fbpx

যুদ্ধ

আজ একটি কবিতার লিখব; জোর করে
মনে সায় নেই; মস্তিষ্ক অলসতায় মগ্ন, ভাবলেশহীন
শরীরে রাজ্যের অবসাদ,
স্নায়ুর প্রতিটি নিউরনে লিখার বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্রোহ
কিন্তু আমি লিখব; জোর করেই।

লিখবার খাতা নেই, কলম নেই, নেই আমিও
তবু লিখব
চৌরাস্তার মোড়ে ফতফত করে
উড়ে যাচ্ছিল যে কাগজখানা
সেটি কুড়িয়ে এনেছি।
কলম নেই
কলম নেই তো কী হয়েছে?
পুরানো একখানা সূচ ছিল যে ঘরে
সেখানটা খুঁজে বের করতে হবে।
এ সূচে আর আমাতে কত স্মৃতি জানো?
সে কথা লিখব এক বৃহৎ উপন্যাসে।
আজ শুধু একটি কবিতা রচনা করব; জোর করে।
সূচ দিয়ে আলতো আঘাতেই
অনামিকা থেকে বের হবে লাল কালি।
জোর করে কবিতা সৃষ্টির জন্য এ কালিই যথেষ্ট।
কি বল?
ওমা! তুমি বুঝি ভাবছ জোর করে আবার কবিতা সৃষ্টি হয় নাকি?
হয় না বুঝি?
তাই তাই; হয় না, না?

জোর করে কবিতারা সৃষ্টি হয় না;
জোর করেই তাদের ধ্বংস করা যায় মাত্র!
কবিতারা ধ্বংস হয়
যাদের অমর কবিতা রচনা করবার কথা ছিল
তাদের হাত ধরে।
কবিতারা চাপা থাকে
কোনো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ট্রাংকে,
অথবা চিৎকার শোনা যায় ডাস্টবিনে, ময়লার স্তুপে।
যে কবিতারা রক্ষা পায় তাদের ঠাঁই হয় রাস্তার ধারে।
ফুটপাত উহাদের ঘরবাড়ি,
জ্যোৎস্না, কুয়াশা, বৃষ্টিবাদলা নিত্য সঙ্গী তাঁদের
যা নিয়ে কবিরা কবিতা লিখে যাচ্ছে পাতার পর পাতা!
হয়তোবা এরই এক কবিতা দিয়ে শুরু হয়েছিল
আরেক কবিতা সৃষ্টি;
অথবা জোর করে।
দোষ কার; কবি না কবিতার?

জোর করে তাহলে কবিতা সৃষ্টি হয়।
তাই জোর করেই লিখব আজকে
গন্দছাড়া, ছন্দহারা অকবিতার মতো এক কবিতা।
যেটির লাভ করবার কথা অমরত্ব
কিন্তু ঠাঁই পাবে পুরোনো কাগজের দোকানে।
কোনো এক মহৎপ্রাণ মানব তৈরি করবে ঠোঙা।
সে ঠোঙায় ঝালমুড়ি খাবার পর খুলে দেখবে
কোনো এক অবহেলিত কবি।
সাগ্রহে পড়ে ফেলবে কবিতাখানার যেটুকু অবশিষ্ট আছে।
অবাক বিস্ময়ে বলবে- ওমা! কী ভালো গো কবিতাখানা;
আমার ঘরে যদি এরম একখানা কবিতা থাকতো!

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৬-১৭

হরিপদ শীল

সেশনঃ ২০১৬-১৭