fbpx

নভেম্বর ২, ২০২৪

।।নক্ষত্রপতন।।

কাজী মোতাহার হোসেন ভবনের চতুর্থ তলায় এক অনিন্দ্য জগৎ আছে; সেই জগতেরই এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম ‘তসলিম সাজ্জাদ মল্লিক’। যে নামের আড়ালে ফুটে আছে এক স্মিত হাসি। এ হাসির ঔজ্জ্বল্য বহু দিকভ্রান্ত পথিকের আশায় প্রাণ সঞ্চার করে এসেছে।

“আমি আর কতোটুকু পারি?

কতোটুকু দিলে বলো মনে হবে দিয়েছি তোমায়…”

                -হেলাল হাফিজ।

পরিসংখ্যানের সম্ভাবনাময় মুখগুলোর অনেক সম্ভাবনার পিছনেই হ্যামিলনের এই বাঁশিওয়ালার সুর গাঁথা রয়েছে। কিন্তু সেই সুরের ঐকতানে সজ্জিত মুখগুলো বাঁশিওয়ালার জন্য কিছু করার নিমিত্তে ঢের সময় পেলো না। গত ২৭ জানুয়ারি ২০২১ এ আচমকা ঝড়ো হাওয়ার মতই এই নক্ষত্রপতনের সাক্ষী হতে হয় সবাইকে। কাউকে দেখে যদি বোঝা যেত তার হাতে আর কতটুকু সময় আছে, দুনিয়াবি প্রত্যাশা আর গুনের কদরের হিসেবটাও হয়তো অন্যরকম হতো তাহলে! প্রত্যাশা ছিলো সরাসরি এমন গুণীর সুরসমৃদ্ধ হওয়ার। আজ সেই প্রত্যাশা হাহাকারে নামান্তরিত। আর গুণের কদরে তো বাঙালি বরাবরই কাঁচা!

স্যারের ক্লাস সরাসরি পাওয়ার সৌভাগ্য না হলেও ডিপার্টমেন্টের যে নামগুলো শুনলে অজান্তেই একটা ভালোলাগা কাজ করত তন্মধ্যে তিনি অন্যতম। ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভ হওয়ার সুবাদে গতবছরের শেষদিকে কিউএমএইচ পরিসংখ্যান ক্লাবের এক সেশনে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের কারো ডেটা সাপোর্ট লাগবে কি না এ বিষয়ে উনার সাথে শেষ বাক্য বিনিময় হয়। কোনো ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের এসব ছোট ছোট স্বার্থগুলোও যার নজর এড়াতে পারেনি, তাঁর এমন আকস্মিক প্রস্থান সবার জন্যেই কঠিন।

মানুষ হিসেবে স্যারের বিস্তৃত অন্তরের জুড়ি মেলা ভার। অগ্রজ ও পরিচিতদের আলোচনায় যতই উনাকে চিনছি, চারতলার রত্নভাণ্ডারের সেই জ্বলজ্বলে রত্ন যেন অনেকটা “সোনার হাতে সোনার কাঁকন, কে কার অলংকার?”- কেই মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই সুন্দর জগতের অভিযাত্রী হয়ে আমরা যেন সবসময় উনার জন্য দোয়া পাঠাতে পারি। মহান আল্লাহ উনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক ইন শা আল্লাহ। ফুলের মতো প্রস্ফুটিত স্যারের কন্যাদ্বয়ের সফর আল্লাহ সহজ করে দিক। কেবল সাহিত্য রচনা কিংবা স্মরণসভায় নয়, প্রত্যেকের দোয়ায় যেন স্থায়ী হয় পরিসংখ্যান বিভাগের এই নক্ষত্রপতন। আমীন।।

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৮-১৯