fbpx

স্বপ্নের স্মৃতিচারণ

লেখাটা যখন লিখছি তখন বৈশাখীতে বসে আছি। আজ আকাশটাও সুন্দর, হালকা হালকা হাওয়াও বয়ে যাচ্ছে, তাই ভাবলাম একটু লিখেই ফেলি। বাস ছাড়ার অপেক্ষা করতে করতে আজ ইচ্ছে হলো স্মৃতিচারণ করার যে কেন আসা এই ক্যাম্পাসে, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাবিতে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার সম্পর্ক অনেক আগে থেকে, যেহেতু আব্বু অ্যাকাউন্টিং এর প্রথম ব্যাচ ছিল তাই সেই ছোট থেকেই আব্বুর কাছে কলাভবন, মধুর ক্যান্টিন এসবের গল্প শুনে বড় হওয়া, তারপর বড় আপু আসল প্রাণিবিদ্যায়। ওকে ভর্তি করাতে আমিও এসেছিলাম আপুর সাথে। তখন মনে হয় ক্লাস 5 কি 6 এ পড়ি, প্রথমবার এসে দেখি আরেহ কী বিরাট ক্যাম্পাস! তারপর দেখলাম সেই কার্জন হল, লাল রাজকীয় ভবন, ঐটাই আসলে আমার মন বদলায় দিয়েছিল, এখন ফিরে তাকালে তাই মনে হয়। খালি ভাবতাম ইশ যদি এই কার্জন হলের ভবনগুলোতে ক্লাস করতে পারতাম! আপু, আব্বুর সাথে এরপর যতবারই গেছি নিজেকে এত ছোট মনে হতো, যে ওনারা তো এখানকারই মানুষ, আমি তো বহিরাগত। ইশ্ যদি এখানকার কেউ হতে পারতাম! আপুর সমাবর্তনে গিয়ে তো ইচ্ছা আরও তীব্রভাবে জাগ্রত হয়। তাই একপ্রকার সবার অমতে গিয়েই শুধু নিজের সেই ইচ্ছার উপর নির্ভর করে ঢাবির ভর্তির প্রস্তুতি নিই, একপ্রকার সফলও হয়েছি যদিও আমার লাল ভবনে ক্লাসের সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি, আমার ভাগ্যে এটাই লেখাছিল। 

আজ আমি নিজেকে ঢাবিয়ান বলে পরিচয় দিতে পারি যা আমার কাছে অনেক গর্বের। আমি আমার সেই আমিকে অনেক ভালোবাসি কারণ সে স্বপ্ন দেখেছিল এবং আমাকে শিখিয়েছিল কী করে স্বপ্ন দেখতে হয়, তাকে ছাড়া আজকের এ আমি ছিল অকল্পনীয়।  বাসের হর্ন দিচ্ছে। নামার সময় হয়ে গেল, আজ তবে আসি। আবার হয়তো অন্য কোনো স্মৃতি নিয়ে আপনাদের সাথে একদিন এই মাধ্যমে আড্ডা দেয়া যাবে। সেই পর্যন্ত আপনারা কিন্ত স্বপ্ন দেখতে ভুলবেন না, তবে দেখবেন অবেলায় সেই স্মৃতিচারণ করতে গেলে মনের অজান্তেই একচিলতে হাসি ফুটে উঠবে।

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়