fbpx

মঞ্চে উপর ঘুমন্ত আমরা

আমি ঘুমন্ত (প্রায়)। জাগবো, কিন্তু পারছি না।সবাই আমাকে ঘুম পাড়াতে ব্যস্ত। কেহ আরামের বিছানা বিছিয়ে দিয়ে। কেহ বা চোখের সামনে খেলনা ঝুলিয়ে আমার মনযোগকে তুচ্ছ খেলনায় কেন্দ্রীভূত করা চেষ্টা করছে। কেহ আবার নিজেদের তৈরি হর্লিক্সের(ভোরের আবহাওয়া থেকে কম উপকারী) পুষ্টিগুণ কিংবা প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করে। আবার কেহ আছে একটু ভিন্ন উপায়ে আমায় ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করতেছে, ” ঘুমাও, নয়তো পুলিশ আসবে”, এররকম ফাপা বুলির মাধ্যমে। 

তবু আমি জাগার চেষ্টা করছি। পারছি না। আশাপাশে আমার মত বয়সের কিংবা সাহসের যারা আছে সবাই তো ঘুমিয়ে আছে। একা উঠে বসার ইচ্ছেটা হয়েও হচ্ছে না। সকাল বেলা না ঘুমিয়ে উঠে বসার মাঝে যে সজীবতা,উৎফুল্লতা,উপকার তা না আমি ভোগ করতে পারতেছি। না পাশের ওদের বোঝাতে পারতেছি। ওরা নিছক স্বপ্নে যে আমেজ, উৎসব, হৈহুল্লর,পাহাড় চড়া কিংবা ছুটে চলা দেখতেছে, সেসবকে বাস্তব ভেবে সকালের রৌদ্র,সতেজ বাতাস সবকিছু হারানোর সাথে সাথে নিজেদের চূড়ান্ত ভবিষ্যতকেও মাটি করতেছে। অনেকে আবার জাগার কথা ভাবতেও পারতেছে না। কারন সকালে জাগতে না দেওয়ার অন্যতম অস্ত্র হলো রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া। আমদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে  ভোরে কিভাবে ছুটে চলবো সবার আগে,পথ দেখাবো বাকিদের, কিভাবে পাহাড় জয় করবো এসবের উন্নতমানের ট্রেনিং দিতে।  কিন্তু এরা সারারাত আমাদেরকে ক্ষণস্থায়ী চাঁদের প্রেমে ভুলিয়ে, রাত ঘুম কেড়ে নিয়ে, সকালে জেগে উঠার শক্তিকে নষ্ট করে ফেলতেছে। এরা আবার গণহারে সবাইকে মঞ্চে নিয়ে আসে নি। আমরা যারা রবের রহমতে কিছুটা সবল তাদের বাছাই করে,ছাটাই করে দিচ্ছে।

কিন্তু শত হলেও তো আমি জেনে বুঝে নিজের ক্ষতি  করতে পারি না। এখন যদিও বা ওরা জানা-বুঝার পথটুকুও বন্ধের চেষ্টা করতেছে। যেমন : পাখির বুলি বন্ধের পায়তারা করতেছে শব্দ দূষণের দোহাই দিয়ে। তবু আলহামদুলিল্লাহ জন্মের সময় আমার কানে পাখির সুর ভেসে এসেছিলো, প্রকৃতির স্পর্শ আমি পেয়েছিলাম। তাই, আমি তো বুঝি আমার শিকড় কি, কিসে আমার কল্যান! তোমরা আমায় যতই ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করো, আমি জাগবো। আমার মতো আমার পাশে ওরা যারা আছে, ওদেরও ডাকবো। আর ডেকে ডেকে নজরুলের সেই কবিতা শুনাবো:

‘আমরা যদি না জাগি মা

কেমনে সকাল হবে?

তোমার ছেলে উঠলে গো মা

রাত পোহাবে তবে।’

শিক্ষার্থী | পরিসংখ্যান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়