fbpx

বুক রিভিউ – অ্যালান এন্ড দ্য হোলি ফ্লাওয়ার

1201 ইকরা মুন নেছা অ্যালান এন্ড দ্য হোলি ফ্লাওয়ার বুক রিভিউ cover

অ্যালান এন্ড দ্য হোলি ফ্লাওয়ার
লেখক: হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
অনুবাদ: কাজী মায়মুর হোসেন

একটি অপূর্ব সুন্দর সাইপ্রিপেডিয়াম এর খোঁজে এক দুঃসাহসিক যাত্রার গল্প। শুরুতেই আমরা পরিচিত হই যাত্রাদলের সাথে, যাত্রাদলের দলপতি অ্যালান কোয়াটারমেইন, একজন অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় শিকারী। তারসাথে আছেন ধনীর দুলাল এক টগবগে তরুন স্টিফেন সমার্স, যার ধ্যান শুধুই রকমারি অর্কিড সংগ্রহে, সঙ্গ নিলো বিশ্বাসী পুরোনো কাজের লোক বুড়ো হ্যান্স, যাদুবিদ্যায় পারদর্শী এবং নিজের বিদ্যায় একান্ত বিশ্বাসী মাভোভো। তবে এই যাত্রার মূল হোতা বৃদ্ধ চিকিৎসক, ধর্মযাজক, সফেদ দাড়ির ভদ্রলোক ব্রাদার জন, যাকে ডগিটা বলে সম্বোধন করেন মি. কোয়াটারমেইন, সেই খোঁজ দেয় এই পবিত্র ফুলের।

যাত্রা শুরুতেই দিকপাল ডগিটাকে হারিয়ে অথৈ সাগরে পরে অ্যালান ও তার দল। ঐ ফুলের খোঁজ জানে একমাত্র ডগিটা অথচ তার কোনো হদিস নেই। তবুও এই অভিযানে নেমে পরে অ্যালান, নতুন শিকারের লোভে। কারন ডগিটা যখন ফুলের গল্প করছিলো তাতেই ছিলো এক ভয়ঙ্কর প্রানীর কথা যাকে পঙ্গো জাতির লোকেরা তাদের দেবতা হিসেবে মানে। একই অভিযানে প্রতিটি আলাদা মানুষের থাকে আলাদা কিছু খোঁজার তীব্র আকাঙ্খা। প্রত্যেকে নিজের প্রতিক্ষীত জিনিস পাওয়ার আশায় নিতে থাকে একের পর এক দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত।

এই পবিত্র ফুল খোঁজার যাত্রায় দুইটি ভিন্ন জাতির সাথে পরিচয় হবে, মাযিটু আর পঙ্গো জাতি। অ্যালান ও তার দলের সাথে আমরাও হারিয়ে যাবে মাযিটুদের ভীড়ে, কখনো মৃত্যুর মুখোমুখি হবো। এই অভিযানে প্রতিটি রাত কাটবে অজানা আশঙ্কায়, ভোর হবে নতুন সম্ভাবনা কে সঙ্গী করে। সভ্যতার ছোঁয়া না পাওয়া দুই জাতির সংস্কৃতি, তাদের বিচারব্যবস্থা, তাদের ধর্মবিশ্বাস অবাক করে অভিযাত্রীদের। একদল ক্রীতদাস ব্যবসায়ীর খপ্পরে শুরুতেই তছনছ হবে গোছানো পরিকল্পনা। নরখাদক পঙ্গো জাতির মুখোমুখি হতে হবে বিনা অস্ত্রে! এই যাত্রার মূল লক্ষ্য সেই পবিত্র সাইপ্রেপিডিয়াম আর অদ্ভুত প্রানী দুই ই পঙ্গো জাতির দেবতা হিসেবে পূজিত হয়ে আসছিলো যুগ ধরে। অভিযানের পথিমধ্যে পাঠক বুঝতে পারবে আরো একজনের মনোবাসনা, যার এই অভিযানে আসার পেছনে রয়েছে এক রহস্য! এইসব রহস্যের জট খুলতে এবং নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছতে এগিয়ে যাবে অভিযাত্রী বাহিনী।  নিজেদের হার মেনে নিয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকার মূহুর্ত থেকে ফিরে আসার উত্তেজনার মূহুর্ত থেকে অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতা পরতে পরতে মিশে থাকবে পুরো অভিযানে। নিজেদের উপস্থিত বুদ্ধি, একে অপরের প্রতি ভরসা আর বোঝাপড়াই হয়ে উঠবে অভিযানের ভীত। তরুন সমার্স, যার পৃষ্ঠপোষকতায় এই অভিযান সে কি পারবে প্রথমবারের মতো বেরিয়ে পরা এই অভিযানের শেষ সীমানায় পৌঁছে তার জীবনের একমাত্র ভালোবাসা সেই পবিত্র অর্কিড সংগ্রহ করতে? অ্যালান কোয়াটারমেইন কি খোঁজ পাবে নতুন প্রজাকির কোনো শিকারের, নাকি সেটা নিতান্তই একটা অশরীরী দেবতা? ব্রাদার জন একজন ধর্মযাজক হয়ে এই অভিযানে তার লক্ষ্য আসলে কি? মাভোভো র জাদু কি সত্যিই ভবিষ্যৎ বলতে পারে? তার জাদুর জোরে সে কি বাঁচাতে পারবে তার সহযোদ্ধা বন্ধুদের? বুড়ো হ্যান্স ঠিক কতটা মাথামোটা, সে কি পারবে এই বাহিনীর সাথে তাল মিলিয়ে অভিযান শেষ করতে? কি ঘটে শেষ পর্যন্ত অভিযাত্রী বাহিনীর কপালে, আর কিইবা ভবিষ্যত হয় সেই অপূর্ব সুন্দর সাইপ্রিপিডিয়ামের? – এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে পড়তে হবে নেই অভিযাত্রী দলের সাথে, পড়তে হবে এই অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার বই “অ্যালান এন্ড দ্য হোলি ফ্লাওয়ার”।