ফোঁটাও থাকে না। কিন্তু বছরের পর বছর যখন তোমার হতে আমি নিজেকে দূরে রাখতে পারিনি তখন বুঝতে পেরেছি তোমার প্রতি আমার আবেগের থেকে ভালোবাসাটাই বেশি ছিল। জানি তোমাকে আমার আর কোন দিন পাওয়া হবে না এবং তা আমি চাইও না। তবে তোমার স্মৃতিগুলো আসবে আমার কাছে, প্রভাতের আলোর মতো করে। অনুভূতির শূন্য স্থানগুলো শূন্য‌ই রয়ে যাবে।

মোঃ আসিফ আল মাসুম
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছোটোবেলার ডিসেম্বর আর এখন এর ডিসেম্বর এর মধ্যে এক আকাশ সমান তফাৎ। সেইসময়কার ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম, কখন সেই কাঙ্ক্ষিত চিন্তাহীন সময় আসবে, সাথী হবে শুধুই আনন্দ আর হাসি।

দেখতে দেখতে সেই ডিসেম্বরগুলো যেমন ক্যালেন্ডার থেকে হারিয়ে গেছে তেমন আমার সেই আনন্দও হারিয়ে গেছে। পড়ে রয়েছি শুধু একলা, চিন্তিত, হয়তো দিকভ্রান্ত এবং অনেকটা বড় হয়ে যাওয়া আমি।

ইসরাত জাহান নাফিছা
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আমার ঢাকায়ই জন্ম, ঢাকায়ই বড় হওয়া। অনেকের কাছে ঢাকার এই বিশাল বিশাল অট্টালিকা জঞ্জাল মনে হলেও আমার কাছে এই একেকটা স্থাপনা একেকটা আর্টপিসের সমান। ইচ্ছে ছিলো স্থাপত্য নিয়ে পড়ার। সুযোগ যে পাইনি তা নয়। আমি স্থান অর্জনে সক্ষম ছিলাম, কিন্তু ধরে রাখতে পারিনি। অতঃপর আমার ভাগ্য আমাকে টেনে আনলো পরিসংখ্যান বিভাগে, শুরু হলো মাটি কামড়ে পড়ে থাকার লড়াই। গত তিন বছর ধরে এ মাটি কামড়েই পড়ে থাকলেও মন পড়ে আছে বিশাল অট্টালিকাগুলোর মধ্যে। আজ স্থাপত্যে পড়লে এমনই এক স্থাপনার শিল্পী হতাম আমি। আর এখন আমার শৈল্পিক মনকে পরিসংখ্যানের মাটিতে চাপা দিয়ে নতুন বছরে সেই পুরনো মাটি কামড়ে পড়ে থাকার লড়াই-ই করে যাচ্ছি।

শামায়েলা শেবন্তী
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় খাদু,
তোমার সাথে দেখা হয় না অনেকদিন। তোমার কথা অনেক বেশি মনে পড়ে। মনে পড়ে? ডিসেম্বরের সকালে আমাদের হাঁটতে যাওয়া, রাস্তার পাশে বসে খেঁজুরের রস খাওয়া, সরিষাক্ষেতে ছবি তোলা, তারপর সন্ধ্যায় পিঠা খেতে যাওয়া, আরও কত কি। আমাদের যখন আবার দেখা হবে তখন আবার আগের মতো মজা করবো। আশা করি আমাদের শীঘ্রই দেখা হবে। ভালো থেকো, আর আমাকে ভুলে যেও না।
ইতি,
তোমার বোন
ইয়াসমিন

ফারজানা ইয়াসমিন শান্তু
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

“অতীতটা আজও স্পষ্ট ভীষণ,
অভিমানটাও যে পুরু।
চলনা আবার করি,
শেষ হতে শুরু? ”

২০২৩ কে বলা যায়, “The year of redemption”.

