fbpx

ডিসেম্বর ৫, ২০২৪

বসন্তালাপ

ঋতুদের আসা-যাওয়া নিয়ে আমার তুমুল কৌতূহল।
কীভাবে কীভাবে আকাশ-বাতাস, এমনকি গাছের সবুজ –
সবই পাল্টে যায়।
দেখে কৌতূহল জাগবে, এটাই তো স্বাভাবিক!
আসা-যাওয়া দেখতে দেখতে তাদের সাথে কিছু কথোপকথনও হয়ে যায়।


এইতো সেদিন বসন্ত চলে যাচ্ছিলো গাছেদের কলার ঝাঁকিয়ে।
বললাম–
এতো জলদি কেন হে বসন্ত তোমার?
একটু বসো, হাওয়া দিচ্ছ সুন্দর, ফুলও ফোটাচ্ছ
আরও কিছুদিন থাকো না হয়!


বসন্ত বলল–
দেখো, এতো আবেগতাড়িত হবার কিছু নেই, তুচ্ছ মানব।
এসেছিলাম তোমাদের জীবনে কিছু রঙ দিতে, দেয়া শেষ।
এখন এগোতে হবে।
গরমে ভেজে নেয়ার সময় এসেছে তোমাদের!
সৎভাই গরমকালকে পাঠাচ্ছি শীঘ্রই!
সৎ মানে একদম সৎ, কোন কারচুপি নেই।
নব্য ভণ্ড শীতের মতো জোচ্চুরি করেনা ও;
একদম জলন্ত উনুনে তোমাদের গ্রিল করবে, গ্যারান্টি।
তোমরাও যা শুরু করেছো!
নরকে পুড়বার জন্য সব ব্যবস্থাই করে যাচ্ছ প্রতিদিন
মরবার আগেই এতো পুড়বার ইচ্ছে কেন, বলতো!?
যাবেতো সেই নরকেই! কারো মধ্যে স্বর্গ পাবার কোন সাধ এমনিতেও দেখিনা।
সবকিছুই পোড়াচ্ছ!
এরপর পুড়িয়ে পাড়িয়ে চায়ের কেটলিতে জাল দিয়ে
নামও দিয়েছ সুন্দর – গ্লোবাল ওয়ার্মিং!
প্রেমিকার মুখে শুনতে ভালোই লাগে।
মাঝে মাঝে তোমাদের কীর্তিকারখানা দেখেতো বড্ড গোলমেলে লাগে,
মনে প্রশ্ন জাগে–
সৃষ্টিকর্তা তোমাদের পোড়াবার জন্য নরক বানিয়েছেন

নাকি নরক পোড়াবার জ্বালানি হিসেবেই তোমাদের বানিয়েছেন, কে জানে!

এসব পিত্তিজ্বলা বাঁকা বাঁকা কথা শুনে মেজাজ গেল বিগড়ে।
ধমকের সুরে বলে উঠলাম —
দূর হ সামনে থেকে, ব্যাটা বসন্ত!
এসেছে লেকচার দিতে।


বসন্ত একটু দূরে সরে গিয়ে বলল —
দেখো, নির্বোধ মনুষ্য
এই হলো তোমাদের সমস্যা! খালি রেগে যাও কথায় কথায়।
আচ্ছা, বলছিলেই যখন আরেকটু থাকতে…
আমি থাকতে পারছিনা
তবে পাঠাচ্ছি আরেকজনকে গরমকালের সাথে।
দীর্ঘদিন থাকবে তোমাদের সাথে ও।
দেখো, আবার মন দিয়ে বসোনা।
লাভ পাবেনা মন দিয়ে

বিরক্ত হয়ে উঠবে অচিরেই।


তার নাম সামাজিক দূরত্ব।