২০১৯ সালের কথা খুব মনে পড়ে, তৃতীয় বর্ষে পড়ছি তখন। দ্বিতীয় বর্ষে মুখ থুবড়ে পড়ে ততদিনে পরিসংখ্যানের সাথে যাপিত জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। এমনই সময় বন্ধু মারফত জানতে পারি যে বিভাগে একটা সময় প্যাপাইরাস নামের সাহিত্য পত্রিকার অস্তিত্ব ছিল। বিস্ময়করই বটে! কারণ পরিসংখ্যান অঙ্গনে সাহিত্যচর্চা যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ! সেই বিস্ময়মেঘ আনন্দ বারিধারায় ভাসিয়ে তুলেছিল যখন শুনেছিলাম প্যাপাইরাসকে ফিরিয়ে আনবার খবর। তবে এবার হার্ডকপির মলাট থেকে বেরিয়ে উন্মুক্ত আঙ্গিকে চলবে প্যাপাইরাস!
কিছুদিন পরই প্যাপাইরাসকে অনলাইন জগতে আনবার প্রথম মিটিং বসলো। পত্রিকার জন্য কাজ করবো সেই ইচ্ছা মনের মধ্যে নিয়ে চলে গেলাম সেই মিটিংয়ে। বাঘা-বাঘা আইডিয়া নিয়ে মিটিংয়ে উপস্থিত লোকজনদের পরিকল্পনা শুনলাম এক কোণে বসে। লেখালেখির হাত বিশেষ ভালো না হলেও সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল বরাবরই। ভাবতে লাগলাম, কী করে এর পেছনে কাজ করা যায়। ম্যাগাজিনের পুরাতন হার্ডকপিগুলো ওয়েবসাইটে লিপিবদ্ধ করবার জন্য একদল ভলান্টিয়ারদের মধ্যে ঢুকে গেলাম আমিও। সেই থেকে শুরু। তারপর নানা ঘটনাক্রমে আমার যুক্ত হয়ে যাওয়া প্যাপাইরাসের সম্পাদনা পর্ষদে। ধীরে ধীরে প্যাপাইরাস তার নতুন জগতে বাড়তে লাগলো, হয়ে উঠলো জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভাগ বা বিভাগের বাইরের অজানা অচেনা বহু মানুষজন প্যাপাইরাসের বাড়িতে লেখাপত্তর পাঠাতেন, আর সেই লেখা আমরা সম্পাদনা পর্ষদ খুব সযতনে ভুল-ত্রুটির দেখভাল করে প্রকাশ করতাম। এই পুরো কাজটা করতাম আনন্দের সাথে।
সম্পাদনা বিভাগের দলভুক্ত হওয়ার যে বিষয়টা ছিল সবচেয়ে আনন্দের তা হলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক জাফর স্যারের লেখা গল্প সবার আগে গোগ্রাসে পড়ে ফেলবার সুযোগ! শুধু তাই না, চেনা-অচেনা আরও নানা লেখকদের লেখা সোৎসাহে পড়ে নিতাম এরই সুবাদে।
এমনি করে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন লেখকদের লেখাপত্তর পড়া, সেসবের খুঁটিনাটি পরিমার্জন করা, পুরো টিমের সাথে এক হয়ে লেখাগুলো নিয়ে নিজের ভাবনা-দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা, সবকিছু করতে করতে দারুণ একটা টিমের অংশ হয়ে গিয়েছিলাম।
পেছনে ফিরে তাকালেই থমকে যেতে হয়! কতকত যে স্মৃতির ভাণ্ডার একের পর এক জমা হয়েছে প্যাপাইরাসকে ঘিরে! প্যাপাইরাসকে কেন্দ্র করে আমার যত সুখকর স্মৃতি, স্বাচ্ছন্দ্যময় পথচলা সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্যাপাইরাসের সাথে জুড়ে থাকা সকল মানুষের সান্নিধ্যে এসে। বিশেষ করে, পত্রিকার প্রধান অভিভাবক জাফর স্যারের কাছ থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ, কাজ করা ও মত প্রকাশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা এসবকিছুর জন্য প্যাপাইরাস হয়ে ওঠে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবার একটি পরম জায়গা।
এইতো, এভাবে কেটে গেল প্রায় ৪টি বছর। সময় গড়িয়ে গিয়েছে অনেকটা, প্যাপাইরাস পরিবারে এসে যুক্ত হয়েছে একঝাঁক নিবেদিত প্রাণ যাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ চিন্তায়, মেধায় অনন্য। আমি গর্বের সাথে, স্বস্তির সাথে সেই নতুন সদস্যদেরকে দেখে যাই- সেদিনকার সেই ছোট্ট প্যাপাইরাস এই নতুন সদস্যদের হাত ধরে হেসে খেলে বেড়ে চলছে।
আমরা ভয়াবহ রকমের অশান্ত এবং ব্যস্ত এক পৃথিবীতে বসবাস করছি এখন। এরকম সম্পূর্ণ ভলান্টিয়ারি একটা কাজ, যেখানে মানসিক প্রশান্তি অথবা আত্নতৃপ্তি ছাড়া আপাতদৃষ্টিতে বিশেষ কিছু পাওয়ার নেই- সেখানে প্যাপাইরাসকে নিয়ে পুরো দলটি স্বপ্ন দেখছে, মেধা-বুদ্ধি-চিন্তার সমন্বয়ে প্যাপাইরাসকে নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা পেছনের সবকিছুকে ছাপিয়ে যায়৷ ছাপিয়ে যাক এটাই প্রত্যাশা।
নতুন অনলাইন জগতে প্যাপাইরাস এখন অনেকটাই পরিণত। প্যাপাইরাসের অনাগত দিনগুলো অনিন্দ্য সুন্দর হোক, প্যাপাইরাস বন্ধুদের হাত ধরে পাড়ি দিক শতসহস্র ১৮ই এপ্রিল।
- স্মৃতি তাইয়্যেবা মুক্তাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a7%9f%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be/শনিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২০
- স্মৃতি তাইয়্যেবা মুক্তাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a7%9f%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, জুন ১১, ২০২০
- স্মৃতি তাইয়্যেবা মুক্তাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a7%9f%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১২, ২০২০
- স্মৃতি তাইয়্যেবা মুক্তাhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a7%9f%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be/বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১