নি:সন্দেহে জীবনের অন্যতম সেরা বছর ছিল এটি। কয়েক বছরের হতাশা, কষ্ট ছাপিয়ে এই বছরটি এসেছে অপেক্ষার সুমিষ্ট ফল হিসেবে। নিজের পরিধি ও আত্মবিশ্বাসকে বিস্তৃত করার, নিজেকে চেনার এবং চেনানোর বছর ছিলো এইটি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ ২০২৩ সালে আমাকে মানুষ হিসেবে আরও বড় করে দেওয়ার জন্য।

” সময় ছুটে চলেছে আপন গতিতে
বছরটি পড়ে রইবে স্বর্ণালী অতীতে।”

কাজী শাফিন আলম
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বছর পেরিয়ে আবার নতুন বছর। সাথে নতুন মাস আর নতুন সব ভাবনা চিন্তা। যদি শেষ থেকে শুরু করি, পারব কি শিখরে পৌঁছাতে? নাকি শুরু থেকেই শুরুটা করব? না থাকবে কোনো অতিরিক্ত চাওয়া, না আক্ষেপ। থাকবে শুধু একটু করে এগিয়ে চলার ইচ্ছা।

ওগো বিংশ, প্রশ্ন করছি তোমায়। তোমার সাথের ত্রয়ীকে নিয়ে ভাববো? নাকি চতুর্থীকে নিয়ে?

নুঝাত নাজিয়া
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় রুফা,
তুমি জানো, তুমি কেমন। তুমি যে তোমার মতো।নতুন বছরে, নতুন করে নিজেকে জানো, বুঝো। নিজেকে আগের থেকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসো। নিজেকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড বানাও। আর এইভাবেই সবসময় হাসিখুশি আর প্রানবন্ত থাকো। শুভ হোক নতুন বছরের পথ চলা। ভালোবাসা ও শুভকমনা সবসময়!
ইতি
রুফা (ছদ্মনাম)

রুফা (ছদ্মনাম)
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয়,

তুমি আমায় অনেক কিছু দিয়েছো আবার নিয়েছো। তুমি আমার অনেকদিনের চেনা বিশ্বস্ত কাঁধকে আমার অপরিচিত করেছো। শুরুতেই তুমি প্রিয় মানুষের সাথে দূরত্ব বাড়িয়েছো। তুমি আমায় মানুষ চিনিয়েছো। কাছের মানুষ কিভাবে মুহূর্তে বদলে যায় দেখিয়েছো। আবার অপরিচিত কিছু মানুষকে এমন ভাবে দিয়েছো যেনো তারা অনেকদিনের চেনা। তুমি আমায় নিজের কষ্ট নিজের কাছে রাখতে শিখিয়েছো।

এতো দিয়েছো তুমি! পারতে তো থেকে যেতে? তোমার চলে যাওয়ার শূন্যতা ক্ষণে ক্ষণে তোমাকে মনে করিয়ে দেয়। দেনাপাওনার হিসাবটা নাহয় তোলা থাক। তোমার জন্য লেখা এই চিঠি আমি উড়িয়ে দিলাম তোমার নীড়ে। যদি কখনো তোমার কাছে এই আনাড়ি চিঠি পৌঁছায় মনে রেখো কোথাও কেউ এখনও তোমার অপেক্ষায় আছে।

ইতি,

তোমার অপেক্ষায় থাকা কেউ

জান্নাতুল নাঈম লায়লা
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় পরিসংখ্যান,

আমার রজনীগন্ধা, আমার স্বপ্নের পরী। দ্বিতীয় বর্ষে উঠা মাত্রই তোমার সাথে আমার এক পাক দেওয়া শেষ হলো। বাকি পাকগুলো পূরণ করে সারাজীবন তোমার সাথে থাকতে চাই। হে রজনীগন্ধা- তোমাকে বুঝতে চাই, তোমার না বলা কথাগুলো শুনতে চাই, মন খারাপের দিনে তোমার সাথে হাঁটতে চাই, নর্মাল কার্ভ নামাক পাহাড়ে একসাথে চড়তে চাই, আলফা-বিটা নামক তোমার চোখ দুটির দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতে চাই। প্রতিনিয়ত তোমার ঐ কন্ঠ, ঐ মুক্ত কন্ঠের ভবিষ্যদ্বাণী, উভয়ই আমাকে মুগ্ধ করে। তবে সবকিছুর উর্ধ্বে সৃষ্টিকর্তার যে বার্তা, সে বার্তার কাছে তুমি আমি দুজনই সীমাবদ্ধ! তবু সেই সীমাবদ্ধতার আকাশে দু’জন একসাথে উড়তে চাই।

