fbpx

এই শহরে-২

এই শহরে জীবন ডারউইনের তত্ত্ব মেনে চলে প্রগাঢ়ভাবে।
বেঁচে থাকার স্বপ্নেরা প্রতিনিয়ত এই শহরেই ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে।
টিকে থাকার ওই অমোঘ লড়াইয়ে নেমে পড়ে হিংস্র বন্যপ্রাণির মতো।
এখানে হাঁটেনা কেউ; দৌড়ায়, বসেনা কেউ; দৌড়ায়। কেবল দৌড়ায়।
ডানে-বামে তাকানোর ফুরসতটুকুও যেন নেই।

এই শহরের জানালাগুলো ছেদ করে সারা রাত বিজলবাতির আলো ঠিকরে পড়ে।
সে আলো আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয় ল্যম্পপোস্টের বাতি কিংবা গাড়ির হেডলাইটের সাথে।
হাহ.. এখানে আলোতেই সবাই সই।
পাপ-পুণ্য সবই আলোতে হয়।

এখনে চিৎকার করে কেউ কাঁদে, কেউ হাসে।
সে চিৎকারের কোন শব্দ হয়না।
শব্দেরা একে অন্যকে নিস্ক্রিয় করে দেয় কেবল।
শব্দেরও বুঝি টিকে থাকার লড়াই।
আলোর যেমন, মানুষের যেমন-ঠিক তেমন।
বিবর্তনবাদই এখানে শেষ কথা।

আসলেই কি তাই?
তবে যে পরীক্ষার আগের রাতে হলের মেয়েটা পড়া বাদ দিয়ে বান্ধুবির জন্য পথ্য বানায়,
সেটা কোন তত্ত্ব মানে?
তবে যে অন্ধকার শীতের রাতে নীরবে কেউ নিজের চাদরটা এক নামহীন বৃদ্ধের গায়ে দিয়ে চলে যায়,
যে ছেলেটা লোকাল বাসে নিজের সীটটা ছেড়ে দেয় অপরিচিত কাউকে…
হিসবের চেয়ে দশ টাকা বেশি ভাড়া পেয়ে রিকশাওয়ালার রোদপোড়া চোখের নিচে চিকচিক করে ওঠে!
বস্তির মেয়েটা ভিক্ষুকের থালায় দু’টাকা তুলে দেয়,
এমনকি শরীর বেচে টিকে থাকা মেয়েটাও এক মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে ছুটে যায় নির্দ্বিধায়!
কোন মতবাদ মেনে?
কার তত্ত্ব মেনে?
এ তত্ত্বের কোন নাম নাই।
তোমাদের যদি এর কোন নাম জানা থাকে, তাহলে আমাকে জানিয়ে দিও।
আমি এই শহরটার নাম দিয়ে দিবো সে নামে।

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৭-১৮

নাজিয়া তাসনিম

সেশনঃ ২০১৭-১৮