“Prometheus stole the fire from the gods and gave it to human.
For this he was chained to a rock and tortured for eternity.”
ফাদার অফ দি এটমিক বম্ব খ্যাত অপেনহাইমার কে এভাবেই ফোরশ্যাডোয়িং করে শুরু করা হয় নোলানের আরেকটু অসাধারণ সৃষ্টি ” ওপেনহাইমার ” ।
টিপিকাল সাই-ফাই জনরা ছেড়ে বায়োগ্রাফি তে নেমেছিলেন ঠিক ই, কিন্তু সেটাও এমন ভাবেই বানালেন যেন মাথা না খাটিয়ে থাকা টা কঠিন। কোনো মুহুর্তের ডায়ালগ খেয়াল না করলে বেশ কিছু ঘটনা সঙ্গে সঙ্গেই মিস করবেন।
মুভি তে দুই ধরণের পার্সপেক্টিভ দেখানো হয় দুইটি ভিন্ন কালার গ্রেডিং এ । Strauss এর পার্সপেক্টিভ আমরা দেখতে পাই ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইটে যেখানে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র তার জীবনের অন্যতম সেরা অভিনয়ের ক্যারিশমা দেখালেন আর ওপেনহাইমার এর পার্সপেক্টিভ দেখি আমরা সাধারণ কালার গ্রেডিং এ।
মুভির শুরতেই দেখানো হয় একটা প্রাইভেট হিয়ারিং এ ওপেনহাইমার যেখানে তাকে কমিউনিস্ট দের সাথে যোগাযোগ রক্ষার সন্দেহে তার সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বাতিলের চিন্তা করা হয়, আর সাদাকালো তে দেখি আমরা স্ট্রস এর senate confirming hearing , যেখানে সে নিজেকে প্রস্তুত করে secretary of commerce হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার জন্য তবে। তাকে ওপেনহাইমার এর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এ পড়তে হয়, এরপর দুইজনের জবানবন্দী থেকেই আমরা ওপেনহাইমার এর ছাত্র জীবন থেকে ওই সময় পর্যন্ত মুভির গল্প আগাতে দেখি।
সিনেমার ব্যাপারে বলতে গেলে শুরুতেই বলা লাগে ৩ ঘন্টার একটা বায়োগ্রাফি শুনলে শুরুতেই মনে হবে অনেক বোরিং। এই জিনিষ টাই নোলান হতে দেন নি সিনেমাতে। মুভির রানটাইম তিনঘন্টা অথচ এত ফাস্ট পেসড প্রতিটি সীন যে মুভি টা জাস্ট ২ঘন্টা ২০ মিনিটের মুভির মতই ফিল হয়। অনেক দ্রুত টাইম জাম্প করে। প্রতিটি সীন এর পিছে সময় অনেক কম এবং সীন ট্রানজিশন গুলো এত স্মুথ, সেই সাথে অসাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, যা প্রতি মুহুর্তে মনোযোগ ধরিয়ে রাখতে বাধ্য।
ক্যামেরা ওয়ার্ক অসাধারণ । একজন সাইন্টিস্ট এর মাথায় যখন কোয়ান্টাম ফিজিক্স ঘুরে তখন তার বিক্ষিপ্ত চিন্তা ভাবনা টাও খুব সুন্দর ভিএফএক্স এ ফুটিয়ে তোলা হয়।
মুভির শুরুতে ওপেনহাইমার এর জেদ, তারপর নিজের সাথেই তার দ্বন্দ্ব ও অপরাধবোধ অনেক সুচারুভাবে ফুটিয়ে তোলে। ওপেনহাইমার পাবলিক এর সামনে শুরুতে ওর গিল্ট এর কথা প্রকাশ করে নি কিন্তু প্রতিটি এক্সপ্রেশন এ কিলিয়ান মার্ফি তা প্রকাশ করেন। হলভরা দর্শক যখন করতালি দিয়ে তাকে সমর্থন জানাচ্ছিল , ওপেনহাইমার এর সামনে তখন হিরোশিমায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া পুড়ে যাওয়া মানুষের চিত্র। সে নিজে অনুভব করে যেন লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর দায় তার ই। শুরুতে তার স্পৃহা, ম্যানহাটন প্রজেক্ট নিয়ে স্বপ্ন, থিওরী কে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা, যুদ্ধ কে থামানোর ধারণা, এবং পরবর্তী তে নিজের তৈরী অস্ত্রের অনুশোচনা, সব কিছুর জন্য বিশেষ আরেক ধন্যবাদ প্রাপ্ত হয় কিলিয়ান মার্ফির অভিনয়। একদম নিখুঁত এক্সপ্রেশন, যেন কোনো ডায়ালগ ছাড়াই অনেক কথা ফুটিয়ে তুলছে ।