ইতি ,
তোমার তিড়িং-বিড়িং।

আব্বাস উদ্দিন
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয়,
আজ বইয়ের পরতে ধুলা মুছতে যেয়ে আপনাকে ভীষণ মনে পড়ছে। সরাসরি নিবেদন জানানোর উপায় নেই তাই আপনার উদ্দেশ্যে কয়েক বাক্য।

কিছু বই জমা আছে। এইযে স্থির সময়, এখনও পড়তে ইচ্ছে নেই। হুমায়ূনের বই সাথে মুক্তিযুদ্ধের কিছু বই। মুজিবের বই যে রাখতেই হয় সাথে। আপনি কম করে হলেও ধার নিন, দীর্ঘ সময় দিয়ে চোখ বুলান। প্রতিটি পৃষ্ঠা আপনার হাতের স্পর্শ পাক। মৃত সময়ের মৃত পৃষ্ঠাগুলো কোমলতা অনুভব করুক। আপনার চোখের অসীম মায়া ঢেলে দিন বইয়ের সবখানে, সময় নিয়ে পড়বেন। যেখানে যেখানে আপনি মুচকি হাসছেন আমি সেটা ভালোবাসার খাতায় তুলে নিব। যেখানে আপনার চোখ একটু লজ্জা পাচ্ছে সেখানে একটি অলংকার সাজিয়ে দিব। একটু ইমোশন, ক্ষোভ এগুলো আমি নিজের কাছেই রেখে দিব। আপনি শুধু ভালোবাসার মানুষ। তবে ভাগের হিসাব সমানে আপনাকে দিচ্ছি না। বই পড়ার মাধ্যমে যে ভালোবাসার বিনিময় কিভাবে হয় তা আপনাকে আমার বলতে হবে না আশা রাখছি। মাঝেমধ্যে দু-একটি চিঠির কাগজও পেতে পারেন, অপর পৃষ্ঠা ফাঁকা। বিপরীতে কিছু না লিখলেও সবুজ কালিতে টিক দিয়ে দিবেন। বুঝে নিব আপনি পড়েছেন। এখন আর তেমন কিছু করার নেই। ব্যাস আপনার হাতের স্পর্শ আর চোখের মায়া বইয়ের আদলে আমার ঠিকানায় পৌঁছে দিন, আমি জড়িয়ে নিব।

মোহের এই দুনিয়ায় আপনার স্পর্শে থাকা বইগুলোর প্রতি আমার হক জন্মাক। নতুন বছরে নতুন বইয়ের মাঝে পুরোনো আপনাকে উপলব্ধি করার তীব্রতা বেড়ে যাক। আপনি বইয়ের ন্যায়ই সর্বদা অকল্পনীয়, পরের স্তবকে আপনারই রহস্য আমার হাতে উন্মোচিত হোক।

রুয়াস রিয়াজ
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

২০২৩ সালটার আগমনও যেমন ছিল হঠাৎ, প্রস্থানও যেন ঘটল হঠাৎই। মাঝে শুধু কিছু বন্ধন হলো ঠুনকো, কতো রক্তের মানুষ চলে গেলো হাজার মাইল দূরে, কতো স্বপ্নের হলো বিসর্জন, কতো মনে ধরে গেল মরীচিকা। তেইশ হয়তো বলে উঠবে- কিছুই কী আমি করিনি তবে? বলতে হবে- তা তো করেছই, এই যে তুমি শিখিয়েছো কী করে প্রাণনাশের ইচ্ছায় ডুবে থাকা মনকে পুনরায় জীবিত করে তোলা যায়; আর পরে তাকে দেয়া যায় একরাশ নতুন মুখ, নতুন স্বপ্ন যা হয়ে যায় জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আচ্ছা চব্বিশ, তা বলো তো পারবে কী তেইশের মতো আমাকে আগলে ধরে রাখতে? জীবনের নতুন বাঁধাকে হাসিমুখে বরণ করে নিতে?

মাইশারা ইসলাম
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Dear 2023,
You were just another year. Just another year of war, earthquakes, fire and human agony and human happiness.

For me you were less brutal, less shocking, and less sadistic. I didn’t know where I would end up by the end of this year. I was devoting the first few months to admitting myself into a good institution. I was studying and cursing what I was studying.

