fbpx

অক্টোবর ১৬, ২০২৪

ব্যবধান

জানো,
একবার আমি ভালোবাসার কথা ভেবেছিলাম।
বোধ করি, তোমাকেই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু পারিনি।

তুমি যদি মনে করো,
আমি সমাজের কথা ভেবেছি,
তবে তা সত্য নয়।
সমাজের অবাঞ্ছিত অনেক নিয়মকেই আমি প্রতিনিয়ত দলে যাই,
অবশ্য সমাজের বুনিয়াদি নিয়মগুলোকে আমি শ্রদ্ধা করি।
কারণ আমি জানি, সে নিয়মগুলো ভেঙ্গে গেলে ভেঙ্গে যাবে সমাজ।
আমি এও জানি,
সমাজের ভাঙ্গন তোমার কাছে কোনো অর্থ রাখে না
কারণ তুমি বন্ধনের মূল্য বোঝ না
কিন্ত আমার কাছে এর মূল্য অনেক।

তুমি হয়ত বলবে,আমি তোমার আমার ব্যবধানের কথা ভেবেছি।
তোমার বৈভবের কথা,
আমার মধ্যবিত্ত জীবনের কথা।
ভুল।।
অবশ্য এই বিচারে তুমি ঠিক যে,
আমি তোমার আমার ব্যবধানের কথাই বলবো।
তবে বলবো, তোমার দারিদ্র‍্যের কথা,
আর আমার বৈভবের কথা।
হুম এটাই সত্য।

আমার আকাশটা অনেক বড়,
তার সীমানা পরিমাপ করা তোমার পক্ষে সম্ভব নয়।
ভালোবাসার গভীরতা সেখানে অসীম,
সেখানে সম্পর্কের মূল্য নির্ধারণযোগ্য নয়।
আমার একটা সমুদ্র আছে,
তীরে দাঁড়িয়ে তুমি হয়তো তার সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারো।
কিন্তু সমুদ্রের বিশেষত্ব হচ্ছে তার অদম্যতায়,
তার উদ্দাম স্রোতে।
তুমি কি জানো উদ্দাম সমুদ্রও একটা নিয়ম মানে?
নিয়ম মানে চিরবহমান নদীও।
নদী আর সাগর পরস্পর মিলিত হয়,
কিন্তু বিলীন হয় না, কেউ কারো মাঝে।
তোমার সৌন্দর্যবোধ কি ওদের এই স্বকীয়তার সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করতে পারে কখনো??
পারে না।
অথচ,আমার উদ্দামতা ঐ নদী আর সাগরের মতই।

তোমার কাছে স্বাধীনতার অর্থ হলো
সুতো ছেঁড়া ঘুড়ির মতো,
যে নিজেকে স্বাধীন মনে করে,
কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই খসে পড়ে কোন এক অজ্ঞাত ঠিকানায়।
আর আমার ঘুড়ির লাটাইটা আমার কাছেই আছে।
আমার ঘুড়ি উড়ে বেড়ায় মুক্ত আকাশে,
কিন্তু সে জানে তার গন্তব্য,
সে চেনে তার ঠিকানা।
আমার বোধের কাছে তুমি তাই নিঃস্ব।

এবারে তুমি হয়ত আমাকে অহংকারী বলবে।
হুম, আমি অহংকারী।
আমার অহংকার আত্মবিশ্বাসের।
আমার অহংকার আমার আত্মপরিচয়ের।
আমার অহংকার আমার নিজস্ব জীবনবোধের।
তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে তাই অসম্ভব।।

নাজিয়া তাসনিম
শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনঃ ২০১৭-১৮