মুভির অনেক বড় প্রাণ হচ্ছে মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। ডায়ালগ এ ডায়ালগ এ সীন এ সীন এ উত্তেজনা বা টেনশন বিল্ডাপ এর কাজ অনেক ভালো ভাবে করেছে এই ক্ষেত্রে। মুভির মূল ই ডায়ালগ। ঘটনা গুলো আগায় সংলাপ এর মাধ্যমেই, একশন -দু:খ – সাসপেন্স সব কিছুই সংলাপ এর মাধ্যমেই ফুটিয়ে তোলা হয় আর সেই সংলাপ এ প্রাণের সঞ্চার করে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর।
সব কিছু মিলিয়ে প্রথম বার থিয়েটার এ দেখার পর রেশ রয়ে যায় অনেকদিন । তবুও মনে হলো রিভিউ দেওয়ার আগে একবার blu-ray তে দেখে নিই।
কিছু স্পয়লারযুক্ত আলোচনা:
১. মুভিতে একটা অনেক স্যাটিসফাইং এক্সপ্লোশন দেখানো হয়। তবে সেটা ট্রিনিটি টেস্ট এর, হিরোশিমায় নয়। অনেকে এতে একটু আপসেট হলেও বুঝতে হবে যে ওপেনহাইমার এর পার্স্পেক্টিভ এ আমরা ওপেনহাইমার এর মুভি এখানে দেখতে এসেছি । তাই ওর চোখের ভিজ্যুয়াল বা মনের দ্বন্দ ই এখানে মুখ্য। জাপানের এক্সপ্লোশন দেখাতে গেলে মুভি মেইন থিম থেকেই সরে যেত । এর চেয়ে এই এক্সপ্লোশন এর পরবর্তী তে ওপেনহাইমার এর অবস্থা টাই এই মুভির মুল থিম এর সাথে মানানসই। । ।
প্রমিথিউজ ছাড়াও গীতার সেই বিখ্যাত লাইন টাও ওপেনহাইমার এর তখনকার মনের অবস্থার সাথে
মিলে যায় : “Now I am become Death, the destroyer of worlds”
২. মুভিটা সাইন্স enthusiast দের জন্য এভেঞ্জারস লেভেলের ক্রসওভার, ওপেনহাইমার, আইন্সটাইন, বোর, হাইজেনবার্গ কে নেই এখানে।
৩. নোলান আসলে এই মুভি তে এসিউম করে নিয়েছেন যে আমরা দর্শক রা সব জানি। কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর একটু বেসিক, ২য় বিশ্বযুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রজেক্ট, টিনিট্রি টেস্ট, পরবর্তী কোল্ড ওয়ার। অনেক সময় ই সীন জাম্প করে সেই রিলেটেড ডায়ালগ এ লাফ দেয়। কোল্ড ওয়ার নিয়ে না জানলে মুভির শুরতে হিয়ারিং টাই কেনো হচ্ছে সেটাই কেউ বুঝতে পারবে না, তাই এই মুভি দেখার আগে কিছু বেসিক নলেজ নেওয়া ভালো ।
প্রিয় দুইটা ডায়ালগ দিয়ে শেষ করি:
পার্সোনাল রেটিং : ৯/১০ ।
- আদনান করিম চৌধুরীhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a7%8c%e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/বৃহস্পতিবার, জুলাই ৮, ২০২১
- আদনান করিম চৌধুরীhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a7%8c%e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
- আদনান করিম চৌধুরীhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a7%8c%e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/বৃহস্পতিবার, মে ১১, ২০২৩
- আদনান করিম চৌধুরীhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a7%8c%e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/সোমবার, আগস্ট ১২, ২০২৪
- আদনান করিম চৌধুরীhttps://www.thepapyrus.org/author/%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a7%8c%e0%a6%a7%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%80/বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