I was escaping into my daily comforts and I was also losing myself. The more I learnt about life, and myself the sicker and delusional I became. Because I am growing just like everyone else. Growing and also deforming myself. I had to remove a lot of centipedes from my ears this year. I can still hear but my ears are not the same. I will try to be away from these centipedes of imperfections, wastes and decay of human impunity. But for how long?

ফারিহা রহমান
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় প্যাপাইরাস,
তুমি কি জানো আমার লেখালেখির পেছনে তোমার বিশাল অবদান আছে? তুমি না থাকলে হয়তো কোনোদিনও নিজের লেখালেখির প্রতিভা আবিষ্কার করতে পারতাম না। ২০১৯ সালে তোমার অনলাইন সংস্করণের যাত্রা শুরু হয়। সেই সাথে‌ আমার মনে জেগে উঠে কবিতা লেখার এক প্রবল ইচ্ছা। চেষ্টা করেছি নিজের অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গি কবিতার মাধ্যমে সুন্দর ও সাবলীলভাবে তুলে ধরার জন্য। তোমার সান্নিধ্যে কবিতা লেখা শিখতে পেরেছি এবং আরো শিখছি। আমার লেখালেখিকে উৎসাহ প্রদানের জন্য ধন্যবাদ প্যাপাইরাস। এভাবে সবার লেখালেখির প্রতিভার প্রকাশক হিসেবে পাশে থেকো। সুদীর্ঘ হোক তোমার যাত্রা, অটুট থাকুক তোমার আমার বন্ধন।
দোয়া ও শুভকামনা রইল।

ইতি,
তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী

আনুশী আরভীন
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এর সামনে দিয়ে যখন হেঁটে যাই, কোনো কোনো দিন বাংলা একাডেমির সামনে গতি একটু ধীর হয়।বছরের বাকি মাসগুলোতে তো অবশ্যই, ফেব্রুয়ারি তে এটা ঘটার সম্ভাবনা আরো প্রবল। হঠাৎ যেনো চোখের সামনে একটা ছোট্ট মেয়ে কে দেখতে পাই, তার আনন্দ, তার উচ্ছ্বাস, হাজার হাজার বই ছুঁয়ে দেখতে পারার খুশিতে তার চকচকে চোখগুলো। ছোটোবেলায় দাদাভাইয়ের সংগ্রহের বই থেকে শুরু, এরপরে স্কুলে কলেজে পুরস্কারের বই, পরিচিতদের বাসায় থাকা বই, লাইব্রেরির বই মেয়েটাকে চুম্বকের মতো টানতো। শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে এই বইয়ের প্রতি মোহ বাড়তে থাকে। হাতের কাছে সহজলভ্য ছিলো বাংলা সাহিত্য, তাতেই ডুবে থাকতো। মফস্বলে থাকা কিশোরী মেয়েটা জেলার শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনের বইমেলা দেখেছে, পকেট খরচ বাঁচিয়ে গুটিকয়েক বই ও হয়তো কিনেছে। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি তে ঢাকায় বইমেলা হয়, বিশাল সেই মেলায় যখন প্রথমবার পা রাখলো, পছন্দের বইটা কিনে একেবারে জড়িয়ে ধরে ঘরে ফিরলো। তারপর থেকে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই উচাটন শুরু বইমেলায় যেতে। নতুন বইয়ের গন্ধ, চারদিকে নতুন বই, লেখক দের মিলনমেলা কিশোরী মেয়েটাকে কি ভীষণ শিহরিত করতো। মফস্বলের কলেজ থেকে HSC শেষ করে যদি ঢাকায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুযোগ হয় তবে ফেব্রুয়ারির প্রত্যেকটা দিন বইমেলা দেখার সুযোগ মিলবে। মেয়েটা বইমেলার সবচেয়ে কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ার সুযোগ পেলো, কবি সুফিয়া কামাল হলে থাকার সুযোগ পেলো।

আজ আমি চতুর্থ বর্ষে পড়ছি। গত ৩ টা বইমেলা আমি দেখেছি এই ক্যাম্পাসে থেকে, আমি খুব জোড় ১ বার করে বইমেলা চত্বরে ঘুরে এসেছি।

সেই বইপ্রেমী, বইমেলা প্রেমী কিশোরীটা আমিই ছিলাম, সত্যিই? মাস দুয়েক পরে আবার বইমেলা, আমার কি সেই কিশোরীর আকুতি মনে থাকবে? আমি যাবো বইমেলায়? পুরোনো বইয়ের গন্ধ নেবো তো? নাকি সেই কিশোরী একেবারেই হারিয়ে গেছে জীবনের নানান ব্যস্ততায়?

ইকরা মুন নেছা
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় দু’হাজার তেইশ,
কোনো নির্দিষ্ট সময়কে উদ্দেশ্য করে কখনও চিঠি লিখিনি আগে। কীভাবে লেখা উচিত বুঝতে বেগ পেতে হচ্ছে। বছরের শেষে এসে সেই নির্দিষ্ট বছর কেমন গেল, চিন্তা করতে গেলে সেই শুরুর জানুয়ারির দিকের কথা মনে পড়বে- এটাই স্বাভাবিক। আজ ক্রিসমাসের দিনে এসে মনে হচ্ছে- শেষ কয়েকবছর যেন একইভাবে চলছে! ব্যাপারটাকে বরাবরই মার্কভ চেইনের সাথে তুলনা করি। নতুন ধাপটা কেমন হবে জানতে হলে, আগের ধাপটা জানা জরুরি। আবার বলা যায়, পরের ধাপটা কেমন চাই- বর্তমান সময়েই হয়তো অনেকটা নির্ধারণ হয়ে যাবে।

যাহোক, বছরের এই সময়টা নতুন নতুন শহরের হলিডে লাইট এবং নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন দেখার সাথে সাথে কত পরিচিত-অপরিচিত মানুষের সাথে হৈ-হুল্লোড় করে পুরাতনকে বিদায় আর নতুনকে স্বাগতম জানাই। নিজে আরও একবছর পুরোনো হয়ে গেলাম- এও মনের মধ্যে যুগপৎ উঁকি দেয়। মুহুর্তেই নিজেকে সামলে নিয়ে লাল-নীল আলো আর চোখধাঁধানো আতসবাজির দিকে মনোযোগী হই। মনে করতে আপ্রাণ চেষ্টা করি, কারো কষ্টের চেয়ে বরং হাসির কারণ হবার যথেষ্ট চেষ্টা ছিলো কিনা। দিনশেষে, হাসির অভাবটাইতো পৃথিবীতে মূল কষ্ট!

“বিদায় বিষাদ
স্বাগত বিষাদ
তুমি আঁকা আছো দেওয়ালের কড়িকাঠে
তুমি আঁকা আছো আমার ভালোবাসার চোখে
তুমি নও সম্পূর্ণ দুঃখ
কেননা দরিদ্রতম ওষ্ঠও তোমাকে
ফিরিয়ে দেয়
এক টুকরো হাসিতে…”
—পল এলুয়ার

ইতি
দু’হাজার চব্বিশের দিকে তাকিয়ে থাকা একজোড়া নিষ্পলক চোখ

সাকিব ইবনে সালাম
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় স্কুলপড়ুয়া আমি,
বছর শেষ হতে চলল। জানি এখন ছুটি কাটাচ্ছ আর আব্বু আম্মুর কাছে বলছ- যেন ফেব্রুয়ারী মাসে তোমাকে বই মেলাতে নিয়ে যাওয়া হয়। তুমি তো এটাই সবচেয়ে বেশি মিস করো। যখন ঢাকার বাইরে থাকতে তখন সবচেয়ে বেশি আফসোসটা ছিলো বই মেলাতে না যেতে পারার। তাই না? এখন বইমেলা যেখানে হয় সেটার পাশেই ক্লাস করা হয়, ফেব্রুয়ারী মাসে প্রায় প্রতিদিনই তো মেলার আঙিনার পাশে আসা হয় গত কয়েক বছর ধরে। কিন্তু মেলায় যাবার তাড়নাটা কি আগের মতোনই আছে? মনে হয় নেই। এই তো কয়েক বছর আগে এক কলেজপড়ুয়া ছেলে যেই উদ্দীপনা নিয়ে বই মেলা প্রাঙ্গনে আসত, ২০২৩ সালে আসার সময় কি তেমন উদ্দীপনা কাজ করছিলো?

মোঃ সাবিত আল-সাবা রিয়ন
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মৌসুম পাল্টে নতুন মৌসুম আসে,
গাছের পাতা ঝরে পরে নতুন পাতা গজায়,
পুরাতনকে ধুয়ে নতুন আঙ্গিকে নতুন করে সাজে প্রকৃতি,
মানুষেরও কি ঠিক একইরকম পরিবর্তন হয়?

হয়তো তাই হয়, সেও তো প্রকৃতির মাঝেই রয়েছে….
নতুন বছরে নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হলেও
পুরাতনরাও যেন মলিন না হয়ে যায় সেই কামনা করি….
সবাইকে হাসিখুশি দেখতে চাই,
নতুন বছর সবার জন্য সুখময় হয়ে উঠুক সেই প্রার্থনা করি….

তন্ময় দাস
পরিসংখ্যান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় পাহাড়,

জানো তুমি কত সুন্দর? দাঁড়িয়ে তো থাক সবকিছুকে ছাড়িয়ে, মাথা উঁচু করে। কিছু তো ভেবে দেখ না। তোমার কাছে যে কতটা শান্তি জমানো আছে তা জানো কি? তোমার উঁচু চূড়া যখন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে, মনে হয় একরাশ শান্তি আর সুখ তুমি ধরে আছ, কি মায়াবী লাগে তোমায় দেখতে। অপরূপ সৌন্দর্য্যের প্রতীক তুমি; তুমি সত্যিই এক বিশালতার উপমা। আকাশের সাথে তোমার গভীর বন্ধুত্ব! সবার থেকে উঁচুতে থেকে আকাশের সাথেই কথা বল। আমি যে বারেবারে তোমাকে দেখার অপেক্ষায় থাকি তা কি তুমি জানো? আমারও কি বন্ধু হবে একটু? একটু কথা বলবা? তোমার কথা আমি শুনব আর আমারটা তুমি?

ইতি
ক্ষণে ক্ষণে তোমায় দেখার প্রতীক্ষায় থাকা একজন

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)

২৩ এর চিঠি!

বছরের শুরুটা ছিল অনেক চমকের! ভার্সিটিতে এসে প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স, পিকনিক, সরস্বতী পুজো। মনে হচ্ছিলো আহা এমনটায় থাকুক না। কিন্তু যা চায় তা কি হয়?

এরপরে কয়েকটা অসহ্য রকমের চিন্তার মাস কাটিয়েছি। মনে হয়েছে বছরটা যায় না কেন? কখনো ভুল সিদ্ধান্ত, কখনো বাবা-মার অসুস্থতা। আর অ্যাকাডেমিক ফেইলিউর সাগরে নিজেকে ডোবানো তা যেন চিরন্তন এক সত্য হয়ে গেল বছরটায়। সৃষ্টিকর্তা এতো কষ্ট মেনে নিতে পারেন নি হয়তো!

হুট করে হাওয়া বদল হলো। জীবনে প্রথম ট্রেনে উঠলাম, প্রথম পাহাড় দেখলাম, প্রথম সমুদ্র দেখলাম ২৩-এই।
যা বছরের শুরুতে হারিয়েছিলাম বলে ব্যাকুল ছিলাম বছরের শেষে তাই হয়তো বা বলে গেল ”জায়গা আছে”।

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)

প্রতিটি বছরের শুরু হয় সকল শুভ আকাঙ্ক্ষা আর ইচ্ছে নিয়ে। অনেক নতুন পরিকল্পনা থাকে নিজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

সব পরিকল্পনার উর্ধ্বে থাকে সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনা। আমাদের সব শুভ চিন্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য কয়েক সেকেন্ডের একটা মুহূর্তই যথেষ্ট। হয়তো আমাদের পরিকল্পনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের ক্ষতি সাধন করতো তাই সৃষ্টিকর্তা তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের পরিকল্পনাকে নষ্ট করে দেন। কারণ সৃষ্টিকর্তা কখনো তাঁর সৃষ্ট জিনিসের ক্ষতিসাধন করেন না।

২০২৪ শুভ এবং কল্যানকর হোক সবার জন্য।

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)